Skip to main content

জিনিয়াস ও দীপু



- মাঞ্জা ভালোই দিয়েছিস।
- টিটকিরি দিচ্ছ মামা?
- কম্পলিমেন্ট। জেনুইন।
- থ্যাঙ্কস।
- গরদের পাঞ্জাবীটার জাঁক আছে।
- বলছ?
- আলবাত আছে।
- গত পুজোর। মেজপিসি দিয়েছিল।
- কোলন?
- ওল্ড স্পাইস। বাবার।
- তবে সবটাই বোধ হয় জলে গেল রে।
- জ...জলে?
- অথৈ।
- কেন?
- সে। আসছে না।
- সে..সে মানে? কার কথা বলছ। তিন্নিদির বিয়ে। আমাদের কত কাজ। বরযাত্রী এসে পড়ল বলে। তাতে কে এল না এল...আমার কী?
- বটে?
- চলি।
- জলে। জলে।
- কী জলে?
- কোলন। গরদ। কোলাপুরি।
- ধ্যার।
- চ্যাটুজ্জেদের ছোটমেয়ে। তার জ্বর। এই মাত্র আমায় ফোন করেছিল। দু'দাগ হোমিওপ্যাথি চেয়ে।
- কি....জ্বর? তাতে ইয়ে...আমার কী?
- তোর কিছু হোক না হোক। তোর পকেটে যে নীল কাগজের চিঠিটা উঁকি মারছে সেটার আর কোন মানে থাকল না।
- না মানে...।
- গরদের ট্রান্সপারেন্ট নেচারটায় এই এক প্রবলেম।
- আসলে...। অ্যাকচুয়ালি...।
- বলছিলাম বরযাত্রী ব্যাপারটা না হয় আমিই ম্যানেজ করি। তুই বরং এ দু'টো ওষুধ দিয়ে আয়। দাগ লেখা আছে শিশির গায়ে।
- ইয়ে, মামা মানে...।
- যা ফোট।
- না মানে। দু'টো ওষুধ বললে...এটা তো একটা শিশি...।
- পকেটে নীল চিঠিখানাই তো মেইন দাওয়াই চাঁদু। শিশি তো দ্যাখনাই। দিয়ে এসো। চাঙ্গা হয়ে যাবে।
- না। মানে। আসি।
- আর শোন।
- কী?
- ডিসেম্বরের ঝিরি বৃষ্টিতে আর ভিজিস না। মেয়েটার ইমুউনিটি কম, তোর মত কুমিরে চামড়া নয়।
- আচ্ছা। আসি।
- আর শোন।
- কী?
- ওই শেল্ফের ওপরের নীল সুগন্ধি শিশি থেকে দু'ফোঁটা পাঞ্জাবীরর আস্তিনে ফেলে যা। আউধের জেনুইন নবাবী আতর।
- মামা, তুমি না...।
- প্রাচীন কোরিয়ান ভাষায় মামা মানে জিনিয়াস, সেটা জানা আছে তো?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু