Skip to main content

জাদুকর

"এই যে। এই যে।
এটা কী? টুপি। টপ হ্যাট।
কী? কালো টুপি। উলটো করে রাখা খালি টুপি।

খালি টুপি কিন্তু। ইয়ে দেখো।
ঠিক? ঠিক।
ইয়ে টোপিকে অন্দর অভি ম্যায় কুছ রাখুঙ্গা।
কী রাখব? টুপির ভিতর?
হাত। আমার ডান হাত। ঠিক হ্যায়? এই গ্যালো।
কী গ্যালো? আমার হাত। টুপির ভিতর।
ওক্কে? ওকে"।
****
টুপিতে খপাৎ করে উদয় হল আরেকটা হাত।
খামচে পকড়া জাদুকরের হাত। জাদুকর কা ডান হাত।
****
"জাদুকর, টোপিসে নিকালো হাত। হাতে থাকবে কী? খরগোশ? ফুলেরতোড়া? বাঘের ল্যাজ?"
দর্শকরা উত্তেজিত।
হুল্লোড়।
সাস্পেন্স।

****
দর্শকদের মাঝে আসল জাদুকর। সাদা লাল তাঁতের শাড়িতে। ড্যাবেড্যাবে লাল টিপ। সিঁথিতে ভুল লাল। এক মুখ হাসি দিয়ে আড়াল করে রাখা ভোরের ব্রিসবেন পিচের খুনে আদ্রতা।
দেখনাই জাদুকর খরগোশের ল্যাজ খুঁজতে গিয়ে জব্দ। ডান হাতের পাতা বা হাঁতি আঙুলের লাল-পালিশে নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত। মুখে হাসি, বুকে ছ্যাঁত।
****
শাড়ির আঁচলে টান পড়তেই আসলি জাদুকর থমকে গেলেন। বুকের কাছের শাড়িটা খামচে ধরতে হল। জাদুর ব্যথা। চোখে জল। গলায় কোকাবুরা।
****
ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাজিকে হাসলেন স্টেজের জাদুকর। টুপি থেকে বের করে এনেছেন খরগোশের লেজের চেয়েও দামী আনন্দটুকরোকখানি; লাল সাদা তাঁতের শাড়ির আঁচল।
জাদুকরের মুখে কেল্লা ফতে, বুকে ইনিংস ডিফিট।

Comments

aritra sanyal said…
যেন কয়েকটা লাইন পোস্টপোন করে রাখলেই কবিতার, মানে যে রীতিকে আমরা কবিতা হিসেবে ইদানীং মান্যতা দিই, সেই কবিতার কোহল জমে যেত। ইন ফ্যাক্ট যাচ্ছেও। আমি যতি চিহ্নের কোলাহলটাকে মন থেকে হটিয়ে রাখলাম। সাদা নিরালম্ব একটা ধাঁধাঁ, দেখ অক্ষর, দেখ আসল যাদু, কীভাবে, এই রেলিং-হীন সাদা স্ক্রীনে ভোজবাজি দেখাচ্ছে।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু