Skip to main content

প্রপোজাল

- সো লেট মি গেট দিস, স্ট্রেট। আপনি আমায় খুন করেছেন।


- এগজ্যাক্টলি জয়িতা।


- ভোর পাঁচটায় বমি করতে করতে আমি উঠলাম। গা দিয়ে ভুরভুর করছে রামের গন্ধ। ভাঙ্গা পার্টির নোংরা সোফা। আপনি আমায় টিস্যু দিলেন মুখ মুছতে। আর এখন আপনি বলছেন আপনি আমায় খুন করেছেন। রাইট?


- রাইট। 


- জলের বোতলটা এগিয়ে দিন না, আপনার পাশেই আছে।


- এই যে। 


- থ্যাংকস। আচ্ছা মরে গিয়েও আমার পিপাসা পাচ্ছে কেন?


- কারণ আপনি খুন হয়েছেন। মারা যাননি।


- খুন হয়েছি, মারা যাইনি। বিউটিফুল। আপনি কবি? 


- মারা যাননি। কিন্তু যাবেন।


- হাউ? 


- ড্রিঙ্কে মেশানো ছিল। এক ধরনের কেমিক্যাল। আমাজনের জংলি ট্রাইবদের থেকে জোগাড় করা। সে লম্বা কাহিনী। টু কাট দ্য লং স্টোরি শর্ট, এই বিষ মাসখানেক ধরে আপনার শরীরে ছড়াবে মিস জয়িতা আর তারপর আচমকা মাল্টিপল অর্গান ফেলিওর। 


- মাসখানেকে মৃত্যু?


- অব্যর্থ খুন।


- তো। আপনি...ইয়ে...আপনার নামটা যেন কাল রাত্রে কী বলেছিলেন?


- অর্ণব। অর্ণব চৌধুরী।


- হুঁ মিস্টার অর্ণব, তো খুন করে এসব আপনি আমায় জানাচ্ছেন কেন। বাই দি ওয়ে এ'সমস্ত বাতেলা মনে হচ্ছে। 


- সেটাই তো বেস্ট পার্ট। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আপনার শরীরে কোন যন্ত্রণা থাকবে না। দুনিয়ার কোন ব্লাড টেস্ট আপনার রক্তের বিষ টের পাবে না। ইয়েট। শিওর ডেথ। 

- জোক।


- এগজ্যাক্টলি মাই পয়েন্ট। এই যে আমি আপনাকে খুন করে বলছি যে আমি আপনাকে খুন করেছি, আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। করতে পারবেন না। দ্যাট ইজ দ্য বিউটি। 


- আপনি আমায় কেন খুন করবেন অর্ণববাবু?


- আমি তো অর্ডার এক্সেকিউট করি জয়িতাদেবী। খুন করার প্ল্যান ছিল আপনার হাজব্যান্ড; অভীর। আপনাদের ডিভোর্সের ব্যাপারে উনি চিন্তিত। হেভি অ্যালিমনি, বিজনেসে শেয়ার এ'সব দাবী করবেন ভেবে ওনার ঘুম-টুম প্রায় গেছে।


- ও। তো নাউ দ্যাট ইউ আর টেলিং মি অল দিস, আমি কেন আগামীকাল আমার গুণ্ডা লাগিয়ে আপনাকে কিডন্যাপ করাব না? অভীকে শায়েস্তা করব না? যে মারা যাচ্ছে তার আবার পরোয়া কীসে? ভুলে যাবেন না অর্ণব; কন্ট্যাক্ট আমারও আছে।


- জানি। আই নো ইট ইজ আ রিস্ক। এই যে আমি আপনাকে এভাবে সমস্ত খুলে বলছি। তবে অভীর ব্যাপারে আপনি কিস্যু প্রুভ করতে পারবেন না। ওই যে বললাম। ম্যাজিক কেমিকাল। খান কয়েক কেমিস্ট্রির নোবেল খসাতে হবে এর রহস্য উদ্ধারে। 


- শার্প। তবে অ্যাট লিস্ট আপনার থ্রুতে...। 


- অভীকে পাবেন না। ইউ নো হিম। হি লিভ্‌স নো ট্রেসেস্‌।


- নাইস। বেশ। অন্তত আপনাকে শায়েস্তা করে যাব। গায়ের ঝাল মিটিয়ে নেওয়া যাবে। আর তো কিছুই করার নেই। আর এটা যে আমি করব সেটাই স্বাভাবিক। আপনার এমন খোলতাই ভাবে আমায় বলাটা কি বোকামি হল না?


- হল। রিস্ক নিলাম। 


- রিস্ক? কীসের রিস্ক?


- উইল ইউ ম্যারি মি জয়িতা?


- ওকে। এগেইন। লেট মি গেট দিস স্ট্রেট। আপনি আমায় খুন করেছেন। আমি মরিনি, কিন্তু অ্যাকর্ডিং টু ইউ শিওর খুন। অ্যান্ড নাউ ইউ আর আস্কিং মি টু ম্যারি ইউ?


- প্রিসাইস্‌লি।


- হোয়াই।


- ওই। কাল অসংলগ্ন অবস্থায় আপনি কোমল গান্ধারের কথা বলছিলেন। আমি আপনার পাশেই ছিলাম গোটা রাত। বাকি কারোরই তেমন হুঁশ ছিল না। আর ইয়ে, শুনেছিলাম যে প্রেমের পড়তে বিশেষ কোন কারণ লাগে না। 


- ওউ। খুন করলেন। তারপর প্রেমে পড়লেন। 


- এগজ্যাক্টলি। অবিশ্যি বিয়ের জন্য ইকুয়াল প্ল্যাটফর্ম দরকার। আপনাকে খোলসা করে সে'টা হল।


- হাউ?


- আপনি আমায় রিজেক্ট করলে নিজের গুণ্ডাদের দিয়ে খুন করাবেন। খুনের প্রতিশোধ। আর আপনি আমায় অ্যাক্সপেট করলে...মানে আমরা বিয়ে করলে অভীবাবুর অন্য লোক আমায় খুন করবে। অর্থাৎ আমরা দু'জনেই মারা যাচ্ছি। আমি আপনাকে খুন করেছি; ইয়েস। কিন্তু দেয়ারআফটার ভদ্রলোকের মত ভালোবেসেছি। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে খোলতাই ভাবে যখন বলছি, তখন সন্দেহের কোন মানে হয় না। 


- আপনি উন্মাদ অর্ণব। 


- দেখুন আপনার এক্স-হাজব্যান্ড আপনাকে জ্যান্ত রেখে যে মৃত্যুযন্ত্রণায় রেখেছিলেন...।


- স্কাউন্ড্রেলটার নাম নিও না।


- আমি আপনাকে খুন করেছি। ওকে। তবে দু'মাস রয়েছে। একটা রিয়েল বিয়ে আমি আপনাকে অফার করছি।পুরনো স্যাঁতস্যাঁতে ব্যালকনি, ব্যালকনিতে মোড়া, মোড়ায় লাল ছাপার শাড়ি কালো ব্লাউজে আপনি, আপনার পায়ে হেলান দিয়ে ঢলা পাজামায় আমি মেঝেতে লেপ্টে। আমার হাতে ১০১ জোক্‌সের বই। আপনি বাজে জোকে হাসতে পারেন জয়িতা?


- জাস্ট দু'মাস। আপনি-আজ্ঞেতে খরচ করবে অর্ণব?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু