Skip to main content

বটু গোয়েন্দার বিজয়া

রিভলভারের নল মাথায় ঠেকলেই মগজ আপনা থেকেই কুলফির মত ঠাণ্ডা হয়ে যায় বটু গোয়েন্দার। আর গোয়েন্দাদের মাথা ঠাণ্ডা রাখাটা তো জরুরি।

বেশ তম্বি করছিলে খুনে বল্টু; "এবার বটু গোয়েন্দার জারিজুরি শেষ, ছ'টা গুলি গুনে গুনে ব্রেনে পুরে দেব" ইত্যাদি ইত্যাদি সিনেমা ঘেঁষা বাতেলা। মিনিট পনেরো মন দিয়ে শুনলেন বটু। তারপর বাঁকা হাসি ভাসিয়ে দিলেন বল্টুর রক্তচক্ষুর দিকে তাকিয়ে।

সে হাসিতে বল্টুর মাথা গেল আরও বমকে।
- ব্যাটা টিকটিকি বটকে, বল্টুর গুহায় দাঁড়িয়ে রেলা? চামড়া ছাড়িয়ে ডুগডুগি বানাব।

- কচু করবি বল্টে। বাতেলায় কি আর চাল গলে রে? 


- কী বলতে চাইছিস বে বটু?


- আমায় খুন করা তোর দমে কুলোবে না।


- দেব ট্রিগার টেনে? পেট মোটা গোয়েন্দা কোথাকার। কম জ্বালাওনি এদ্দিন চাঁদু। এবার খা বুলেট।

কিন্তু বটু বুলেট খাওয়ার আগেই খুনে বল্টু ভির্মি খেয়ে উলটে পড়লে। তার হাত থেকে ছিটকে পড়ল রিভলবার। দুরন্ত রিফ্লেক্সে সে রিভলভার ছোঁ মেরে তুলে নিলে বটু গোয়েন্দা।

কপাল ঘষতে ঘষতে বল্টু যখন উঠে দাঁড়ালে তখন তার কপালের ঠিক মাঝে একটা আলু।
- কেমন দিলাম বল্টে?

- মুখ দিয়ে গুলি ছুঁড়লি বটু?


- গুলি নয়। তবে এ মাল গুলির চেয়ে কমও নয়।


- কী মাল?


- তোর কাছে আসার আগে গেসলাম কিপটে ঘোষের বাড়ি বিজয়া করতে। গত বছরের নারকোল নাড়ু একবছর ফ্রীজে রেখে এ বছর বিজয়ায় সার্ভ করেছিল। লোহায় পিষেও এ জিনিষের হিল্লে হওয়ার নয়। তাই না খেয়ে কয়েক পিস পকেটে চালান করেছিলাম। তোর ডেরায় ঢোকার মুখে টের পেলাম যে পিস্তলটা আনতে ভুলে গেছি। তাই বলে ফেরত যাওয়ার বান্দা তো আমি নই। এই এক পিস নাড়ু মুখে নিয়ে গালের এক পাশে রেখে দিলাম ফর এমার্জেন্সি। কেরামতি দেখলি তো। এক ফুঁয়েতেই চিত্তির। নে, এবার জেলে যাওয়ার আগে কোলাকুলিটা সেরে নে। বেশি সময় নেই, হলধর দারোগাকে কথা দিয়ে এসেছি যে। চল চল।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু