Wednesday, December 6, 2023

কোলবার বাগদাদি



কোলাবার বাগদাদি রেস্টুরেন্টের নিহারির ভূয়সী প্রশংসা না করলেই নয়৷ যেমন হাইকোয়ালিটি পিস পাতে পড়েছিল, তেমনই সরেস রান্না৷ অমন থালার সাইজের রুটিও অবলীলায় উড়ে গেল৷ পাশাপাশি ভাজা মুর্গিটাও বেশ উপাদেয়; পুরানি দিল্লীর স্মৃতি খানিকটা উস্কে দিয়ে গেল৷ এ'খানকার মুর্গিটা যেন আরও রসালো। কেএফসি-টেএফসিকে চার গোল দেবে, গুণে গুণে। খোকা ঠিক রুটি ভক্ত নয়, তাই বিরিয়ানি নিতে হল৷ তবে পুরানি দিল্লীর মতই, এদের বিরিয়ানি নিয়ে বেশি লাফালাফি করার উপায় নেই৷ বরং এদের শাহিটুকরাটা মারাত্মক রকমের ভালো৷ 



সবচেয়ে বড় কথা, দিব্যি 'পকেট ফ্রেন্ডলি' জায়গা৷ ব্যাঙ্গালোর থেকে এক বন্ধু জানালে এককালে নাকি ও জায়গায় জাহাজের নাবিক-খালাসিরা ভিড় জমাত সস্তায় ভালোমন্দ খেতে৷ আমরা জাহাজ চালাতে পারি না, কিন্তু ভালো খাবার চেখে দিব্যি ভেসে যেতে পারি বটে৷


শনিবার সন্ধ্যেবেলা টানটান ভিড়, সবাই মোটামুটি টেবিল শেয়র করে বসছে৷ একটা ছ'জনের টেবিলের একদিকে আমরা তিনজন; আমি, ও আর খোকা৷ উলটো দিকেও এক বাবা, মা ও তাদের খোকা৷ তফাৎ হলো ও'দিকের খোকাটি প্রায় আমাদের বয়সী, বৃদ্ধ বাপ-মাকে খাওয়াতে নিয়ে এসেছে৷ এক টেবিলে ছ'জন, রকমারি অর্ডার; কাজেই প্লেটে প্লেটে ঠাসাঠাসি অবস্থা৷ তারই মধ্যে ও'পারের খোকা মন দিয়ে বাপ-মায়ের খাওয়াদাওয়ার তদারকি করছে, এ'পারে ঝালে হুসহাস খোকাকে সামাল দিয়ে চলেছি আমরা৷ সে এক দিব্যি সিমেট্রি৷


বাগদাদি থেকে বেরিয়ে আশেপাশে সামান্য হাঁটাহাঁটি করে, সমুদ্রের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে, লিওপোল্ড থেকে তিরামিসু চেখে যখন গাড়িতে বসলাম, তখন তিনজনেই পরিতৃপ্ত।  তারপর আর কী। মাঝরাত্তিরে বম্বের রাস্তাঘাট আলো করা মানুষজনের ঢল আর মন আলো করা কিছু হিন্দি সিনেমার গানের হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে বাড়িমুখো হওয়া; যে কী হাইক্লাস প্রাণায়াম..।

No comments: