Skip to main content

কুন্তলা ও বাবা

- তুমিই অজয়?

- আজ্ঞে অজয় নয়। অরুণাভ।

- অরুণাভই হও বা অমল পালেকর। কোনও লাভ আছে কি?

- লাভ?

- প্রফিটের কথা বলেছি। নেদু হয়ো না।

- না মানে...।

- না মানে না। নো মীনস নো।

- কাকু, মানে স্যার...ইয়ে...বলিছিলাম যে মান্তু আর আমি...।

- মান্তু? বাড়ির বাইরের বেয়াড়া কেউ ওই নামে কেন ডাকবে? কুন্তলা বলো। মিস কুন্তলা চ্যাটার্জিও বলতে পারো।

- ওই কুন্তলা। মানে, ওর সঙ্গে...।

- জানি। যে তুমি ওর পিছনে ঘুরঘুর করছ। তা'তে ও একটু নরমও হয়েছে। কিন্তু আমার মত নেই।

- মানে...কাকু...স্যার...ইয়ে...ঘুরঘুর করছি আমরা দু'জনেই। মিউচুয়ালি।

- বেশ। কাল থেকে আর মিউচুয়ালি ঘুরঘুর করবে না।

- না মানে...। মাইনর রিকুয়েস্ট...একটা অ্যাপ্রুভাল অন্তত যদি দিতেন। আফটার অল আপনি কুন্তলার বাপ...আই মীন বাবা। তবে আপনার ওপিনিয়নের কোনও দাম নেই, সে'টা বোঝেন তো?

- কুন্তলার আশেপাশে যদি ফের ঘুরঘুর করতে দেখেছি তা'হলে পুলিশ ডাকব।

- কী ব্যাপার অমৃতেন্দু! কাল ওয়ার্নিং দিলাম, সে'টা ভ্রুক্ষেপ না করে তোমরা দু'জনে আজ পার্কের বেঞ্চিতে বসে সুডোকু সলভ করছিলে?

- আপনি সে'টাও দেখেছেন?

- আবার পালটা প্রশ্ন?

- সরি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমি ফেরেব্বাজ নই।

- তোমার আইকিউ কম।

- আদৌ নয়।

- যাদের আইকিউ কম তারা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায় না যে তাদের আইকিউ কম। থাম্ব রুল।

- কুন্তলার আইকিউ হাই।

- কুন্তলার আইকিউ ধুয়ে জল খাবে?

- মানে, কম পড়লে। ও ম্যানেজ দেবে।

- কুন্তলা কি তোমার ম্যানেজার? ফিউডাল মাইন্ডসেট তো হে তোমার। আর খবরদার যেন কুন্তলার আশেপাশে না দেখি।

- নইলে পুলিশ ডাকবেন?

- দত্ত দারোগার আমার ক্লাসমেট সে'টা জানো?

- এ কী? তুমি ছাদে থেবড়ে বসে কেন?

- আপনি এখানেও?

- আমি খুব ফ্লেক্সিবল। ভূত হওয়ার এ'টাই সুবিধে।

- আপনার তো খুশি হওয়া উচিৎ।  পুলিশ ডাকার দরকার পড়ল না। কুন্তলা আর আমার মুখ দেখবে না।

- একটা চড়ে চোয়াল ভেঙে দেব রাস্কেল। আমার মেয়ের নামে উল্টোপাল্টা কথা? সে তোমায় ভালোবাসে, সে কিনা তোমার মুখ দেখবে না? আর আমি কি সাধে তোমার পিছনে ঘুরঘুর করি? আমার মেয়ে তোমায় পছন্দ করেছে। তোমায় নিস্তার দিই কী করে? তোমাদের মধ্যে একটু ঝগড়া হয়েছে, হতেই পারে। তাই বলে মুখ দেখাদেখি বন্ধ? হাতের মোয়া নাকি? মেয়েটা সকাল থেকে কেঁদে চলেছে। তুমি না গেলে ওকে সামলাবে কে?

- আপনি বুঝতে পারছেন না কাকু...আই মীন..স্যার। ওর সঙ্গে ঝগড়ায় এমনিতেই মনমরা হয়ে ছিলাম। আজ ভোরের দিকে অন্যমনস্ক হয়ে রাস্তা ক্রস করতে গিয়েই...মিটে গেল...। ট্রাক। এক্কেবারে পেস্ট। আমার বডিট তেমাথার মোড়ে পড়ে এখনও। মর্গের গাড়িটা এলো বলে। তাই বলছিলাম...।

- নিনকম্পুপ। মাথা মোটা বাইসন কোথাকার। শুরুতেই বুঝেছিলাম তুমি একটা লো আইকিউ আহাম্মক। মানছি মান্তুর সঙ্গে তোমার আলাপ মাত্র মাস দুয়েকের কিন্তু...। আমায় ভূত হিসেবে দিব্যি চিনে ফেলছ অথচ মান্তুমাকে এখনও চিনতে পারো নি? আরে বাবাজীবন, আমরা দু'জনেই ছিলাম সেই আগুনে! যাক গে। আজ সকালে দেখলাম পঞ্জিকার হিসেবে সামনের হপ্তায় ভালো দিন আছে বিয়ের। আমি ভাবলাম শুভস্য শীঘ্রম। দিলাম তোমায় ট্রাকের নীচে ঠেলে। ওয়েলকাম টু দ্য ফ্যামিলি সান!

Comments

'আমার বডিট তেমাথার মোড়ে"---তন্ময় বাবু, "আ" কার টা বাদ হয়ে গ্যাছে
'আমার বডিট তেমাথার মোড়ে পড়ে এখনও" ----, "আ" কার টা বাদ হয়ে গ্যাছে
Anonymous said…
'আমার বডিট তেমাথার মোড়ে পড়ে এখনও" ----, "আ" কার টা বাদ হয়ে গ্যাছে
'আমার বডিট তেমাথার মোড়ে পড়ে এখনও" ----, "আ" কার টা বাদ হয়ে গ্যাছে
Turtle of life said…
ekta chotto prosno chilo
korte pari?

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু