Skip to main content

দ্রোণ পর্ব

চারদিকে ধুন্ধুমার যুদ্ধ।

অবশ্য গোটাটাই এক তরফা। দ্রোণাচার্য পাণ্ডব সৈন্য দেখলেই বেগন স্প্রে ঝেড়ে আরশোলা মারার মেজাজে কুপিয়ে যাচ্ছেন।

নকুল ইতিমধ্যে মেট্রোজিলের খোঁজ শুরু করে দিয়েছিল। সহদেব "শিবিরে লাইটার ফেলে এসেছি, ক্যুইকলি নিয়ে আসছি" বলে সেই যে হাওয়া হয়েছে এখনও পাত্তা নেই। ভীম গদার ডাঁটি দিয়ে পিঠ চুলকে যাচ্ছিলেন। অর্জুন সিলেবাসের বাইরের কোশ্চেন পেপার দেখে কৃষ্ণের ওপর তম্বি শুরু করেছিলেন 'শুরুতেই সম্মানজনক এগজিটের ব্যবস্থা করেছিলাম, তা নয়। বাবু এলেন গীতাগিরি করতে। এ'বার হ্যাপা সামলাও'। যুধিষ্ঠির লুকিয়ে অ্যাডাল্ট জোকসের বই পড়ে নার্ভ ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করছিলেন।

কেষ্ট দেখলেন কিছু একটা না করলেই নয়।

পাণ্ডবদের ডেকে বললেন "আউট অফ বক্স সলিউশন ভাবো"।

নকুল দরাজ গলায় অফার দিলে "সহদেব খুব ভালো আউট অফ দ্য বক্স ভাবতে পারে। আমি বরং শিবিরে ফিরে যাই, যদি ওকে আউট অফ শিবির ভাবানো যায়"।

যুধিষ্ঠির বললেন "দুর্যোধনকে অনলাইন রামিতে চ্যালেঞ্জ করে দেখব"?

অর্জুন বললেন "বাক্সটা দেখছি না কেন ভাই কেষ্টা'?

ভীম বললেন "মেনহিরটা কাজের সময় খুঁজে পাই না কেন বলো তো"?

অগত্যা কেষ্টকেই সলিউশন বাতলে দিতে হল। সত্যবাদী যুধিষ্ঠির মিথ্যে বললেই দ্রোণ পিলে চমকে গোল বাঁধাবেন। সেই সুযোগেই কাজ সেরে ফেলতে হবে। যুধিষ্ঠির অল্প আপত্তি জানাতে যাচ্ছিলেন কিন্তু তারপর মনে হল আইডিয়ালিজমের চেয়ে রাজসিংহাসনে রেভিনিউ বেশি। অতএব রাজী হয়ে গেলেন।

কেষ্ট যুধিষ্ঠিরের কানে কানে মিথ্যে বলার প্ল্যান এ আর প্ল্যান বি বুঝিয়ে দিলেন।

যথারীতি দ্রোণকে দেখেই যুধিষ্ঠির প্ল্যান এ ফায়ার করে।বললেন "অশ্বত্থামা হত, বিপ বিপ"। শুনে দ্রোণ বললেন "স্যাড, ভেরি স্যাড। তাহলে এসো তোমাদের ডাবল প্যাঁদানি দিই"।

ভয়ে আমসি হয়ে পড়েছিলেন যুধিষ্ঠির, কোনওক্রমে প্ল্যান বি মনে করে চালিয়ে দিলেন তিনি
"আই হ্যাভ রেড অল দ্য অফার ডকুমেন্টস কেয়ারফুলি বিফোর ইনভেস্টিং"।

ধর্মরাজের মুখে এমন ডাহা মিথ্যে শুনে পর্যুদস্ত বোধ করলেন দ্রোণ। নিজেকে সামলাতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। চুপিসারে কাজ সেরে ফেললেন ধৃষ্টদ্যুম্ন।

অমনি চার পাঁচটা স্মাইলি দিয়ে ব্যসদেবকে হোয়্যাটস্যাপ করলেন ধর্মরাজ "স্যার, প্ল্যান বি'র রেফারেন্সটা মূল স্ক্রিপ্ট থেকে বাদ দেওয়াই ভালো, কেমন"?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু