Sunday, March 1, 2020

দাস কেবিনে খাবো না



- আজ মোটেও দাস কেবিনে খাবো না...। 
- অবভিয়াসলি। অবিভিয়াসলি। কোনো মতেই নয়। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
- গড়িয়াহাট পৌঁছবো। জরুরী কেনাকাটা সারব। তারপর সোজ ট্যাক্সি ধরে বাড়ি।

- সোজা। স্ট্রেট। কোনোরকম ডায়ে বাঁয়ে না তাকিয়ে।
- নেহাত যদি খিদে পায়...।
- ঘণ্টাখানেক ঘুরঘুর করে কেনাকাটি। ফিনকি দিয়ে ক্যালরি ঝরবে; খিদের আর দোষ কী।
- রাইট। কাজেই নেহাত যদি খিদে পায় তা'হলে সামান্য ডালের বড়া। ব্যাস। 
- ওই যৎসামান্য। 
- তবে ইয়ে; খালিপেটে ডালের বড়াফড়া খেলে আবার সামান্য বুকজ্বালা হতে পারে। 
- বুকজ্বালা আদৌ ভালো ব্যাপার নয়৷ বুকজ্বালা হেলাফেলা করা উচিৎ নয়। আর খালিপেটে ওই ডালের বড়া খাওয়া তো ক্রিমিনাল অফেন্স। তাই না?
- কাজেই একট রোল দিয়ে পেট সইয়ে নিলেই হবে।
- মাত্র এক পিস রোল৷ খালিপেট ঘটিত বুকজ্বালার সমস্যা এড়িয়ে চলতে নেহাৎ মেডিসিনাল পারপাসে ব্যবহৃত হবে৷ 
- করেক্ট। বেদুইনের সামনে দু'দণ্ড জিরিয়ে নেওয়া যাবে। তারপর না হয় ওই সামান্য ডালের বড়া।
- যৎসামান্য ডালের বড় বই তো নয়৷ 
- আর তেমন গোলমাল দেখলে পুদিনহরা তো আছেই...।
- শুনেছি পুদিনহরায় নাকি কী সব কেমিক্যালটেমিক্যাল মেশানো আছে...কিছুতেই আজকাল আর ভরসা করা যায় না।
- বটেই তো। পলিটিশিয়ান টু ওষুধ, সর্বত্র ভেজাল। অগত্যা না হয় থামসআপই খাব৷ 
- অগত্যা। অসহায়। 
- তাই তো। তার বেশি কিছু নয়৷ আর হ্যাঁ, ডালের বড়া খেতে হলে কিন্তু সামনে দাঁড়িয়ে ভাজাতে হবে। 
- প্রয়োজনে ভাজতে বলে না হয় দশ মিনিট অপেক্ষা করব।
- অপেক্ষার প্রসঙ্গে মনে পড়ল, দাসকেবিনের ঠিক সামনে যে দাদা ঠেলা লাগিয়ে ডালের বড়া বিক্রি করে, তার ভাজা বড়াগুলোই মুচমুচে ম্যাক্স। 
- বেশ, তাকেই টাটকা ভাজতে বলে দশ মিনিট অপেক্ষা করব। 
- অপেক্ষা তো করতেই পারি, তবে আমার না দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করে না। কেমন উদাস লাগে। 
- এ যে ভারী সমস্যার ব্যাপার। বড়া ভাজিয়ে দাদার ঠেলার পাশে চেয়ার পাওয়া যাবে কী করে? নিরুপায় হয়ে দেখছি আমাদের দাস কেবিনের বেঞ্চিতে বসেই অপেক্ষা করতে হবে৷ 
- নিরুপায়। হেল্পলেস। অসহায়। আহা রে।
- শুনেছি মিনিমাম মোগলাই বা কাটলেট অর্ডার না করলে নাকি দাস কেবিনের বেঞ্চিতে বসা বারণ? 
- পাষাণ ক্যাপিটালিস্টদের হাতে পড়ে শেষে আমাদের মোগলাই কাটলেট খেতে হবে?
- সত্যিই খুব অসহায় বোধ করছি। 
- নেহাৎ পরিস্থিতির চাপে পড়ে আমাদের এইসব ছাইপাঁশ গিলতে হচ্ছে আজ।
- বুক ফেটে যাচ্ছে। 
- আহা।

No comments: