Skip to main content

ট্রেনি

- তাহলে কী ঠিক করলেন চ্যাটার্জিবাবু?
- আমি রাজী স্যার। 
- ভালো করে ভেবে নিয়েছেন তো? 
- আসলে চাকরীটার খুব দরকার আমার। খুব।
- তিন মাস ট্রেনি হয়ে কাজ করতে হবে। সব ঠিকঠাক চললে, তার পরে কনফার্মেশন।
- রাজী। 
- তাছাড়া স্টার্টিংয়ে যে বেসিকটা পাচ্ছেন, সে'টা কিন্তু নেহাত ফেলনা নয়। 
- সে জন্যই তো...। 
- কাজটা খুব সেনসিটিভ।
- জানি। খুন বলে কথা। সেনসিটিভ তো বটেই।
- তবে মাসে যেহেতু শুধু একটা করে খুন, ওয়ার্ক প্রেশারে নুয়ে পড়তে হবে না আশা করি। 
- চারদিক দেখে শুনে এগোতে হবে। 
- ও সার্টেনলি। ধরা না পড়াটা প্রায়োরিটি। তিন মাসে তিনটে খুন ঠিকঠাক নামিয়ে দিন। কনফার্মেশন লেটার পেয়ে যাবেন। 
- জানি। শুধু প্রথম ক্যান্ডিডেটটা যদি একটু রিকনসিডার করতেন...।
- শুনুন। শহরকে টেররাইজ করার জন্য খুন হওয়ার লিস্ট প্রি-কনফার্মড। সোজা হিসেব, আপনি খুন করে লাশ কসবার ডেরায় পৌঁছে দেবেন, আমাদের অন্য লোক সে লাশ হাপিশ করে দেবে। ওয়ান আফটার আনাদার। জলের মত। ইট ইজ আ উইয়ার্ড কোইন্সিডেন্স যে খুন হওয়ার লিস্টে প্রথম নামটা আপনার প্রাক্তন প্রেমিকার। তবে লিস্টে হেরফেরের উপায় নেই। 
- আসলে ব্রেক আপটা এত ঝামেলার মধ্যে হয়েছিল...এত ঝগড়া...এত কান্নাকাটি...। এখন মানে...দেখাই করতে চায় না। সর্বক্ষণ অ্যাভয়েড করছে। দেখা না হলে খুন করার যে কী অসুবিধে।
- ব্রেকআপটা হল কেন?
- আসলে ও খুব বিয়ে করব বিয়ে করব বলে ঘ্যানঘ্যান শুরু করেছিল। এদিকে আমার কাজকর্ম নেই, ও'সব মরাকান্না কহাতক ভালো লাগে? দু'চারটে বেফাঁস কথা বলে দিলাম, অমনি তেলে বেগুন। সব গেল ভেস্তে। এদ্দিনে বোধ হয় তার জন্য ভালো ভালো সম্বন্ধও আসতে আরম্ভ করেছে। 
- তাহলে তো ব্যাপারটা সিম্পল। চাকরী তো পেয়েই গেছেন, সে খবর জানিয়ে ফোন করুন। 
- চাকরী পেয়েছি শুনলেই ফের ঘ্যানঘ্যান করবে 'বিয়ে করো' 'বিয়ে করো'। 
- আরে সে বলার আগেই আপনি অফার দিন। বিয়ের নাম করে দেখা করতে বলুন। তারপর কাজ ফিনিশ। সিম্পল। 
- সে'টা অবশ্য করা যেতে পারে। ফোন করব তাহলে ওকে?
- অফ কোর্স। 
- রাগের মাথায় ওর সব চিঠি পত্র জ্বালিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম মাইরি। টেলিফোন ডায়েরি থেকে ওদের টেলিফোন নম্বর লেখা পাতাটাও উপড়ে ফেলে দিয়েছিলাম। এখন ওই নম্বর আগে খুঁজে বার করতে হবে। 
- সে ফোন নাম্বার আমাদের কাছে আছে। আপনি কথা মত প্ল্যান করে নিন। 
- নম্বর আছে? বলুন। টুকে নিচ্ছি। 
- লিখুন। টু ফোর ফোর ওয়ান ওয়ান থ্রি নাইন। 

Comments

Shromana Chatterjee said…
chorom..ebar bujlum phone er karon :)

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু