Skip to main content

কিডন্যাপ

- আমায় কিডন্যাপ করে কোন লাভ হল?
- পঁচিশ লাখ আসছে। 
- ধুস। নস্যি।
- নস্যি?
- পঞ্চাশ চাইলেও আসতো। সুড়সুড় করে।
- মাইরি?
- তবে আর বলছি কী!
- রিসার্চে গোলমাল হয়ে গেল!
- ইনএফিশিয়েন্ট লট তোমরা। আমার বাবা, মানে শেঠ জনার্দন প্রসাদ কিডন্যাপ হয়েছিলেন নাইনটিন সেভেনটিটু'তে। তখন কত টাকা দিয়ে তাকে ছাড়াতে হয়েছিল জানো?
- কত? 
- চল্লিশ। 
- লাখ?
- অবভিয়াসলি। আর এত বছর পর তোমরা চাইছ পঁচিশ। ধুর ধুর। তোমার উচিৎ ছিল ঢনঢনিয়াকে কিডন্যাপ করা। সস্তা গার্মেন্টের ব্যবসায় কিছু বাড়তি পয়সা করে ফুরফুর করে উড়ছে। সে না হয় পঁচিশ দিয়ে ধন্য মনে করত। আমার জাস্ট বিরক্তি লাগছে। 
- যাহ্‌ শালা।
- ভাষা সামলে। আমার বয়স কত জানো? বাহাত্তর। জ্যেঠু বলে ডাকবে আমায়।
- এখন কিছু একটা করা যায় জ্যেঠু?
- কিসের কী?
- ওই। পঁচিশের বদলে পঞ্চাশ এলে ভালোই হয়। বড্ড প্রেশার আজকাল। 
- সে গুড়ে বালি। অলরেডি দান চেলে দিয়েছো। বারবার ফোন করতে গেলে পুলিশ কপচে দেবে।
- সে'টাই তো ভয়।
- একটা আইডিয়া আছে আমার অবশ্য।
- কী আইডিয়া জ্যেঠু?
- তোমরা এই পঁচিশ লাখ রিফিউজ করো।
- পঁচিশ আসছিল, পঁচিশও নেব না?
- নেবে না।
- তাহলে পেটে লাথি পড়বে জ্যেঠু।
- পেটে লাথি যাতে না পড়ে, সে দায়িত্ব আমার।
- একটু ঝেড়ে কাশুন না।
- আমি তোমাদের দুই দেব!
- দুই? লাখ? তাতে কী হবে?
- ধের কাঁচকলা। কোটি। 
- কো...কো...। 
- কোটি।
- কো...কো...কো...।
- এই সেরেছে। কোয়ের রোগে ধরল দেখছি। 
- কোটি জ্যেঠু? 
- কোটি। কিন্তু একটা শর্ত।
- রাজি। 
- টাকার গন্ধে অমন চটপট লেজ নেড়োনা খোকা। নাথিং ইজ ইজি।
- কী করতে হবে জ্যেঠু? দু'কোটির জন্য?
- আমায় ছাড়া চলবে না!
- ছাড়ব না? 
- না। 
- সে কী জ্যেঠু!
- ন্যাকামি করলে পাবে পঁচিশ। মাথা ঠাণ্ডা রাখলে দুই কোটি।
- কো...কো...কো...।
- ফের মোরগ হলে। ধুর ছাই। 
- কিন্তু টাকাটা আসবে কোথা থেকে? দেবে কে?
- আমার গোপন অ্যাকাউন্টের খবর জানে শুধু আমার উকিল। তাঁর মাধ্যমে টাকা তুলে আনার দায় আমার। 
- মাইরি?
- মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ। আমি তিন কোটি আনাবো।
- তি...তি...তি...। 
- উফ!
- তিন কোটি জ্যেঠু?
- এক কোটি আমার মেন্টেনেন্স। দু'কোটি তোমার ইনাম। আমায় লুকিয়ে রাখার ইনাম। 
- ফিরতে চান না জ্যেঠু?
- তোমার বাড়ির পিছনের এই নদীটা আমার বড় মনে ধরেছে। আহ্‌। জায়গাটা ভারী মিঠে। ভারী। 
- বেশিদিন থাকলে নজরে পড়ে যাবেন জ্যেঠু।
- আমায় নিয়ে ঘুরতে পারবি না? এদিক থেকে ওদিক। আরও দেব। আরও। 
- বাড়ি ফিরতে এত ভয়?
- বাড়ি নিয়ে সে কেটে পড়েছে অনেক আগে। অনেক আগে।
- জেঠিমা?
- সে খবরে তোর কাজ কী? রাজি থাকলে বল। নয়তো পঁচিশ লাখ নিয়ে ড্যাং ড্যাং করে নাচ গে যা।
- যদি...।
- যদি?
- যদি তিন কোটি নিয়ে ধোঁকা দিই? 
- বিট্রে করবি?
- যদি তিন কোটি পকেটে নিয়ে তোমায় খুন করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিই?
- পসিব্‌ল। কোয়াইট পসিব্‌ল। নদীতে লাশ ভাসাতেই পারিস। কিন্তু ওল্ড এজ হোমে পাঠাতে পারবি কী? বল! পারবি? 

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু