Tuesday, April 5, 2016

করব লড়ব জিতব




করব

- নাহ্‌! 
- না মানে?
- না মানে না। হবে না।
- হবে না বললেই হল?
- হল।
- তুই রেলের পরীক্ষা কিছুতেই দিবি না?
- না। 
- ভালো চান্স ছিল রে মোহন।
- থাম থাম। ক্লার্কগিরি করে শেষ হব ভেবেছিস?
- আঙুর! টক! এর আগে চার বার দিয়েছিস। 
- তুই দিসনি?
- দিয়েছি। কিন্তু এ তাবিজ পরে দিইনি। আমার মন বলছে এবারে ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়ে যাব। আর তাবিজের কিছু গুণ স্পিল করে তোর কলমেও সেঁধিয়ে যাবে'খন। তাই তো বলছি। এবারের পরীক্ষাটা চ' দিয়ে আসি।
- তুই বিজনেসে আছিস কিনা বল!
- বি...বিজনেস?
- শাড়ি। ধনেখালি থেকে কিনে আনব। বাড়ি টু বাড়ি বিক্রি করব। 
- ফিরি করব?
- বাবার টাকায় বিড়ি খাওয়ার চেয়ে না হয় শাড়ি ফেরি করার টাকায় সিগারেট খাব!
- বাড়ি থেকে কী বলবে রে?
- ডিসকারেজ করবে। আমার বাবার জাত যাবে। 
- মেজদা খিস্তি করবে মাইরি রে। 
- আমার কাছে দশ আছে। তুই পাঁচ দিলেই শুরু করে দেওয়া যাবে। পনেরোর শাড়ি কমসে কম কুড়ি বিক্রি হবে। 
- কুড়ি? পনেরোয় পাঁচ প্রফিট? মাইরি?
- মার্কেট আমার দেখা আছে। মোহন অ্যান্ড শ্যামল'স মোবাইল বুটিক।
- মোবাইল বুটিক। বাহ! বেড়ে বলেছিস তো। 
- বিজনেস। করবি?
- করব!
- ভেবে দেখ। 
- করব। 

**

লড়ব।

- পার্টিকে টাকা দিতে হবে?
-  বিমলদা শাসিয়েছে। নয়তো চামড়া গুটিয়ে নেবে। 
- আমাদের তো দোকানও নেই। ফিরিওলা। 
- দোকান নেই তো কী হয়েছে, পিঠের চামড়া তো আছে। 
- যাহ্‌ শালা!
- আরও নাম দে। হারকিউলিস সাইকেলে কেত মেরে ব্যানার ঝোলাও। মোবাইল বুটিক। 
- বিমলদা কে যদি মাসে আড়াই হাজার দিতে হয় তাহলে হবে কী করে? এদিকে মানুদার বৌ আর অলকা পিসিমা ধারে শাড়ি নিয়ে রেখেছে। 
- পইপই করে বললাম রেলের পরীক্ষাটা দে।
- থাম! থাম! চাকরী চাকরী করে হাভাতেপনাটা একটু বন্ধ কর!  বিজ্‌নেস করতে হলে অমন নেদু হলে চলে না।
- নেদু হলে চলে না? 
- চলে না। 
- রিয়েলি? দম আছে বিমলদাকে টাকা না দেওয়ার?
- এগজ্যাক্টলি। আমরা এগজ্যাক্টলি সে'টাই করব। বিমলদাকে টাকা দেব না। 
- পার্টি ফান্ডে চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করবি?
- করব! আলবাত করব।
- পেঁদিয়ে বৃন্দাবন দেখিয়ে দেবে। ব্যবসা মাথায় উঠবে। 
- ব্যবসা মাথায় উঠবে বললেই হল? আমরা প্রটেস্ট করব। প্রয়োজন হলে পুলিশে খবর দেবে।
- চাঁদার টুয়েন্টি পার্সেন্ট শুনেছি থানায় যায়। 
- ঠিক আছে। তাহলে এমএলএ সদাশিব লাহিড়ীর কাছে যাব। 
- বিমলদা তো সদুবাবুর রাইট হ্যান্ড। 
- বড্ড নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছিস তুই দিন দিন শ্যামল। দরকার হলে বিধানসভার কাছে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকব কিন্তু তোলা দেব না।
- তোলা বললে বিমলদা খুব রাগ করে রে মোহন। বল সাবস্ক্রিপশন। ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে। 
- তুই এ'সব বেয়াদপি সহ্য করবি? নিজেদের রক্ত জল করা টাকা ওই গুণ্ডাগুলোর হাতে চুপচাপ তুলে দিবি প্রতি মাসে? লড়াই করবি না? 
- লড়াই করব?
- না করলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবি রে? পারবি না। পারবি না। 
- বলছিস?
- বলছি। 
- বেশ। তাহলে চ'। লড়ব। 
- লড়বি তো?
- লড়ব। 

**

জিতব।

- নাহ্‌ রে শ্যামল। তোর তাবিজের দম আছে। 
- বলেছিলাম। ফিফ্‌থ টাইম লাকি। তাবিজটায় চুমু খাবি একটা? =
- এবার ইন্টারভিউটা ক্র্যাক করতে পারলেই সিকিওরড লাইফ। দশটা পাঁচটা। দু'বছরের মাথায় বিয়ে। 
- ক্র্যাক করব। করবই। দু'জনেই। 
-  ক্র্যাক করলেই জিত। 
- জিতব। 
- জিতব রে। জিতব।  

2 comments:

Unknown said...

বাস্তবতা ।।। অসম্ভব ভালো লাগলো দাদা।। ☺

Unknown said...

বাস্তবতা ।।। অসম্ভব ভালো লাগলো দাদা।। ☺