Thursday, May 26, 2016

দিবাকর ঘোষের প্ল্যান

- আপনিই...?
- নীলু সেন। নমস্কার।
- নমস্কার। আমি দিবাকর ঘোষ।
- শ্যামনগরের বামুনপাড়ায় বাস। জগদ্দলের ডালমিয়া মিলসে ক্লার্ক।
- এত কিছু তো আমি আপনাকে জানাইনি।
- এ লাইনে ক্লায়েন্টের সাথে দেখা করার আগেই আমাদের সব খোঁজ খবর নিয়ে নিতে হয় দিবাকরবাবু। খৈনি চলে?
- নাহ।
- ওহ। ভদ্দরলোক তো। এবার কাজের কথা বলুন...।
- ইয়ে মানে...কাজটা..আসলে...।
- অত আমতাআমতা করছেন কেন? এত রাত্রে নদীর ধারে কে কান পাতবে? টাইম নেই। অ্যাসাইনমেন্ট কম আছে হাতে? ক্যুইক। মার্ডার না সিরিয়াস প্যাঁদানি? 
- মার্ডার নীলুবাবু।
- চল্লিশ।
- হাজার?
- লাখা বললে পারবেন? চল্লিশটা বেস প্রাইস। পুলিশ হলে রেট ডবল। পলিটিকাল নেতা হলে আড়াই লাখ।
- না না। নেতা বা পুলিশ নয়। সাদামাঠা মানুষ।
- ভাই? বাড়ির শেয়ার চাইছে?
- নাহ।
- তবে?
- মিনু দাস।
- মেয়েছেলে?
- হ্যাঁ মানে...।
- পোষা মেয়েমানুষ?
- না না।
- তবে কে? অবশ্য বলতে না চাইলে ঠিক আছে। প্রাইভেসি রেস্পেক্ট না করে এ লাইনে থাকা যায় না।
- এই খামে ছবি আর ঠিকানা আছে।
- থ্যাঙ্কস। ইয়ে, বিশ অ্যাডভান্স।
- কাল দিলে চলবে?
- কাল রাত সাড়ে দশটা, এখানেই।
- আচ্ছা। বেশ।

***
- বাবা, তুমি এত রাত্রে? টাকা এনেছো?
- না রে মা, পাঁচ লাখ জোগাড় করা কি মুখের কথা?
- বাবা গো! কতবার বলেছি টাকা না নিয়ে এখানে এসো না। ও রাগ করে। ভীষণ।
- রাগ করে তোকে মারে মা?
- বাবা! বাবা গো!
- খুব মারে মা? পিঠটা দগদগ করে, তাই না মা?
- বাবা, তুমি এসো এবারে।  ও দেখলে রক্তারক্তি হবে'খন।
- পালিয়ে চ' না মা। বাড়িতে মা তোর জন্য কেঁদে মরছে।
- ত হয় না বাবা। তুমি এসো এখন। তোমার পায়ে পড়ি।
- বেশ। চলি।
- বাবা গো! বড় মারে বাবা; বাড়ির সকলে মিলে! আর খুন্তির ছ্যাঁকা।
- মা রে!
- পাঁচ লাখ টাকা কোনওভাবে জোগাড় করো না গো বাবা! আমি একটু ঘরসংসার করে বাঁচি। ও বাবা! বাবা গো!
- চেষ্টা করছি তো রে মা।
- কত জমেছে এখনও পর্যন্ত বাবা?
- সবে চল্লিশ হাজার জমেছে রে মিনু মা। সবে চল্লিশ হাজার।