Skip to main content

দিবাকর ঘোষের প্ল্যান

- আপনিই...?
- নীলু সেন। নমস্কার।
- নমস্কার। আমি দিবাকর ঘোষ।
- শ্যামনগরের বামুনপাড়ায় বাস। জগদ্দলের ডালমিয়া মিলসে ক্লার্ক।
- এত কিছু তো আমি আপনাকে জানাইনি।
- এ লাইনে ক্লায়েন্টের সাথে দেখা করার আগেই আমাদের সব খোঁজ খবর নিয়ে নিতে হয় দিবাকরবাবু। খৈনি চলে?
- নাহ।
- ওহ। ভদ্দরলোক তো। এবার কাজের কথা বলুন...।
- ইয়ে মানে...কাজটা..আসলে...।
- অত আমতাআমতা করছেন কেন? এত রাত্রে নদীর ধারে কে কান পাতবে? টাইম নেই। অ্যাসাইনমেন্ট কম আছে হাতে? ক্যুইক। মার্ডার না সিরিয়াস প্যাঁদানি? 
- মার্ডার নীলুবাবু।
- চল্লিশ।
- হাজার?
- লাখা বললে পারবেন? চল্লিশটা বেস প্রাইস। পুলিশ হলে রেট ডবল। পলিটিকাল নেতা হলে আড়াই লাখ।
- না না। নেতা বা পুলিশ নয়। সাদামাঠা মানুষ।
- ভাই? বাড়ির শেয়ার চাইছে?
- নাহ।
- তবে?
- মিনু দাস।
- মেয়েছেলে?
- হ্যাঁ মানে...।
- পোষা মেয়েমানুষ?
- না না।
- তবে কে? অবশ্য বলতে না চাইলে ঠিক আছে। প্রাইভেসি রেস্পেক্ট না করে এ লাইনে থাকা যায় না।
- এই খামে ছবি আর ঠিকানা আছে।
- থ্যাঙ্কস। ইয়ে, বিশ অ্যাডভান্স।
- কাল দিলে চলবে?
- কাল রাত সাড়ে দশটা, এখানেই।
- আচ্ছা। বেশ।

***
- বাবা, তুমি এত রাত্রে? টাকা এনেছো?
- না রে মা, পাঁচ লাখ জোগাড় করা কি মুখের কথা?
- বাবা গো! কতবার বলেছি টাকা না নিয়ে এখানে এসো না। ও রাগ করে। ভীষণ।
- রাগ করে তোকে মারে মা?
- বাবা! বাবা গো!
- খুব মারে মা? পিঠটা দগদগ করে, তাই না মা?
- বাবা, তুমি এসো এবারে।  ও দেখলে রক্তারক্তি হবে'খন।
- পালিয়ে চ' না মা। বাড়িতে মা তোর জন্য কেঁদে মরছে।
- ত হয় না বাবা। তুমি এসো এখন। তোমার পায়ে পড়ি।
- বেশ। চলি।
- বাবা গো! বড় মারে বাবা; বাড়ির সকলে মিলে! আর খুন্তির ছ্যাঁকা।
- মা রে!
- পাঁচ লাখ টাকা কোনওভাবে জোগাড় করো না গো বাবা! আমি একটু ঘরসংসার করে বাঁচি। ও বাবা! বাবা গো!
- চেষ্টা করছি তো রে মা।
- কত জমেছে এখনও পর্যন্ত বাবা?
- সবে চল্লিশ হাজার জমেছে রে মিনু মা। সবে চল্লিশ হাজার।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু