Skip to main content

চার জন

- দু'পশলায় ভ্যাঁপসা গরমটা অন্তত কেটেছে। - প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলো না সমর। - প্রসঙ্গ? কোন প্রসঙ্গ নেই। ওয়েদারটা যদিও খিচুড়ির,কিন্তু সে গুড়ে বালি। ব্যাচেলর মানুষ, রান্নার ব্যবস্থা রীতিমত অপর্যাপ্ত। তবে ডিনার না করিয়ে তোমায় ছাড়ছি না রীতা। পাঁচ মিনিট দাও। রমেনের দোকান থেকে ডিম তড়কা আর রুটি নিয়ে আসছি। - সমর প্লিজ। - শুকনো লঙ্কা ব্যবহার না করেও রমেন তড়কাটা এমন টানটান করে, না চাখলে বিশ্বাস করবে না। - সমর। আমার কাজটা তোমার করে দিতে হবে। - রীতা। রুটি তড়কার সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খাও তো? - সমর। হেল্প করবে না? - রীতা দেখো...। - সমর প্লিজ। তোমার অনেক কানেকশন। - রীতা প্লীজ। আমি আর পাঁচটা বাঙালির মত চাকরী করি। - পুলিশে চাকরী করো তুমি সমর। কাম অন। হেল্প মি। - এগজ্যাক্টলি। পুলিশে চাকরী করি। এবং সে কারণেই আমি তোমায় সাহায্য করতে পারি না। - তাহলে কলেজে পড়ার সময় কেন বলতে? তুমি আমার জন্য সব করতে পারো? - সে'টা প্রেমের আলাপচারিতার স্ট্যান্ডার্ড রেটোরিক। - ওহ। কাম অন। সমর। আমি মরে যাবো। - দাম্পত্যের ঝামেলায় ফ্রাস্ট্রেশনে ভোগাটা নতুন কিছু নয়। ডিপ্রেশনও ন্যাচুরাল। কিন্তু তাই বলে কেউ বরকে খুন করাতে চায় না। - জ্ঞান দিও না। আমি নিজেকে তোমার হাতে সঁপে দিতে চাইছি আর তুমি...। - প্রেম ইজ ফাইন। আই মিন। তোমার জন্য ব্যাপারটা পরকীয়া জানি, কিন্তু আই অ্যাম প্লেয়িং অ্যালং। - আমি কি এতটা সস্তা? - এতে সস্তার কী আছে? আই স্টিল ফাইন্ড ইউ ইনক্রেডিব্‌ল। তড়কায় একটার বদলে দু'টো ডিম দিতে বললে কাজে দেয়। - শাট আপ। ইউ হ্যাভ টু হেল্প মি। - আমি এখনও বুঝতে পারছি না তুমি অনিন্দ্যকে ডিভোর্স দিতে চাইছ না কেন। - অনিন্দ্য একটা সিরিয়াল চিট। আমার জীবনটাকে ছারখার করে দিলো এই চার বছরে। - অনিন্দ্য জানে যে তুমি জানো? - নাহ্‌। আমি ভেবেছিলাম ওর মুখোমুখি হবো, কিন্তু ঘেন্না হয় প্রচণ্ড। - সেই জন্য ডিভোর্সের দিকে না গিয়ে তুমি চাইছ ভাড়া করা গুণ্ডা দিয়ে ওকে সরিয়ে দিতে। - আর সে'টা আমি তোমার সাহায্য ছাড়া করতে পারব না। - আই অ্যাম সরি। আমি তোমায় রাতে রুটি তড়কার সাথে রসমালাই অফার করতে পারি। কিন্তু কন্ট্র্যাক্ট কিলারের সাথে কানেক্ট করাতে বোলো না। - তুমি একটা...। - ইডিয়ট? - সমর, ইউ হ্যাভ টু হেল্প মি। নয়তো আমায় সুইসাইড করতে হবে। - রীতা। তুমি কি অনিন্দ্যকে ঠকাওনি? - মানে? - মানে। আমরাও তো ঘনিষ্ঠ হয়েছি। মাঝে মাঝে। মানে প্রায়ই। - সে'টা শুধু ওকে স্পাইট করতে। ও আমার পিছনে ছুরি বসাচ্ছিল...। - ওহ্‌। আমি তাহলে তোমার বরের পিঠে বসানো পালটা ছুরি। - এবার তুমি ঘ্যানঘ্যান শুরু কোরো না সমর। - রীতা। তুমি উন্মাদ হয়ে গেছো। - আমি সুইসাইড করব। - উন্মাদ। - সুইসাইড। - আমার একটা রেপুটেশন আছে। একটা...। - আমি তোমায় খুন করতে বলছি না। শুধু কন্ট্যাক্ট করিয়ে দাও। ভায়া মিডিয়া হলেও চলবে। আর গাইড করে দাও যাতে ধরা না পড়তে হয়। সমস্ত আটঘাট তোমার জানা আছে সমর। প্লীজ। - দিস ঈশ টু হিউজ। - আমায় আদর করবে এখন প্লীজ? - তড়কার দোকানটা বোধ হয় রাত সাড়ে দশটার পর...। - প্লীজ সমর! প্লীজ! আমি আর পারছি না। আর পারছি না। ** - দেখেন মেডাম...। - কাজে গড়বড় হলে কিন্তু...। - বিশ লাখ লিবো এমনি? কাম আপনার, রিস্ক হমার। ফুল প্রুফ। - লোকটা কিন্তু যে সে লোক নয়...। - বিশ লাখে নিজের বাপের লাশ গঙ্গায় বহিয়ে দিবো। ** - রীতা। - কী? - আনন্দবাজার দেখেছো? - কই! না তো। - না মানে...। - এবারে একটু খবরের কাগজটা ছাড়ো অনিন্দ্য... টোস্ট ঠাণ্ডা হয়ে যেতে বসছে। - ইট ইজ সিরিয়াস। - কী ব্যাপার? - তোমার সেই বন্ধু...। - বন্ধু কে? মিতা? অনিন্দিতা? - না না। ওই লেক থানার...কী যেন নাম ছেলেটার...সমর...। - ওর কোন খবর বেরিয়েছে ? - গতকাল ওর লাশ পাওয়া গেছে। হাওড়ার একটা জুটমিলের কাছে। - হোয়াট? - আই অ্যাম সরি। এই যে। তিনের পাতায়। রীতা! রীতা! আর ইউ ওকে? ** - রীতা, অল ওকে? - ঠিক আছি। আসলে সকালে সমরের খবরটা এমন দুম করে জানলাম...। - আই নো, ইউ ওয়্যার গুড ফ্রেন্ড্‌স। - অনিন্দ্য। একটা কনফেশন আছে। - টেল মি। - আর ইউ শিওর। - বলো। - তোমায় ছাড়া আমি অন্য কারুর কথা ভাবতে পারি না অনিন্দ্য। - আই নো, আই লাভ ইউ টু। তুমি ছাড়া আমার দুনিয়া অন্ধকার। অবভিয়াসলি। - মাঝে একদিন সমরের সাথে দেখা হয়েছিল, আই মিন; হপ্তা দুয়েক আগেই। - ওহ। তাতে কী? - আমি জানি না ওর মাথায় কী পাগলামি চেপেছিল, বলা নেই কওয়া নেই খপ করে আমার হাত ধরেছিল। পাগলের মত বলে চলেছিল সে নাকি আমায় ভালোবাসে, আমায় ছাড়া থাকতে পারবে না। - ইউ আর অ্যাট্রাক্টিভ। পুরনো বন্ধুদের পুরনো ব্যথা থাকবে, সে'টা অত্যাশ্চর্য কিছু নয়। - কনফেশন সে'টা নয়। - তবে? - আমার ওর হাত ছাড়িয়ে নিতে দু'তিন সেকেন্ড দেরী হয়েছিল। আর দেরী হয়েছিল বলে সেদিন থেকে আমি দগ্ধে মরছি। অপরাধবোধে। আমি তোমার। মনে প্রাণে তোমার অনিন্দ্য। অন্য কেউ আমার হাত ধরার সাহস পায় কোথা থেকে? আর সেই হাত ঠেলে সরিয়ে দিতে কিনা আমার দেরী হল? এহ! - ডোন্ট বি সো হার্ড অন ইওরসেলফ রীতা। আমি জানি তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো। ঘটনাটার আকস্মিকতায় তুমি কয়েক সেকেন্ড রিঅ্যাক্ট করতে পারোনি, দ্যাটস অল। এক্সট্রিমলি সিলি অফ ইউ টু ফিল গিল্টি। - হতে পারে সিলি। কিন্তু আমি তোমায় ততটাই ভালোবাসি অনিন্দ্য। আমি তোমার হারাতে চাইনা। - কোনদিন তেমন হবে না। হতে পারে না। - অনিন্দ্য! জানো, এই ফালতু অপরাধ বোধেই সবচেয়ে বড় খবরটা তোমায় সপ্তাহ খানেক ধরে দেওয়া হয়নি। আমি চাইনি এই গিল্ট শেয়ার না করে তোমায় এত ইম্পরট্যান্ট খবরটা দিতে। - খবর? কী খবর রীতা? - অনিন্দ্য...। - কী? - আমি এক্সপেক্ট করছি। - রীতা! রিয়েলি? - আমায় আদর করবে প্লীজ? প্লীজ?

Comments

Anonymous said…
Boss - tomar web page-r twitter-er link ta incomplete - ota hobe "http://twitter.com/mtanmay" - kintu hoye aache "http://twitter/mtanmay" - pls. fix it.

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু