Friday, March 25, 2016

মন্মথ ও অমল



চায়ের কাপটা সামনের টেবিলে নামিয়ে রাখলেন মন্মথ। এবার যাওয়ার সময়। এবার বিকেল। 
অমল দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। তার কাঁধে মন্মথের ব্যাগ। বুক পকেটে টিকিট। অনতিদূরে ট্যাক্সি।

- "হাওড়া যাবিই?", অমলের দিকে তাকিয়ে ম্লান হাসলেন মন্মথ।
- "আবার কবে দেখা হবে ঠিক আছে কোন?", ঢিপ করে প্রণামটা সেরে নিলে অমল।
- "সাবধানে থাকিস"।
- "আবার কবে আসবে মনুদা"?
- "দেখি। যবে। তবে"।
- "রাতে থাকলে তাও গল্প হত"।
- "উপায় নেই। জানিসই তো আমার কাজের কথা। তোর মত ব্যবসায়ী হলে বরং পায়ে পা তুলে কয়েকটা দিন কাটিয়ে যেতাম কলকাতায়"।
- "ভারী তো মাল সাপ্লাইয়ের কাজ, তাও তুমি সময়মত না ধরালে যে কী হত"।
- "ইম্পর্ট্যান্টলি এখন সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছিস। দিনের শেষে জি হুজুরি করে দিনক্ষয় করতে হচ্ছে না"।
- " এ কাজেও কম সেলাম ঠুকতে হয় না জানো"।
- " হ্যাঁ রে অমল। তোদের সেই আমগাছটা কেটে ফেলেছিস না?"
- "দোতলা তোলবার সময় কেটে ফেলতে হল"।
- "গাছটার আম বড় মিঠে ছিল"।
- "মনুদা, কাল তৎকালে টিকিট কাটার একটা ব্যবস্থা করতে পারি এখনও। ট্যাক্সিওলাকে না হয় দশ বিশ টাকা দিয়ে দিচ্ছি"।
- "প্রণাম ঠুকেই ফেলেছিস। বাবা বলতেন প্রণামের ইনহেরেন্ট পারপাস্‌কে ঠেলে সরিয়ে দিতে নই"।
- "ধুস্‌। আমিই তো রিট্র্যাক্ট করতে চাইছি"।
- "ব্রহ্মাস্ত্র সাবান রাখার প্লাস্টিক কৌটো না বাপ। যে হাত পিছলে বাথরুমের ফ্লোরে পড়ল আর তুমি চুক চুক করে কৌটোটা তুলে তাকে রেখে দিলে"।
- "যাবেই"?
- " যাওয়ার কি আর উপায় আছে রে অমল? তবে এ ট্রেন যেতে দেওয়ার উপায় রাখিনি। চ'। বাকি কথা ট্যাক্সিতে হবে"।

No comments: