Skip to main content

বিরিঞ্চি বিহিত


- প্রভু একটা বিহিত করুন প্রভু। 
- কী চাই তোমার?
- সাতটি দিনের জন্য নাইনটিন ফোরটিনে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিন প্রভু। সস্তায় কিছু লোহা কিনি। দোহাই বাবা। 
- লোহা?
- হ্যাঁ। লোহা স্যার...ইয়ে...প্রভু। 
- সস্তায়?
- হ্যাঁ প্রভু। নাইন্টিন ফোরটিনে। 
- কী করা হয় তোমার?
- আপিসে লেজারকিপার। মাত্র দু'শো তেত্রিশ টাকা মাইনে পাই। সংসার চলে না বাবা।
- সংসার চলে না?
- না! লোহা...প্রভু...। 
- নাইনটিন ফোর্টিনে?
- হ্যাঁ প্রভু। একটা বিহিত করুন।
- নাইনটিন ফোরটিনে একটু অসুবিধে আছ। 
- কেন প্রভু? 
- কালের প্রবাহে উল্টো ডুব সাঁতার? সবার দ্বারা হয় না বাপু। হয় না। হয় না। হয় না। কঠোর সাধনা চাই!
- তাহলে স্যার...আরে...প্রভু আমার কি কোন উপায় কোন প্রকারে...? আপনি...একটা উপায় করুন...। 
- উপায় আছে। উপায় আছে। আছে উপায়। 
- আছে?
- উনিশশো চোদ্দয় নয়। উল্টো পথে হাঁটা তোমার সইবে না। তোমায় আমি শতাব্দীর অন্য প্রান্তে নিয়ে যাব। 
- আজ্ঞে?
- শতাব্দীর অন্য প্রান্তে। একবিংশ শতাব্দীতে। স্বাধীন ভারতবর্ষে।
- ডমিনিয়ন প্রভু?
- মোহনদাস ভোল পালটাবে বাছা। পালটাবে। সব ছকে রেখেছি।  
- প্রভু। 
- তোমায় আমি নিয়ে ফেলব একবিংশ শতাব্দীতে। 
- তখন কি লোহা সস্তা পাব প্রভু?
- ইস্পাত? তার চেয়েও মজবুত ও ধারাল; ধার।  
- ধার?
- ধার। তুমি কয়েক হাজার কোটি ধার করবে। 
- হা...হা...হা...হা...।
- দু'চার হাজার বেশিও চাইতে পার। কেউ আটকাতে যাচ্ছে না। 
- কিন্তু স্যার...ধুর্‌...প্রভু...ধার শুধব কী করে?
- রবি কে কি সাধে বলেছিলাম যে তোমরা বাঙালি হয়েই জীবন অতিবাহিত করে দেবে, মানুষ হতে পারবে না! শোন ধার নেবে কিন্তু শোধ দেওয়ার কোন দরকার নেই। দু'হাজার ষোল সাল শুরু হলেই তুমি বর্তমানে ফিরে আসবে।
- কয়েক হা...হা...হা...হাজার কোটি সমেত প্রভু?
- নিশ্চই। কিন্তু কেউ আমায় ধার দেবে প্রভু? আমি ক্লার্ক!
- কেরানীকে কেউ ধার দেয় হে! তুমি সে সময় গিয়ে ব্যবসা ফাঁদবে। বা ব্যবসা ব্যবসা ভান করবে। নেশা ধরাবে মানুষের মনে। মানুষকে ওড়াবে। আর ওড়াবে তাদের টাকা। কেমন? 
- প্রভু। প্রভু। প্রভু। 
- বিজয়ী হও।

Comments

Rohon said…
হে হে হে... এটা দারুণ।
Anonymous said…
ekghor-PB
Anonymous said…
ekghor-PB
Atanu said…
দারুন :)
দ্যাট লাস্ট লাইন।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু