Skip to main content

নিয়ার ডেথ্‌

-   নিয়ার ডেথ এক্সপিরিয়েন্স?

-   আজ্ঞে।

-   এখেনে বসলে?

-   এখানে বসে, এই কাঁচের টুপিটা মাথায় দিয়ে তারপর ওই নীল সুইচ্‌টা দাবিয়ে দিন।

-   তারপর?

-   তারপরেই সেই ম্যাগনিফিসেন্ট ব্যাপার।

-   ম্যাগনিফিসেন্ট? যন্ত্রণা নয়?

-   ফিজিকাল যন্ত্রণার ওপারে রয়েছে মৃত্যু বুঝলেন। যখন মৃত্যু ল্যান্ড করবে তখন সমস্ত পিসফুল।

-   পিসফুল। উদ্ভাসিত আলোয় তৈরি হবে ব্যাকগ্রাউন্ড। তারপর ভেসে আসবে সে।

-   সে? ডেথ?

-   সুবাস।

-   সুবাস?

-   একটা মনমোহিনী সৌরভ। সুবাস। সুবাতাস। বুক জুড়ে নেমে আসবে।

-   সেটা কেমন?

-   মৃত্যু আসলে গন্ধ...।

-   সুগন্ধ বলুন স্যার। আর আমার এই যন্ত্রে বসে, সেই অপরূপ সুগন্ধ আপনি চেখে আসতে পারবেন।

-   কীরকম সুগন্ধ মশাই ?

-   একেক জনের একেক রকম। আপনার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় গন্ধগুলো মণ্ড পাকিয়ে আসে। আবেশের ভার চাপিয়ে সরে পড়ে। মানুষ স্তিমিত হয়ে আসে।

-   উরিব্বাস।

-   গতকাল যে কাস্টোমার এলেন তিনি পেলেন ফুচকার জলে গন্ধরাজ লেবুর গন্ধ। ঘাস, মাটন, মা; কত কিছুর গন্ধ পায় লোকে।

-   কেউ ইয়ে...ওপারে চলে যায় না তো?

-   ফিজিক্যালি তো আপনি জ্যান্ত ও সুস্থ। এই যন্ত্র শুধু আপনাকে মৃত্যুর আগের মূহুর্তের অনুভূতিটুকুর স্পর্শ করায়। একটা সামান্য রিস্ক শুরুর এক্সপিরেমেন্টে ছিল। মরণ সৌরভে বিভোর হয়ে মানুষ মাঝে মাঝে কোমায় চলে যাচ্ছিলে।তারপর নতুন করে অ্যান্টিডোট দাওরে, শুশ্রূষা কর রে; হাজারো ঝক্কি।  তবে এ যন্ত্র এখন এতটাই অ্যাডভান্স্‌ড যে সে চিন্তা আর নেই। অটোকাট সিস্টেম রয়েছে। আপনার ব্রেন সম্পূর্ণ স্তিমিত হয়ে যাওয়ার আগেই যন্ত্র বন্ধ হয়ে যাবে। আপনি ফিরে আসবেন সে অপার্থিব অনূভতি বহন করে।

-   ডাক্তার বাগচি, আপনি তো দুরন্ত কাজ করেছেন!

-   নিন, এই কাঁচের টুপিটা মাথায় দিন। আমি স্যুইচ অন করি।

**

-   নোবেল ইজ টু লিট্‌ল ফর ইউ ডক্টর বাগচি।

-   থ্যাঙ্ক ইউ প্রেসিডেন্ট।

-   টু লিট্‌ল।

-   আই নো।

-   মেশিন দ্যাট জেনারেট্‌স নিয়ার ডেথ ফিলিং। হাউ সেনসেশনালি ইনক্রেডিব্‌ল।

-   ইউ নো দ্যাট্‌স হোয়াট ইট এক্স্যাক্টলি ইজন্‌ট। ডোন্ট ইউ ডিয়ার প্রেসিডেন্ট?

-   আই নো। আই নো। কিন্তু পৃথিবীর নব্বুই ভাগ সমস্যার মিটে যাওয়া তো আপনার এই আবিষ্কারেই। যুদ্ধের দরকার পড়ছে না। খাদ্য সমস্যা প্রায় শেষ। পরিবেশের ওপর চাপ আর প্রায় নেই। ধর্মের প্রয়োজন শেষ। শান্তি ভরপুর। অল; থ্যাংকস টু ইওর নিয়ার ডেথ এক্সপিরিয়েন্স ইনডিউসিং মেশিন।

- সেটা যে সত্যি নয়...।

- ইউ উইল নেভার মেনশন দ্যাট এভার এগেইন ডাক্তার। নেভার। এটা যে মৃত্যু প্রেম জেনারেটিং মেশিন....দ্যাট শুড নেভার বি মেনশন্ড এগেইন...।

- সুইসাইড পারসুয়েডার প্রেসিডেন্ট। সুইসাইড পারসুয়েডার। সাকসেসফুল ইন ৯৯% অফ কেসেস।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু