Skip to main content

সর্ষের মধ্যে

- আসুন। আসুন। ওয়েলকাম টু দ্য ল্যান্ড অফ ডেড।

- বাহ! দিব্যি অ্যারেঞ্জমেন্ট কিন্তু মশাই। ইয়ে আপনি...?

- অনিল সমাজপতি। এই অগস্টেই এসেছি। ব্রেনস্ট্রোক।

- আমি নির্মল রায়। আমার আবার ইয়ে, কার্ডিয়াক। তা, এখেনে সবকিছু এমন কালচে কেন বলুন দেখি?আর একটা ঝাঁজালো গন্ধও পাচ্ছি সেই এসে থেকে।

- সর্ষের মধ্যে প্রথম ক'দিন এমন লাগবে। পরে সয়ে যাবে। 

- সর্ষে?

- নয়তো আর বলছি কি। দেওয়াল সিলিং ছুঁয়ে দেখুন না মশায়। সর্ষে দানার ইন্টেরিয়র বিলক্ষণ ফিল করতে পারবেন।

- রিয়েলি! আর বাহ! তাই তো! মানে ইয়ে, এখানে বোধ হয় স্বর্গ নরকের ব্যাপারটা নেই। মানে যেমন গপ্পগাছা শোনা যায় আর কী! তাই না?

- স্বর্গ? নরক? অবভিয়াসলি আছে। খানিক পরেই ব্রশার আসছে। পড়লেই ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

- ব্রশার?

- মৃত্যুলোকের। 

- তা স্বর্গ বা নরক চিজ কেমন? সেসব এই সর্ষের মধ্যেই?

- আরে না না। এ তো বেসক্যাম্প। এখানে স্রেফ মাসখানেকের মামলা। তার মধ্যেই ফয়সালা আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

- ফয়সালা অফ স্বর্গ অর নরক?

- এগজ্যাক্টলি।

- তা নরক মানে তো শুনেছি অসম্ভব যন্ত্রণা। কড়াইয়ে চুবিয়ে বিশ্রী হ্যারাসমেন্ট।

- কড়াইয়ে চুবনিই আসলে স্বর্গের অ্যাফেয়ার।

- সে কী! সে তো যন্ত্রণা।

- অন দ্য কন্ট্রারি। প্লেজার অফ দ্য হাইয়েস্ট অর্ডার।

- হাউ?

- দেখুন,আপনার কপালে স্বর্গ থাকলে আপনি সর্ষেয় চেপে বাটা হয়ে স্ট্রেট যাচ্ছেন ইলিশে। আর নরকভোগ থাকলে আপনাকে সর্ষে সহ রগড়ে তেল বার করে পাঠানো হবে ডিসেম্বরের স্নানবাবুর নাকের ফোঁদলে।

- ম্যাগো।

- তাই বলছিলাম; কড়াইই স্বর্গ।

Comments

Anonymous said…
অ-তু-ল-নী-য়।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু