Skip to main content

নিখুঁত প্রতিশোধ

- ডাক্তার। 

- কোথায় রাখলে?

- ওটিতে। 

- ভুল হয়নি তো?

- সেই লোক ডাক্তার। হান্ড্রেড পারসেন্ট। আলেক্স রডরিগেজ। আই কার্ড আর ছবি মিলিয়ে দেখেছি। কাট মার্ক অন দ্য নি। কটা চোখ। নির্ভুল।

- চোট?

- যেমন কথা তেমন কাজ। বিন্দুমাত্র নেই। শুধু গভীর ঘুমে। আটচল্লিশ ঘণ্টার আগে জ্ঞান ফিরবে না। 

- গুড। 

- ওটি তৈরি করি?

- কর। আমি সিগারেটটা শেষ করে আসছি।

- ডাক্তার। 

- বল।

- এই আপনার ...। 

- হুঁ।

- আপনি নিশ্চিত? 

- নিজের বাবা মা'র খুনিকে মনে রাখাটা বেশ সহজ কার্লোস।

- খুন তো সহজেই করতে পারতেন । সহজ প্রতিশোধ।

- যে প্রতিশোধ সহজে নেওয়া হয়, সে প্রতিশোধ দায়সারা। 

- যন্ত্রণাবিদ্ধ করে মারতে চান?

- যন্ত্রণাবিদ্ধ করতে চাই। তবে মারতে চাই না। সুস্থ ও জীবিত রাখতে চাই। 

- কী অপারেশন করতে চাইছেন ডাক্তার? 

- যে অপারেশনের জন্য আমার এই কুড়ি বছরের রিসার্চ। 

- গোপন রিসার্চ। 

- ঠিক। 

- কীসের অপারেশন ডাক্তার?

- দ্য মোস্ট কমপ্লেক্স ব্রেন সার্জারি ইন হিউম্যান হিস্ট্রি।

- কী'রকম?

- টেবিল তৈরি কর কার্লোস। 

- রাইট ডক্টর। 


**

- খোকা। 

- ইউ আর আ পিস অফ ডার্ট আলেক্স। আর আমায় খোকা বলে ডাকা বন্ধ কর। 

- আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলিস না। আমি জানি আমি আলেক্স কিন্তু তবু...। 

- কিন্তু তবু আমার জন্যে অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। তাই না? আমায় খোকা বলে ডাকতে ইচ্ছে করছে তাই 
না? আমার মা বাবাকে মেরেছ বলে পাগলের মত কষ্ট হচ্ছে, তাই না?

- এসব কী করলে ? হোয়াট হ্যাভ ইউ ডান?

- তুমি আমার বাবা মাকে কেন খুন করেছিলে? 

- অবভিয়াসলি ওদের ফর্মুলা চুরি করতে। বাট আই ফিল টেরিব্‌ল নাউ। মরে যেতে ইচ্ছে করছে। হোয়াই! কী এমন হল যে এমন ভীষণ অপরাধ বোধ...। 

- ফর্মুলা। মানুষের ইমোশনাল কনফিগারেশনের রেপ্লিকা তৈরি করার মেডিকাল ফর্মুলা। সেই রেপ্লিকাকে জমিয়ে রাখার ফর্মুলা। সেই ইমোশনাল কনফিগারেশনের রেপ্লিকাকে অন্যের ব্রেনে ইমপ্ল্যান্ট করতে পারার ক্ষমতা। কী হল খুন করে? এ ফর্মুলা তো পেলে না আলেক্স।

- আমায় ক্ষমা কর খোকা। যন্ত্রণা। বড্ড যন্ত্রণা। 

- স্টপ কলিং মি খোকা। গুলি করে ঘিলু ঘেঁটে দেব আলেক্স। অনেক দিন আমায় কষ্টে রেখেছ। আহ, চোখ বুঝলেই মা বাবার মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করার দৃশ্য মনে পড়ে।

- তোর হাতে ওটা রিভলভার খোকা? শুট মি। শুট মি নাউ। এ যন্ত্রণা বইতে পারব না আমি। 

- যন্ত্রণা তো সবে শুরু আলেক্স। 

- এমনটা কেন হচ্ছে ? কেন?

- সে ফর্মুলা কাজে লাগানোর বুদ্ধি তোমার ছিল না আলেক্স। তুমি মেডিকাল সায়েন্সের জগতের কলঙ্ক। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার আগে সেই ফর্মুলা সফল ভাবে টেস্ট করে গেছিলেন। অবিশ্যি পার্শিয়াল সাকসেস। 

- সাফল্য?

- আমার মায়ের ইমোশনাল কনফিগারেশনের রেপ্লিকা তৈরি করে যত্ন করে রেখে গিয়েছিলেন। সেই রেপ্লিকা আজ আমি তোমার ব্রেনে প্ল্যান্ট করেছি।

- খোকা! এ তুই কী করলি?

- যে যন্ত্রণা তুমি ভোগ করছ আলেক্স, তা হচ্ছে আমার মায়ের বুকের ব্যথা। নিজের স্বামীকে আততায়ীর গুলিতে ছটফট করে মরতে দেখার যন্ত্রণা। নিজের মৃত্যু দেখতে পাওয়ার আতঙ্ক। সে'সব যন্ত্রণাতেই ছটফট করে মরছ তুমি। ছটফট করে মরবেও। আজীবন। 

- খোকা! স্টপ ইট!

- ইট হ্যাজ জাস্ট স্টার্টেড। সবচেয়ে করুণ যন্ত্রণায় তোমায় দগ্ধে মারব আলেক্স। বাপ মায়ের খুনের যোগ্য বদলা নিয়ে যাব আমি। সন্তানহারা মায়ের দুঃখের আগুনে তোমায় সেঁকব আজীবন। 

- কী করছিস খোকা! সাবধান! 

***

ডাক্তারের নিথর দেহের ওপর লুটিয়ে পড়লেন নতুন মা ও সদ্য সন্তানহারা আলেক্স রডরিগেজ্‌। 

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু