Skip to main content

সী অফ ট্রাঙ্কুইলিটি

-প্যাসিফিক দেখেছেন?

-প্রশান্ত? মহাসাগর?

-নয়তো আর কী! মুখ গুঁজে ফাইলই ঘেঁটে গেলেন মশাই। বছরে একবার পুরী ছাড়া তো আর সমুদ্র চিনলেন না। কুণ্ডু স্পেশালে না পচে একবার থমাস কুকের লেজুড় হয়ে ঘুরে আসুন না। প্যাসিফিকের নীলের সামনে দাঁড়ালে টের পাবেন ওশেন কী জিনিষ। গায়ে কাঁটা দেওয়া ব্যাপার।

-তার চেয়ে বড় সমুদ্র দেখা আছে মশাই।

-বিগার দ্যান প্যাসিফক? জিওগ্রাফিতে নোবেল থাকলে আপনি পেতেন।

-সী অফ ট্র‍্যাঙ্কুইলিটির নাম শুনেছেন?

-চাঁদের সমুদ্র? আপনার দেখা নাকি?

-রকেটে না চড়তে পারি, তবে নিজের পকেট কেটে একবার প্লেনে চড়েছিলাম। দমদম টু বাগডোগরা। রিটার্ন অবিশ্যি দার্জিলিং মেলে ছিল; টু অ্যান্ড ফ্রো ফ্লাইট বাড়াবাড়ি হয়ে যেত। প্লেনে উইন্ডো সিট বাগিয়েছিলাম। তো দমদম থেকে যেই টেক অফ করলে আমি হাভাতের মত নীচের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ক্যালক্যাটা ক্রমশ মিনিমাইজ হতে থাকল। দু'মিনিটের মাথায় চোখের সামনে থেকে শহর ভ্যানিশ হয়ে উদয় হল সমুদ্র।

-বে অফ বেঙ্গল?

-সী অফ ট্রাঙ্কুইলিটি। কলকাতার হইহই রইরই নেই। ফোঁটা ফোঁটা জলের মত হাই রাইজগুলো। নরম মাফলারের মত পেঁচানো হুগলী। মন দিয়ে দেখলাম তরঙ্গ আছে, উচ্ছাস নেই। ভেরি আনলাইক দ্য সিটি দ্যাট উই নো। অন্তরে বাস করার একটাই প্রবলেম; ঘিঞ্জি জিন্দেগী চোখে পড়ে, শান্ত সমাহিত টোটালিটিটা গোচর হয় না। খটমট শহুরে ক্লীশে গদ্য কান ভরে দেয় কিন্তু পোয়েট্রিটা ইন্টারসেপ্ট করা হয় না। সেই প্রথম কলকাতার নয়েস নয়, স্নেহ ঢেউ ফিল করি। মাই ওউন সী অফ ট্রাঙ্কুইলিটি। দেখুন মশাই, ই-ওয়ান বাস আমার থমাস কুক আর ওই হাজরার অটো স্ট্যান্ড আমার কুণ্ডু। প্যাসিফিকে আমার আর কাজ নেই। হে হে।


Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু