Skip to main content

সেক্সিস্ট

-মায়ের হাতে বেলা লুচিই ভালো খেতে হবে কেন? তোমার বাবা লুচি বেলেন না কেন? তুমি সেক্সিস্ট। তোমার বাবা সেক্সিস্ট।

- না মানে...ইয়ে...সে ভাবে বলিনি...।

-তুমি স্পষ্ট বলেছ। যে মায়ের হাতের বেলা লুচি না হলে তোমার মুখে রোচে না। এর মানে কী? তোমার বাবাকে তুমি লুচি না বেলতে উস্কানি দিচ্ছ! তাই তো? বিয়ের পর বলবে আমার হাতে কাচা জামা প্যান্ট ছাড়া তোমার পরতে ভালো লাগে না। ব্যাস! আমি তারপর তোমার ধোপানী হয়ে যাই আর কী! আমায় কিন্তু মীক আর ডসাইল অবলা ভেব না!

-না মানে...তা নয় কিন্তু। বাবা লুচি বেলতে পারে।

-তবু বেলেন না। তাই তো? সেক্সিস্ট। বাপ ব্যাটা দু'জনেই সেক্সিস্ট।

-বাবা বড় পলিটিক্যালি লুচি বেলে; মানে পারফেক্ট পলিটিক্যাল ম্যাপ সব - মহারাষ্ট্র টু ইন্দোনেশিয়া; তা কড়াইয়ে না দিয়ে তার ওপর সহজেই ম্যাপ পয়েন্টিং করা যেতে পারে। বিশ্বাস কর। বিশ্বাস কর আমি সেক্সিস্ট নই। আমি গোল-লুচি-ভালোবাসিস্ট। তাই; মা'র বেলা লুচির জন্য মুখিয়ে থাকি।

**

- জিমে তাহলে তুমি যাবেই না?

- না।

- এই ভুঁড়ি ম্যান হয়ে জীবন কাটাবে?

- হ্যাঁ।

- আমি এমন স্লিম ট্রিম। আর আমার বর এমন ধ্যাপস হয়ে থাকবে চিরকাল?

- বিলকুল। আর তুমি ভুলে যেও না এ ভুঁড়ি তোমার প্রতি ভালোবাসাতেই।

- আমার প্রতি ভালোবাসায় ভুঁড়ি রেখেছ!ইস! কবে বলেছি আমি?

-আলবাত তোমার প্রতি ভালোবাসায়। অন্তত নোশনাল জেন্ডার ইকুয়ালিটি বজায় রাখতে এই ভুঁড়ি।

-এক্সপ্লেইন।

-খোকাকে যখন ক্যারি করছিলে; মনে নেই তুমি বলেছিলে যে ভগবান নিজেই সেক্সিস্ট! বার্থ প্রসেস্‌টাই এমন ভাবে স্কিউ করে রেখেছে যে মেয়েদেরই যত কষ্ট আর ছেলেদের ফুর্তি? বলেছিলে কী না?

-বলেছিলাম। সো?

-আমি আজীবন এ ভুঁড়ি পুষে তোমার সে কষ্টের সহ-মর্মী হব। এ ভুঁড়ির ভার আমায় আজীবন মনে করাবে যে খোকাকে ক্যারি করার সময় তুমি কী কষ্টটাই না করেছ। কথা না বাড়িয়ে মাটনের বাটিটা এদিকে পাস কর দেখি।

**
- আমার দিকে অমন ল্যালল্যাল করে তাকিয়ে আছ কেন? আমি গামছা পরে আছি বলে? এটা কী অ্যাবজেক্ট সেক্সুয়াল অব্জেক্টিফিকেশন নয়? সেবার তোমার আঁচল আধ ইঞ্চি হেরফের হয়েছিল আর আমি সামান্য তাকিয়ে ফেলেছিলাম। বাপ রে বাপ! সে কী জ্ঞান দিলে। আর এই বেলা? এই...আমায় এমন অবজেক্টিফাই করতে...লজ্জা লাগে না?

- শাট আপ। তোমার তাকানো আর আমার তাকানো এক নয়। তোমার তাকানো ছিল বাঙালের সিজনের প্রথম ইলিশ দর্শনের মত।

- ইহঃ! আমার বাবা যশোর মা বরিশাল। আমায় জ্ঞান দিচ্ছেন- ব্যঙ্যালের ইলিশ দর্শন। আর তোমার এই গামছার দিকে তাকানো, সে'টা কীরকম শুনি?

- মালপো যদি ভানুকে দেখতে পেত; তবে যেমনটা হত- ঠিক সে'রকম!

Comments

malabika said…
ভুঁড়ির পক্ষে সওয়ালটা বেশ নভেল!

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু