Skip to main content

বিপিনবাবু আর নতুন দুনিয়া

রকেটের দরজা খুলে বেরিয়ে এসে যা দেখলেন বিপিনবাবু তাতে তার চক্ষু ছানাবড়া। 

রকেটের সামনেই একটা দোকান যেখানে এলিয়েনরা চোখের ছানি কেটে তা দিয়ে কী সুন্দর বড়া ভেজে খাচ্ছে। বিপিনবাবুর ছানাবড়া চোখ সে ছানিবড়াদের প্রেমে পড়ে গেল তক্ষুনি। "ইধর উৎরো", দলের বাকিদের হুকুম করলেন তিনি।


***


- আপনার নামটা কী বললেন যেন স্যার? গুলিয়ে যায় বারবার।


- মিছুএকাউএজগমুফহুরিয়ালাম। এই নিয়ে আপনাকে তিন নম্বর বার বললাম কিন্তু বিপিন।


-না মানে, এলিয়েনের নাম কী না।


-আরে আমার কাছে তো বিপিন নামটাও এলিয়েন। যাক গে। কী জিজ্ঞেস করছিলেন যেন?


-না মানে, আপনাদের এখানে আপনারা লোকে মারা গেলে শেষকৃত্যের আগে তাঁদের চোখে খুবলে নেন কেন?


-সে কী! এই এগ্রিকালচারাল ব্রেক থ্রু আপনাদের গ্রহে পৌঁছায়নি? মড়ার চোখ আপনারা নষ্ট করেন নাকি?


-করা উচিৎ না বোধ হয়?


-একেবারে না। সর্ষে ফুল চাষের জমিতে খুবলে নেওয়া চোখেগুলো ছড়িয়ে একবারটি দেখুন। দেখবেন সর্ষে ফুলের কী তাগড়াই ফলন ঘটে। যাক গে। এইবারে এইটা চোখে পরে নিন দেখি। চোখ মূল্যবান জিনিষ। অমন একটানা খোলা রাখতে নেই; চোখ যত বেশি দেখে তার তত বেশি ক্ষয়। 


-এটা পরব? এটা তো বোধ হয় রোদ-চশমা।


-রোদ কী? না না। ওসব বলি না আমরা। এর নাম হচ্ছে ঠুলি। চোখে পরলে ঝ্যামেলা কমে প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে। আচ্ছা, আপনারা কী চোখের কোন ব্যবহারই ভালো মত জানেন না মশাই? শুধু দেখেটেখেই খালাস?


-ওই, দেখা, কান্না; এইটুকুই তো চোখের কাজ বলে জানতাম এদ্দিন।


-কান্না? হোয়াট ইজ দ্যাট?


-ইয়ে, জল পড়া। চোখ দিয়ে। দুঃখে। খুব আনন্দে।


-জল পড়া। আপনা থেকেই পড়ে? 


-আপনা থেকেই।


-*ফিসফিস করে* ইয়ে, স্পেশ্যাল বাথরুম আছে নাকি? এই এক্সক্রিশনের জন্য।


-আছে। সে বাথরুম কে আমরা বালিশ বলি। আর ইয়ে, কী নাম যেন বললেন আপনার...।


- মিছুএকাউএজগমুফহুরিয়ালাম। 


- অ। মিছু বাবু। শুনুন। আমি বরং চলি বুঝলেন। ছানিবড়া নিয়েই থাকুন আপনারা। অ্যাই লেড়কালোগ, সামান উঠাকে রকেটে ওয়াপিস চলো।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু