Skip to main content

সুবাস



-বসব?


-পাবলিক পার্ক। পাবলিক বেঞ্চি। পারমিশন চাইছেন কেন?


-না মানে আপনাকে ডিস্টার্ব না করে ফেলি।


-পারমিশন চেয়ে ডিস্টার্ব করছেন।


-হে হে। থ্যাঙ্কস। আপনার হাতে ওটা আজকের কাগজ নাকি মশাই?

-হুঁ। পড়বেন?

-নাঃ, আমার আর এ যুগের খবরে কী দরকার।

-এ যুগের খবরে আপনার দরকার নেই?

-না মানে। খবরের হিসেব রাখা কবেই ছেড়ে
দিয়েছি।

-কবে থেকে?

-রামবাবুর এক্সপ্যায়ার করার পর থেকেই।

-রামবাবু?

-অযোধ্যার।

-দশরথের ছেলে?

-এল্ডার সান।

-পূর্ব জন্মের বাতেলা দিচ্ছেন? পুলিশ ডাকব?

-এ জন্যেই প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যাই। এই আমি আর স্পীকটি নট।

-না না। বলে যান। আমার হাতে সময় আছে। বোর হচ্ছিলাম। আনন্দবাজারও খতম। আপনার গুলতানিই শুনি।

-আহঃ, আমি তো আর জোর করে বিশ্বাস করতে বলছি না।

-কত নম্বর রিবার্থ?

-রি...? না না, ডাইরেক্ট বেঁচে রয়েছি।

-তা, এদ্দিন বাঁচলেন কী করে?

-বর। অমরত্বের।

-অমর? আপনি কী...?

-পবনপুত্র।

-লেজ?

-মধ্যযুগে ছাঁটিয়ে নিয়েছি।

-ছাঁটিয়ে নিয়েছেন?

-কমম্পলেক্স সার্জারি মশাই। সে যুগের মেডিসিন যে কোথায় দাঁড়য়েছিল; জাস্ট ভাবা যায় না।

-ধুর।

-কেন? ধুর কেন?

-এ চেহারায় গন্ধমাদন তুলেছিলেন?

-এ'কয় হাজার বয়েসে ফ্লেক্সিবিলিটি কমেছে। শরীর শুকিয়ে এসেছে। আরে মশাই, অমরত্বের চেয়ে বড় অভিশাপ কিছু হয় না।

-এসব আমায় বলছেন কেন? হাততালি এক্সপেক্ট করছেন?

-বলেছি আপনি বিশ্বাস করবেন না বলে। সবাইকে সে বিশ্বাসেই বলি। এই কথা কেউ পাত্তা দেবে না বলে। অবশ্য এ অন্ধকার যুগে পাত্তা দিলেই মুশকিল হত। আমায় এরা ইন্ডাস্ট্রি করে ছাড়ত।

-স্মার্ট।

-হে হে।

-তা সে যুগের সাথে এ যুগের তফাৎ কী কী নজরে পড়ে?

-সবই তো চেঞ্জড।

-রিয়েলি? এমন কিছুই নেই যা সে যুগে এ যুগে একই রয়ে গেছে?

-আছে। একটা জিনিষ আছে।

-কী জিনিষ সেটা হনুবাবু?

-একটা স্পেশ্যাল ফ্র‍্যাগ্রর‍্যান্স এখনও টিকে আছে।

-ফ্র‍্যাগর‍্যান্স? সে যুগ থেকে এ যুগে? কীসের?

-বিশল্যকরণীর। এগজ্যাক্ট সেই সুবাস।

-বলেন কী! বিশল্যকরণীর সুবাস এ যুগে? সুবাস অফ প্যানাকিয়া?

-রাইট।

-এ যুগের কীসের সুবাস বিশল্যকরণীরর মত শুনি!

-প্রথম সে গন্ধ নাকে আসায় আমিও চমৎকৃত হয়েছিলাম। অবিকল বিশল্যকরণী... এত দিন পর।

-মডার্ন সোসাইটির কীসে আপনি বিশল্যকরণীর ফ্র‍্যাগর‍্যান্স পেলেন দাদা?

-বলি?

-তাই তো জিজ্ঞেস করছি।

-সেই সর্বরোগনাশা সুবাস; ঠিক যেন ফ্রেশলি পিকড ফ্রম গন্ধমাদন।

-আরে কীসে?

-বোরোলিনে।

Comments

debalina said…
Modhyo raater mridu hasyo...eki roye gechhe
Anonymous said…
:D :D daarunn

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু