Monday, September 14, 2015

বাবারা


- বাবা হবি?



- ইন ফিউ মান্থস।

- রেডি?

- একদম। প্যারেন্টিংয়ের ওপর খানতিনেক বই অলরেডি পড়ে ফেলেছি।

- বইতে পারফেক্টলি মলাট দিতে শিখেছিস?

- মলাট?


- সেনসিটিভ বাবাদের এসেনশিয়াল কোয়ালিটিগুলোর একটা।


- বইয়ে মলাট দেওয়া?


- অফ কোর্স। 


- রিমি ভালো মলাট দেয়। ও সামলে নেবে।


- নো। স্পার্ম যার মলাট তার। মায়েরা মলাট দেওয়া বইতে বিউটিফুলি লেবেল সেঁটে ছেলে বা মেয়ের নাম ক্লাস সাবজেক্ট লিখবে।


- কোন শাস্ত্রে বলা আছে? 


- মামাকে চ্যালেঞ্জ করছিস?


- তোমায় তো কোনদিন মলাট দিতে দেখলাম না। তোমার ছেলেরা তো দিব্যি বেরিয়ে গেল স্কুল ডিঙিয়ে।


- আমি সেনসিটিভ বাবা নই। প্র‍্যাক্টিকাল বাবা।


- প্র‍্যাক্টিকাল বাবারা বইয়ে মলাট দেয় না? 


- না, প্র‍্যাক্টিকাল বাবাদের প্যারেন্টিং মোটো হচ্ছে ম্যানেজ ইওর ওউন হ্যাপা।


- আমায় তাহলে প্র‍্যাক্টিকাল বাবা না হয়ে সেনসিটিভ বাবা হতে বলছ কেন? 


- কারণ তোর নেচার সেনসিটিভ বাপ হওয়ার জন্য টেলর-মেড।


- হাউ? 


- তোর গুপী গাইন বাঘা বাইন বেশি ভালো লাগে, তুই তাই সেনসিটিভ বাপের ট্র‍্যাজেক্টরিতে আছিস। আমি হীরক রাজার দেশের ফেভারে। আমি প্র‍্যাক্টিকাল বাপ।


- এটা তোমার থাম্বরুল?


- একদম।


- আর যে বাপ গুপী বাঘা ফিরে এলো প্রেফার করে?


- সে বাপ সব সাবজেক্টে স্পুন ফীড করিয়ে ফৌত হবে। 


- তোমার থিওরি মামা, বলিহারি।


- মামাকে চিনে রাখ এই বেলা। ওহ বাই দি বাই; কঙ্গ্রাচুলেশন্স।

মা আসছেন

-হাওয়ায় একটা ইয়ে টের পাচ্ছেন?


- ইয়ে?

- একটা শারদীয় ফিল আর কী।

- আছে না কি?

- অফকোর্স, মিহি ইয়ে একটা। রোদ্দুর কম্ফর্টেবল হয়ে আসছে। 

- ও।
- একটা এক্সাইটমেন্ট অনুভব করতে পারছি।

- এক্সাইটমেন্ট?

- মা আসছেন। মন ভালো হয়ে যাবে না?

- মা আসছেন?

- অক্টোবরের কুড়ি থেকে সপ্তমী। আসছেন তো বটেই।

- আই সি, আপনার মা আসছেন।ওল্ড এজ হোম কি পুজোর ক'দিন বন্ধ-টন্ধ থাকে নাকি?

ওল্ড মঙ্ক


- ওল্ড মঙ্ক? আহা। নিপাট স্নেহ। আমারও ওটাই চলে।


- এভ্রি স্যাটারডে চলে নাকি?

- এভ্রি।

- বেশ রসিক লোক তো আপনি।

- ট্র্যাডিশন স্যার। 

- কোকের সাথে?

- কোকের সাথে। সেটাই তো রিয়েল কম্বিনেশন।

- ভালোই। সাদা মদ আবার আমার চলে না।

- তাই তো। সাদা আবার মদ। মুর্গী আবার মাংস। 

- এগজ্যাক্টলি। আপনার সাথে আলাপ হয়ে ভালো লাগলো। তাহলে আজকের আসর একসাথেই বসুক? 

- বসুক।

- আনুন। 

- কী আনব?

- বোতল।

- কীসের?

- ওল্ড মঙ্কের।

- ওই তো। তাকে। 

- তাহলে নামান। 

- বোতলটা তো নামাই না স্যার। 

- বোতল নামান না? এই যে বললে হপ্তায় প্রতি শনিবার ওল্ড মঙ্ক উইথ কোক চলে।

- ওহ। আচ্ছা। আমার বাপ ওল্ড মঙ্কেই গেস্‌লেন, বুঝলেন? ওইটে দেখছেন, বাবার শেষ ওল্ড মঙ্কের বোতল। মালে যে কী হাল হয়, তার স্যুভেনির হিসেবে রেখে দিয়েছি। বাবার থেকে পাওয়া; স্মৃতি অ্যান্ড ওয়ার্নিং; দু'টোই। মার থেকে অন্য মঙ্ক ইনহেরিট করেছি। এই হারমোনিয়ামটা। মায়ের বাবার; উনি ছিলেন টপ্পা গাইয়ে। রিডে আঙুল না রেখে ব্লো করলে নাকি মা এর থেকে দাদুর বুকের ধুকপুক শুনতে পেতেন। আমিও পাই। 

- হোয়াট আজগুবি স্টাফ্‌।

- ভালোবাসা। আজগুবি কিছু তো নয়। এভ্রি স্যাটারডে ইভনিংয়ে এই হারমোনিয়াম নিয়ে বসি। বাবার স্মৃতি ঘাঁটতে ওই শেলফে রাখা বোতলের দিকে তাকাই। মনে অল্প নেশা তৈরি হয়। মায়ের স্মৃতির এই হারমোনিয়ামে তুলি রজনীকান্ত। নেশা স্কেল আপ করে। সাথে এই গেলাসে কোক্‌। ওল্ড মঙ্কদের সাথে কোক্‌ মিশলে গজল তৈরি হয়। আর ওই দেখুন একটা বাটিতে মুড়ি নকুলদানা আর অন্য বাটিতে আলুভাজা। এলাহি। না?

ডজনিয়

- আপনার প্রেমে পড়ার গল্প শুনি।

- বড় বেশি স্ট্রেট লাইনে, বড্ড ইউসুয়াল।

- শুনি।

- অ্যাম আ ব্যাড স্টোরি টেলার।

- বাজে গল্প বলে, এমন প্রেমিক আছে?

- কম প্রশ্ন করে, এমন প্রেমিকা আছে?

- সে কী? এখনও খুঁজছেন?

- কী?

- এখনও প্রেমিকা খুঁজছেন? আরও প্রেমিকার প্রয়োজন?

- নাহ, প্রেমের গল্প খুঁজছি, যেমন আপনি খুঁজছেন।

- বেশ, বলতে শুরু করুন।

- একটা কাজ করি; আপনাকে একটা নতুন প্রেমের গল্প বলি, মাত্র বারো লাইনের - কেমন?

Sunday, September 13, 2015

গল্প শেষের টেকনিক্‌


- গল্প, বিশেষত ছোট গল্প। বেশি এক্সপ্লেইন করতে যাস কেন? 



- আসলে সবাই তো...।



- ইন্টারপ্রিটেশন পালটে যায়? গুলিয়ে যায়? লেট্‌ ইট গো। খেলতে দে পাঠক কে। ট্রাস্ট ইওর রীডার্স।



- বলছ?



- ইন্‌সিস্ট করছি। 



- বেশ মাথায় থাকবে।



- বেশি এলাবোরেশনে গল্প নষ্ট করে। ধর...আমি যদি একটা প্লট হই।



- তুমি?



- আমার দিকে তাকা। আমার চোখের দিকে তাকা।



- হিপনোটাইজ-ঠাইজ করবে নাকি?



- সিরিয়াস হ। লুক ইন্‌টু মাই আইজ। 



- বেশ। ফোকাস করছি।



- ধর আমি একটা খুনের গল্প। তুই ফোকাস করছিস আমার চোখে কারণ তুই সাস্পেক্ট করছিস আমার খুনের মতলব আছে। কারণ তুই আমার থেকে সে'টা এক্সপেক্ট করিস। তুই আমার চোখ অ্যানালিসিস করে আমার মতলব ঠাহর করতে চাইছিস। বুঝতে চাইছিস আমার টার্গেট কে।



- বেশ।



- কিন্তু এখানেই আমি তোকে খেলাচ্ছি। 



- পাঠককে?



- ঠিক। পাঠক হিসেবে তুই সেকেন্ড ক্যারেক্টার এক্সপেক্ট করছিস।



- অফকোর্স, যে খুন হবে...। 



- ডু। নট। এলাবারেট। 



- সরি। বেশ। দেন?



- তুই এখনও আমার চোখে। লোকটাকে খুঁজে চলেছিস। তোর মন কন্সট্রাক্ট সাজাচ্ছে। সাবজেক্টকে তুই দেখছিস। এবার আগে অব্‌জেক্ট অ্যাপিয়ার করবে। তারপর মেথড ক্লিয়ার হবে।



- প্রিসাইস্‌লি। 



- হঠাৎ তোর বুকের বাঁ দিকটা ভিজে গেল।



- অমুদা...।


- ফাইনালি বুঝে নে মেথডটা। তোর কানে ধাঁধা লাগাল কেন, সে'টা এলাবোরেট করতে গেলেই আমি বাড়াবাড়ি করে ফেলতাম। চোখে খেলালাম তোর চোখ; সেটাই গল্প। এবার তোর মগজকে খোলা মাঠে স্পোর্টস শ্যু পরিয়ে ছেড়ে দিলাম। প্র্যাক্টিকাল ডেমোন্সট্রেশন যত যন্ত্রণার হয়, লার্নিং ততটা বেশি- ও নিয়ে ভাবিস না। কেমন? চলি।

Friday, September 11, 2015

কাঁচের গেলাস

টেবিলে গলা পর্যন্ত ভরা কাঁচের গেলাসটা দেখেই বুকে তৃপ্তি নেমে এল মিলারের আহবড় তেষ্টা পেয়েছিল ঢকঢক করে জলটা খেয়ে নিলে সে ভ্যাঁপসা গরম ফ্যানের হাওয়া গায়ে লাগছে না গায়ের স্যান্ডো গেঞ্জিও ঘামে ভিজে কিন্তু খালি গায়ে থাকার অভ্যাস নেই তার ইজিচেয়ারটায় বসে থাকতে ভালো লাগে  জানালা বন্ধ রাখতে ভালো লাগে রাস্তা থেকে যেটুকু আওয়াজ বন্ধ জানালা চুইয়ে ঘরের ভেতর এসে পড়েতাদের তফাতে মিলার সকালের থেকে বিকেলবিকেলের থেকে সন্ধ্যা আর সন্ধ্যার থেকে রাত চিনে নেয়


এখন একটানা বই পড়তে খারাপ লাগে মিলারে বেখাপ্পা লাগে কবিতাগল্পউপন্যাস সে খবরের কাগজ পড়ে আটটা খবরের কাগজ আর পড়ে দেওয়াল লিখন দেওয়াল তারলেখাও তার কারুর সঙ্গেই প্রায় আজকাল কথা হয় না মা,  বাবাপিসিরিটা বা মার্ক এসে মাঝে মাঝে দেওয়ালে লেখা রেখে যায়; "কেমন আছগোছের কথাবার্তা মিলারও লিখে উত্তর দেয় দেওয়ালে দেওয়াল ঘিঞ্জি হয়ে আসে মিলার লেখার কালি পাল্টে ফেলে দেওয়াল কালচে হয়ে এলে সাদা কালিতার কিছুদিনের মাথায় সাদা কালি


দেওয়ালের দিকে খানিকক্ষণ  তাকিয়ে থাকতে থাকতে সে বুঝতে পারে মাথাটা ঝিম্‌ মেরে আসছে বড্ড গরম আজকাল ফ্যানের হাওয়াটা গায়ে লাগে না গায়ের স্যান্ডো গেঞ্জিও ঘামে ভিজে যাচ্ছে বড় তেষ্টা পায় বড় অথচ এরা জল এত কম দেয় এক গেলাস জল পেলে যে কী ভালো হত


ঠিক তখনই টেবিলে গলা পর্যন্ত ভরা কাঁচের গেলাসটা দেখেই বুকে তৃপ্তি নেমে এল মিলারের আহতৃপ্তি ঢকঢক করে জলটা খেয়ে নিলে সে


তখনই ঘরে চলাফেরার শব্দ মার্ক এসেছে দেওয়ালে মন দিল মিলার হাতে নিলে পেন্ট ব্রাশ


কেমন আছ মিলার?

অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন

তুমি কি বুঝতে পারছ যে তুমি বার বার খালি গেলাসে চুমুক দিচ্ছ?

তুমি আর তোমার রিয়ালিজ্মের ভাঁওতা মার্ক

ভাঁওতামিলার তুমি  খালি গেলাসে বারবার চুমুক দিয়ে চলেছ

আমার তেষ্টা মিটছে অথচ তোমার সেন্স অফ রিয়ালিটিতে আঘাত লাগছে আমাকে আমার মত নিশ্চিন্তে থাকতে দাও না

তোমার সাইকিয়াট্রিস্টরাও তোমাকে নিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়ছেন মিলার তোমার সহযোগিতা দরকার

তোমাদের রিয়ালিটি মানছি না বলে?

গোটা পৃথিবীর মানুষের রিয়ালিটি নিয়ে সওয়াল তুলছ?

না তোমারা আমার রিয়ালিটি নিয়ে সওয়াল তুলছ এবং বিশ্বাস করছ যে তোমরা অসংখ্য আর আমি একা তাই তোমাদের রিয়ালিটি অভ্রান্ত দ্যাট্ সিলি মার্ক

জল খাবে?

খেয়েছি পরপর দু গেলাস গোটা দিনে অন্তত কুড়ি গেলাস

এক ছিপি জলও তোমার পেটে যায়নি মিলার প্লীজ টেবিলের ওপরের গেলাসটা ফাঁকা

একদিন আমার রিয়ালিটি বিক্রি হবে মার্ক এটাই একদিন সত্যি হবে লোকে পাগলের মত সেই গেলাসে চুমুক দেবে যেটা তোমার মতে খালি অথচ লোকে তৃপ্ত হবে

দেওয়ালে লিখে কথা বলতে হবে লোকজনের সাথে সেদিন তাই না মিলারএই যেমন তোমার সাথে আমি কথা বলছি?

হে তাই হবে হয়তো অন্য রিয়ালিটি যাকে আজ তুমি মেনে নিতে অস্বীকার করছসেই রিয়ালিটি একদিন বিক্রি হবে মার্ক ইট উইল সেল্ আমি তোমার সুযোগ দিচ্ছি আমার এই রিয়ালিটি কে বিজনেস আইডিয়া করে দুনিয়া এফোঁড় ওফোঁড় করে দেওয়ার টেক ইট অর লিভ মি অ্যালোন উইথ ইট

তুমি আমার বন্ধু তোমার সত্যি কথাটা ঠুসে বলাটা আমার দায়িত্ব মিস্টার মিলার ব্রাউন তুমি উন্মাদ

অফ কোর্সতুমিও বন্ধু আমার উন্মাদনা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে নতুন দিগন্ত খুলে দেওয়ার সুযোগ আছে সে সুযোগ নেওয়ার দম তোমার আছে মার্ক?