তিনবার কলিংবেল বাজানোর পর দরজা খুলে দাঁড়ালেন এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক। মাঝারি হাইট, শ্যামবর্ণ, বুদ্ধিদীপ্ত ভালোমানুষ চেহারা, গালে খোঁচা দাড়ি, পরনে নীল হাফ শার্ট আর সাদা পাজামা। নিশ্চিন্ত হলাম, সঠিক বাড়ি। ভদ্রলোক স্বাভাবিকভাবেই আমায় দেখে হকচকিয়ে গেলেন। আমি চট করে কাজের কথা পেড়ে বসলাম।
- বসন্ত, প্লীজ দরজা বন্ধ করবেন না।
- আপ..আপনি..।
- বুঝতে পারছি অবাক হচ্ছেন কিন্তু..।
- কী বিশ্রী ধরণের রসিকতা....।
- রসিকতা যে নয় সে'টা বুঝতেই পারছেন। এ'টা তো আর মেকআপ নয়..।
- আপনি..আপনি..।
- আমায় আবার আপনি আজ্ঞে করা কেন। অবশ্য সেল্ফরেস্পেক্টের ব্যাপারটাও আছে। বেশ, আপনিই থাক।
- আপনি!
- ঠিকই ধরেছেন বসন্ত। আমিই আপনি। আপনিই..।
- আমি! কী সর্বনাশ! অবিকল চেহারা! এমন কী নীল জামাটাও..।
- একই তো জামা। একটাই তো আমি ও আপনি। এ'বারে বেরিয়ে আসুন।
- আমি..আমি বেরিয়ে আসব কেন? আপনি যদি আমিই তা'হলে আপনি এলেন কেন..আমার কেমন মাথা গুলোচ্ছে।
- মাথাটা আপনার সত্যিই গেছে বসন্ত; লিটারেলি এবং ফিগারেটিভলি। দোষ দেওয়া যায় না। তবে এ'বার আপনাকে বেরিয়ে আসতেই হবে।
- ক..কিন্তু কেন?
- বাহ্। এক টুকরো বসন্ত বাড়ির মধ্যে বসে থাকলে অর্ধেক আত্মা আমি ওই দিকে ফিরে যাবো কী করে।
- অ। কিন্তু আমি তো কিছুই..।
- দু'ঘণ্টা আগে একটা মোটোর অ্যাক্সিডেন্টেই ব্যাপারটা হয়ে গেলো যে..আমি সোজাই চলে যেতাম অন্য দিকে কিন্তু মনটা ছাই অর্ধেকটা তো রোজ বাড়িতেই ফেলে আই। ঘরকুনো মানুষের যা সমস্যা আর কী। মনের একখাবলা অংশ হামেশা বাড়ির সোফাতেই শুয়ে থাকে। তাই তো ডেকে নিতে এলাম। চলুন দেখি, গোলমাল পাকানোর আগে বেরিয়ে আসুন। ও'দিকে হাফসোলদের প্রসেসিং হয় না শুনেছি। চলে আসুন বসন্ত।
- বেরোব?
- বেরোতেই হবে। তাজা তাজা ও'দিকে যেতে পারলেই মঙ্গল।
- বিকেলের দিক বেরোলে হত না ভাই? দুপুরটা অন্তত একটু গড়িয়ে নিতাম..।
No comments:
Post a Comment