Wednesday, December 31, 2014

রিজোলিউশন ২০১৫


-  

ভাবছি এবার একটা রোম্যান্টিক নভেল লিখবো। ওইটেই আগামী বছরের রিজোলিউশন হিসেবে রেখেছি মশায়। কলকাতার বুকেই ফাঁদবো। ছাপোষা ছেলে। রহিস বাপের মেয়ে। সিনেম্যাটিক। কোনও ডিরেক্টরের নজরে পড়লে একটা হিল্লে হয়ে যেতে পারে। আপনি কিছু রিজোলিউশনের কথা ভাবছেন না কী? পনেরোর জন্য?


-   চোদ্দয় যে রিজোলিউশনটা রেখেছিলাম, সেটা মনে আছে কী?

Friday, December 26, 2014

দাঁত ইঁদুর

-তুই আমার সাথে কথা বলবি না বিট্টু?
-না।
-এত রাগ?
-হ্যাঁ।
-এত সাধ করে কথা বলছি তোর সাথে, তবু তুই মুখ গোমড়া করে বসে থাকবি?
-সাধ করে না ছাই। ধরা পড়ে গিয়ে এখন অন্য কথা বলা হচ্ছে।
-আচ্ছা বাবা, না হয় ধরা পড়েই গেছি। কিন্তু তাই বলে তুই নিজের মায়ের ওপর এত রাগ করবি?
-রাগ করবো না? সেই আমি কবে থেকে ভেবে যাচ্ছি যে ইঁদুরটা আসলে...
-যে ইঁদুর আসলে সত্যি এসে তোর পড়ে যাওয়া দাঁত নিয়ে যায়, তুই সত্যি এটা বিশ্বাস করতিস বিট্টু?
-কেন করব না? স্পষ্ট রাখতাম বালিশের নিচে। তারপর রাতে দে ঘুম। সকাল বেলা উঠে দেখতাম বালিশের তলায় রাখা দাঁত হাওয়া। আর তার বদলে পড়ে রয়েছে হয় এক মুঠো চকোলেট নয়তো অন্য কোন শুকনো মিষ্টি। কাউকে না জানিয়ে পুরোটা খেয়ে নেওয়া। কী আনন্দ পেতা ভেবে যে ইঁদুর ব্যাটা দাঁত নিয়ে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে আর তার বদলে মেঠাই রেখে যাচ্ছে। কী দারুণ আনন্দ। আর আজ দুম করে এসে তুমি বলছ কোন ইঁদুর-টিদুর নেই। সবটুকুই তুমি করতে।

Wednesday, December 24, 2014

ছোট খবর




একটা দেওয়াল জোড়া বিশাল ক্যানভাস। বিশাল। ক্যানভাসটার বুকের মাঝখানে এক ঝাঁক বেলুনের ছবি। লাল, সবুজ, বেগুনী; আরও কত রঙ। ব্যাকগ্রাউন্ডে ঝকঝকে আকাশের ছবি। ক্যানভাসের এক প্রান্তে মিকি মাউসের হাসি হাসি মুখ আঁকা। তাতে স্নেহ মিশ্রিত দুষ্টুমি মাখানো। ক্যানভাসটা খুব বড় তো। তাই আরও অনেক রঙিন ছবি তাতে মিশিয়ে দেওয়া। দু’টো ডাগর সূর্যমুখীর টলমল করছে ক্যানভাসটার নিচের বাঁ দিকে। ভালোবাসার চিহ্ন ছড়িয়ে ক্যানভাস জুড়ে। দোলনার স্কেচ, প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম-প্রেম-আদুরে ছবি। একতারা দুলিয়ে বেড়ানো বাউল।

ক্যানভাসটা যেন হাসিতে ছলছল করছে। মন ভালো হয়ে আসছে। ইন্দ্রিয়ে স্পার্ক আসছে, খুশি আর স্বস্তির। মন এতটাই ভালো হয়ে আসছে যে ছোট্ট চীনেবাদামের চেয়েও কম গুরুত্বপূর্ণ, হালকা আগুনে রক্তমাখা ক্যারিকেচারটা আদৌ নজরে আসছে না। নজরে আসলেও মগজে আসছে না, মগজে যদি চলেও আসে হৃদয় স্পর্শ করছে না। হৃদয় টোকা মারলেও আধুনিক হৃদয় তা পাত্তা দিচ্ছে না। তেমনটাই হওয়ার কথা। অন্তত তেমন মেজাজেই আমাদের হেলতে দুলতে এগিয়ে যাওয়া।

Sunday, December 21, 2014

আই-এস-এল, আনন্দ আর শেষের কথাটা



অ্যাটলেটিকো ডি কোলকাতার আই-এস-এল জয় টিভিতে দেখার পর যথেষ্ট ফুর্তি করলাম। মৃদু লাফালাফি সহ। আনন্দ। হাই ফাইভ। থামস আপের ছিপি খোলা।  
তক্ষুনি। মনে হল।
ক্রিকেট তো আমাদের ধর্ম। ক্রিকেট যদি সূর্য হয়, ভারতীয় ফুটবল তো তাঁর তুলনায় ডেসিমাল। ফুটবল কেন?
নিজেকে বললাম- পৃথিবী ক্রিকেটের আগে ফুটবলকে মানে। মারাদোনা পেলেকে ক’জন চেনে আর গাওস্কর-বিশ্বনাথকে ক’জন চেনে? শুধু কপিলে-বেদীতে আটকে থাকবো কেন? রইবো না বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগতটাকে।
জগত চিনে কী করবো?
গ্লোবালাইজেশনের যুগ। দ্রাবিড় যেমন আমার হিরো, তেমনই আমার হিরো মেসি।
মেসিকে চিনে কী হবে?

Friday, December 19, 2014

চেকলিস্ট

-   কই হে খাজাঞ্চী, এবার শেষ হিসেবটা মিলিয়ে নি। দেখ। আমি লিস্টি ধরে বলে যাচ্ছি। তুমি টিক মেরে যেও। কেমন?
-   যে আজ্ঞে।
-   জল দিয়েছি?
-   দিয়েছেন আজ্ঞে। টিক।
-   বাতাস দিয়েছি?
-   দিয়েছেন আজ্ঞে। টিক।
-   বাঃ। মাটি? মাটি দিয়েছি?
-   দিয়েছেন আজ্ঞে। টিক।

ঠাণ্ডা কই?

ঠাণ্ডা পড়ছে না।

হাফ সোয়েটারও দিনভর গায়ে রাখা যাচ্ছে না।
মাঝে মাঝে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে জিভ কাটা থামানো যাচ্ছে না।

Wednesday, December 17, 2014

লজ্জা



এই একদিন স্কুলে গেলাম। স্কুল বাসে। পিঠে ব্যাগ। ব্যাগে বই। খাতা। অসম্পূর্ণ হোম-ওয়ার্ক। ক্লাস টেস্টের মৃদু ভয়। সাদা জামা, নীলচে কালো প্যান্ট। টিফিনে চিড়ের পোলাও, সাথে একটা মিষ্টি। দেবরাজ, সৌরভদের সাথে টিফিনে ক্রিকেট। হা হা হি হি। গ্রামার ভুল করায় সুব্রত স্যারের কাছে রাম-বকুনি। সব ঠিক। শুধু ফেরার সময় স্কুল বাসের বদলে অ্যাম্বুলেন্স। অবশ্য অ্যাম্বুলেন্সের আর কোনও প্রয়োজন ছিল না। ক্লাস সেভেনের ছেলে এমনিতে যতই বিচ্ছু হোক, মাথায় বুলেট খেয়ে তো সে আর তম্বী করতে পারে না।