
-“পচা, ঘুমাইতাসিলি নাকি?”, ভোর পৌনে ছটার সময় বিনু-মামার ফোন।
-“হুম, কি ব্যাপার?”
-“কইতাসি কি, তর কাসে একখান শান্তিনিকেতনী ঝোলা হইবো?”
-“শান্তিনিকেতনী ঝোলা? মা’র আছে মনে হয় একটা পুরনো, তবে ময়লা হয়ে আছে বোধ হয়, কেন?”
-“ময়লা হইলে তো আরো ভালো, আর হ্যাঁ,আরেক খান জিনিষের দরকার আছিলো”
-“আবার কি?”
-“চারমিনার”
-“চারমিনার? মার্লবোরো ছেড়ে চারমিনার? তোমার হয়েছেটা কি?”
_ “ চোপ, চিতকার করস ক্যান! চারমিনার ভুইলা যা। ঝোলাখান রেডি রাখিস। বিকেল চারটেতে আসুম”
বিকেল চারটে বাজবার পাঁচ মিনিট আগেই বিনু-মামা হাজির। বিনু-মামা বাঙাল ভাষায় পাবলিক হড়কালেও কেতাদুরুস্ত মানুষ। ইস্তিরি করা ছিম-ছাম শার্ট-ট্রাউসার এবং পালিশ মারা বুট-জুতো না পরে বাড়ি বাইরে ঘুরতে যায় না। বলে বেরান যে “আমার মন্তর হইল গিয়া বি ক্লীন শেভেন”।সুগন্ধি আফটার-সেভ লোশনে আসক্তি আছে। মার্লবোরো ছাড়া সিগারেট মানেই বিনু-মামার ভাষায় বিড়ি। এহেন বিনু-মামার আজ এ কি চেহারা?
চুল উস্কো-খুস্কো!দু-তিন দিনের না কমানো দাড়ি। শার্ট’এর বদলে আজ গায়ে ছাপানো বেমানান রঙ ওঠা ফতুয়া, নীচে বিবর্ণ ঢোলা পায়জামা!পায়ে পালিশ করা জুতোর বদলে পুরনো শ্রী-লেদার্স’এর আধ-ফাটা চটি। এবং সর্বোপরি আঙ্গুলের ফাঁকে জ্বলন্ত ফিল্টার-লেস সিগারেট!
-“কই? শান্তিনিকেতনী ঝোলা খান কই?”
ঝোলা-চোয়াল নিয়ে বিনু-মামা কে এগিয়ে দিলাম ঝোলা টা!
-“এ কি? ঝোলা খান পরিষ্কার ক্যান? তুই না কইছিলিস ঝোলা খান ময়লা?”
-“হ্যাঁ, ছিলো। তুমি নেবে শুনে মা ধুয়ে দিয়েছে দুপুরবেলা”
-“ধুয়ে দিছে? ছ্যা! কে যে তগো পাঁকামি করতে কয়! পরিষ্কার ঝোলা কোন কামে লাগে?”
-“তোমার কি হয়েছে বলো তো বিনু-মামা? এই পাগলের মত চেহারা-পোশাক। এই চারমিনার। নোংরা-ঝোলা, এসব নিয়ে করছোটা কি? ছদ্মবেশ নাকি?”
-“ধুর! ছদ্মবেশ কেন হইবো রে পাগলা?এই হইল গিয়া ইউনিফর্ম”
-“ইউনিফর্ম? কিসের ইউনিফর্ম?”
-“কলকাতা ফিল্ম-ফেস্টিভ্যালের পাস জোগাড় করসি, নন্দন যাইতে হইবো। একে নন্দন, তাইতে ফিল্ম-ফেস্টিভ্যাল। গরু-ছাগল তো আর যাইতে পারে না। কাজেই এই হালার ইণ্টেলেকচুয়াল-ইউনিফর্ম ছাড়া ফেস্টিভ্যালের ক্লাসিক ফিল্ম-গুলান দ্যাখতে যাই ক্যামনে ক দেখি তুই”
Comments
and I was thinking of catching a flick or two. jhola chhaara to hobey naa. LOL!