Skip to main content

শুদ্ধ বাংলা বিশুদ্ধ বাংলা


প্রশ্ন: শুদ্ধ কি প্রকারে শুদ্ধতর হয় ? বাহ্যিক পরিবর্তন ছাড়াও সমূহ ব্যবহারিক পরিবর্তন কি ভাবে সম্ভব? দশটি উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো
উত্তর: শুদ্ধ হতে শুদ্ধতর হওয়া এবং বাহ্যিক পরিবর্তন ছাড়া ব্যবহারিক পরিবর্তনের যে পদ্ধতিটি, তার উত্তম প্রয়োগ-দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পারি আমাদেরই আপন মাতৃভাষায়
অতএব, বঙ্গ-ভান্ডার চষে দশ খানি বিবিধ-রতন নীচে লিপি-বদ্ধ করা হলো:
শব্দ ১- ব্যাপক:
প্রাচীন ব্যবহার : কলিকাতা শহরে ওলাউঠার প্রাদুর্ভাবে ব্যাপক হারে মানুষ মরিতে লাগিলো
আধুনিক ব্যবহার: ব্যাপক মেয়ে, সাধু ভাষায় যাকে বলে ডানা লেস পরি
শব্দ ২- আগুন:
প্রাচীন ব্যবহার : এত বেলা হয়ে গ্যাল এখনো উনুনে আগুন পড়ল না রে মুখপুড়ির দল?”
আধুনিক ব্যবহার: হোয়াট আ কভার ড্রাইভ, আগুন শট, জিও দাদা
শব্দ ৩- গুরু:
প্রাচীন ব্যবহার : তুমি গুরু তুমি রাম, তুমি ভগবান, তোমারি লগিয়া তাই কাঁদে মোর প্রাণ
আধুনিক ব্যবহার : ভ্যানতারা না মেরে একটা সিগারেট দাও দেখি গুরু


শব্দ ৪- প্রেম:

প্রাচীন ব্যবহার: যদি প্রেম দিলে না প্রাণে...
আধুনিক ব্যবহার: আরে এ কোনও কঠিন কাজই নয়, প্রেমসে হয়ে যাবে
শব্দ ৫- পাগলা:
প্রাচীন ব্যবহার: “ পাগলা ভাই আমার, তুই ভারী দুষ্টু হয়েছিস আজকাল”
আধুনিক ব্যবহার: “ পাগলা চূলকে নে”
শব্দ ৬- বোকা
প্রাচীন ব্যবহার: “এই সহজ ব্যাপারটা বুঝলে না, তুমি তো আচ্ছা বোকা হে?”
আধুনিক ব্যবহার: এই পাতি ব্যাপারটা বুঝলে না, তুমি তো আচ্ছা বোকা#$ হে?”
শব্দ ৭- বাংলা
প্রাচীন ব্যবহার: বাংলা আমার দৃপ্ত স্লোগান…. ইত্যাদি ইত্যাদি”
আধুনিক ব্যবহার: “মৌত হোগা তো একলা / মদ হোগা তো বাংলা
শব্দ ৮- মাল
প্রাচীন ব্যবহার: “মাল-পত্তর গুলো সব ঠিক-ঠাক গুছিয়ে নিও বাবাজী, কেমন?”
আধুনিক ব্যবহার: “উফ্ফ, কি মাল মাইরি, এক পলকেই ক্যাপচার করে নিয়েছি ৩৬-৩২-৩৬”
শব্দ ৯- তোলা
প্রাচীন ব্যবহার: এই বয়েসে এতটা দায়িত্ব কাঁধে তোলা কি চাট্টি-খানি কথা”
আধুনিক ব্যবহার: “এই বয়সে এত গুলো মেয়ে তোলা কি চাট্টি খানি কথা”
শব্দ ১০- ছড়ানো
প্রাচীন ব্যবহার: “ দানা ছড়িয়ে দিন, দেখবেন খুঁটে খাওয়ার লোকের অভাব হবে না”
আধুনিক ব্যবহার: “ তখন থেকে কি গ্যাঁজ-গপ্প করে যাচ্ছো? ছড়ানো বন্ধ করো”

Comments

Abhishek said…
Oshadhornon lekha hoyeche guru. Ei 10tar modhe - byapok, guru aar maal er prochur "istemal" kori aami...aar loke aamar jon-no boka (ba kokhono boka aar arekti shobdo) majhe moddhei bole phale....
Byapok :)

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু