Skip to main content

বিক্রম বেতাল


- দাদা।
- বিক্রম? আয়।
- কাজ হয়ে গেছে।
- লাশ?
- অ্যাসিড। তারপরে নদী।
- আশেপাশে?
- কেউ ছিল না। ডবল শিওর।
- গুড।
- দাদা।
- আবার কী। টাকা পাসনি?
- পুরোটাই অ্যাডভান্সে।
- তবে?
- না মানে...।
- আর কী?
- এক পেগ, হবে? আসলে এ'সব কাজের পর কেমন...।
- নার্ভাস?
- ছিঃছিঃ, তা না। তবে ওই, কেমন একটা।
- সোডা?
- শুধু জল।
- নে।
- আহ্। বাঁচালে।
- তাড়াহুড়ো কেন?
- না...এমনি।
- তাই বলে বটমস আপ?
- প্যালপিটেশন হচ্ছিল যেন। ইয়ে, হবে? আর এক পেগ?
- হবে।
- থ্যাঙ্কস।
- বিক্রম। এরপর কিন্তু আর এক পেগও নয়। কাল আবার নতুন করে কাজে নামতে হবে।
- কাল? আবার?
- উপায় নেই। থামার উপায় নেই বিক্রম।
- দাদা, আমার আর ভালো লাগছে না।
- সে কথা আগে ভাবা উচিৎ ছিল।
- তোমার দমবন্ধ হয়ে আসে না? এই বিশ্রী খেলা খেলতে?
- বিশ্রী? 
- রোজ একটা করে নতুন দেহ খুঁজে বের করে ভর করো, রোজ আমি সেই মানুষ খুঁজে খুন করি আর তারপর তুমি এখানে এসে গা এলিয়ে বসে অপেক্ষা করো আগামীকালের। নতুন দেহের।
- গা এলিয়ে বসি, নাকি? আত্মার গা?
- সরি, মানে...ওই আর কী। কিন্তু রোজ তোমায় খুন করে নতুন নতুন লাশ গায়েব করা আর তারপর এই ভূতের আস্তানায় এসে অপেক্ষা করা; কখন নতুন বডি ধরবে; কাহাতক সহ্য হবে?
- টাকা নিয়েছিস। কোনো ওপরচালাকি নয়।
- বেতালদাদা, প্লীজ। আমি আর পারছি না। আমার আর টাকার দরকার নেই।
- বেশ, শেষ খুনটা করে দে।
- তারপর?
- মুক্তি?

ছটফট করে ওঠে বিক্রম, নিজের নতুন দেহের মধ্যে তখন বেতালদাদার আত্মার পাক খাওয়া দিব্যি টের পায়। 
ফের নিজের বুকে ছুরি বেঁধানো। ফের নিজের লাশ গায়েব করা। ফের একটা মড়া বয়ে এই অন্ধকারে ফিরে আসা। রোজ রোজ নতুন শেষ খুন জমা হয়।

টাকাগুলোয় অবশ্য পরিবারটা বেঁচেছে। কিন্তু এ দুর্ভেদ্য অন্ধকার বড় অসহ্য লাগে বিক্রম গোয়েন্দার। মামুলি সিরিয়াল কিলিংয়ের কেস ভেবে বেতালের পিছনে পড়াটা মোটেও উচিৎ হয়নি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু