- শোনো!
- এই সময় ফোন করলে? অফিস থেকে ফিরতে দেরী হবে নাকি?
- কচু। আজ তাড়াতাড়ি বেরিয়েছি, কিছুক্ষণেই পৌঁছে যাব।
- তা'হলে?
- তা'হলে কী?
- ফোন করলে কেন?
- বাহ্, ফোন করতে নেই নাকি?
- কিছুক্ষণেই পৌঁছে যাবে, অকারণ ফোনের ব্যালেন্স নষ্ট।
- আজ ফোনে একটা বড়সড় রিচার্জ করেছি!
- এ মা! কেন? কী দরকার? ক'টা ফোন করতে হয় আমাদের?
- শোনো তো। সমস্ত আউটগোয়িং কল ফ্রী। যতক্ষণ খুশি।
- সমস্ত?
- সমস্ত। তিন মাসে জন্য।
- এসটিডিতেও?
- হেহ্। হ্যাঁ। মালদায়য় ফোন করলেও ফ্রী।
- তা'হলে ঠিক আছে। তুমি অফিস থেকে ফিরলে রোজ একবার মাকে ফোন করব।
- একবার, দু'বার। যতবার খুশি।
- খুব ভালো। আমার ছোটবেলার এক বন্ধু বম্বেতে থাকে। গত পুজোয় দেখা হয়েছিল। ফোন নাম্বারও দিয়েছিল। বম্বেতে কল করা যাবে? ফ্রীতে?
- আলবাত যাবে।
- দারুণ। বেশ, আমিও একটা ভালো খবর দিই।
- ভালো খবর?
- জব্বর।
- কী'রকম?
- আজ রাত্রে বাটিচচ্চড়ি রেঁধেছি। কড়া ঝাল। খেতে বসার আগে দু'টো মামলেট ভেজে নেব। বৃষ্টির অনারে।
- তোমার জবাব নেই। তবে আমি কিছু টাকা আজ নষ্ট করে ফেলেছি জানো।
- সে কী!
- এত বৃষ্টি, ঝড়ঝাপটা। তার মধ্যে অটোর লম্বা লাইন ছিল জানো। খুব লম্বা। খুউব। তারপরে আবার একটা বাস।আর তারপর আরও একটা অটো। ভেবেই গায়ে জ্বর এলো। কী যে হল, দুম করে একটা ট্যাক্সি ধরে ফেললাম। এক গাদা টাকা নষ্ট। ট্যাক্সিতে উঠে থেকে গা চড়চড় করছে।
- যা ঝাল দিয়েছি আজ বাটিচচ্চড়িতে, তোমার গা চড়চড় জাস্ট উবে যাবে, দেখো।
- আর মিনিট পনেরোর মধ্যে বাড়ি ঢুকে যাব।
- আরও একটা জব্বর খবর আছে কিন্তু।
- বোনাস জব্বর খবর?
- আরো একটা টিউশনি পেয়েছি। এ'বার থেকে মাসে দু'দিন তোমার অফিস ফেরতা ট্যাক্সি আমি স্পন্সর করব। প্লীজ।
- ট্যাক্সি স্পন্সর করার দরকার নেই, আমার অটোজোড়া আর বাস বেঁচে থাক। আমায় পয়লা বৈশাখে নীল ছাপার শাড়ি দেবে বলেছিলে, সে'টা এ'বার হোক?
- বেশ। এ মাসের মাইনে পেয়েই গড়িয়াহাট অভিযান, কেমন?
- জী জনাব।
- এ'বার ফোনটা রাখি। মামলেটের পেঁয়াজ লঙ্কা কুচিয়ে রাখতে হবে।
- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না। - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো। - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত। - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র। - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...। - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা
Comments