Skip to main content

হেস্


রুডল্ফ হেস্ নাজি পার্টির ডেপুটি ফুয়েরার পদে থাকাকালীন হিটলারের নজর এড়িয়ে একটা যুদ্ধবিমান নিয়ে জার্মানি থেকে স্কটল্যান্ড উড়ে গেছিলেন; একা। তখন যুদ্ধ তুঙ্গে, হিটলার লন্ডনে বোমাটোমা ফেলতে শুরু করেছেন। ফ্রান্স নাজিদের পকেটে। সোভিয়েত আক্রমণের  প্রস্তুতি চলছে। হেস্ বুঝেছিলেন যে জার্মানির পক্ষে দু'দিক সামাল দিয়ে বেশিদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। ল্যান্ডিংয়ের সময়ে আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় জীবনে প্রথম প্যারাশুটে ঝাঁপ দিতে হয় তাঁকে। হেস্ ভেবেছিলেন চার্চিলের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে বোঝাবেন জার্মানির সঙ্গে সমঝোতা করার জন্য; ব্রিটেন নিজের এলাকা আর নিজের উপনিবেশগুলো নিয়ে সুখে থাকুক। জার্মানি নিজের এলাকাটুকু বুঝে নেবে। চার্চিল নরম হলে জার্মানির আখেরে মঙ্গল, হেস্ তেমনটাই আঁচ করেছিলেন।

পরের দিন হেস্-য়ের পাগলামোর খবর পেয়ে হিটলার রাগের চোটে আশাপাশের মানুষজনকে চিবিয়ে খাওয়ার উপক্রম করেছিলেন। গোয়েবল দেশময় রটিয়ে দিয়েছিলেন "ও পাগল! আপদ বিদেয় হয়েছে, ভালো হয়েছে"। এ'দিকে ব্রিটেনও ব্যাপারটাকে স্রেফ ফিচলেমো মনে করে উড়িয়ে দিল। হেস্ বন্দী হলেন। তাঁর চার্চিলের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে উবে যেতে বেশিদিন লাগল না।

এক চাষি হেস্-কে প্যারাশুটে নামতে দেখেছিলেন। পরমশত্রু নাজি পার্টির ডেপুটি ফুয়েরারকে চিনতেও পেরেছিলেন।
এবং সবচেয়ে বড় কথা ব্রিটিশ সৈন্য হেস্-কে পাকড়াও করার আগে তাঁকে এক কাপ চা অফার করেছিলেন সেই চাষি। 

এত পাঁয়তারার পিছনে মূল বক্তব্য একটাই; 
কোথাও অতিথি হয়ে গেছেন আর তারপর প্রবল চায়ের তেষ্টা পেয়েছে?
গৃহকর্তা/গৃহকর্ত্রী চা বাদে যাবতীয় ভুজুংভাজুং গছিয়ে চলেছেন অথচ চায়ের প্রসঙ্গই উঠছে না?

তাঁদের রুডল্ফ হেস্ আর বিলিতি চাষির গল্প শোনান।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু