Skip to main content

বল্টের প্রশ্ন

- আচ্ছা বাবা...।
- চুপ। মেডিটেট করছি।
- ইউটিউবে গান চালিয়ে?
- জগজিৎ তো মেডিটেশনের প্রপ। কোই ইয়ে ক্যায়সে বতায়ে কানে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের কোলাহল ডিসল্ভ করে যাচ্ছে।
- প্রশ্নটা দরকারি ছিল।
- বল্টে। চোপ্।
- জেনুইন কোশ্চেন।
- আমি জেনুইনলি নিজের সাবকনশাসের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে চাইছি।
- বাবা...।
- তখন থেকে ব্যাব্যা ব্যাব্যা ব্যাব্যা! ক্লাস নাইনে আছিস তাই টিকে আছিস। অফিসে বস কান মুলে সিলিং ফ্যানে যখন টাঙাবে, তখনও ব্যাব্যাকে খুঁজবি?
- কিন্তু সমস্যাটা এত প্রেসিং...।
- প্রেসিং? কথায় কথায় এত ইংরেজি ঝাড়ার কী আছে? আর্জেন্ট বলতে পারিস না?
- আর্জেন্ট বাংলা?
- ওহহো। আর্জেন্টের বাংলা কী যেন রে বল্টে?
- আমি করি ফেলি? প্রশ্নটা?
- কথায় কথায় খালি প্রশ্ন। গুরুজনরা সামান্য রিল্যাক্স করে দেশের কথা দশের সমস্যা নিয়ে ভাববে তার উপায় নেই...।
- আমারই একটা সমস্যা ছিল।
- এ'সব মাইক্রো প্রবলেমে আমায় ইনভল্ভ করিস না বল্টে। ম্যাক্রো ভাব। দেশ, দশ।
- আমিও দেশের একজন। দশের একজন।
- জগজিৎ সিংয়ের শিষ্যদের এমন বেয়াদপ ছেলে জোটাটা ভারি অন্যায়।
- জিজ্ঞেস করি?
- ক্যুইক।
- কাল তো আমরা চন্দননগর যাচ্ছি। তিন দিনের জন্য।
- তোমার মেশো যতই ইউজলেস হোন না কেন, সূর্য মোদকের শহরে বাস করেন। ওর নিমন্ত্রণ পায়ে ঠেললে লেনিন পাপ দেবেন। কিন্তু এ'টা তো প্রশ্ন হল না বল্টুকুমার, স্টেটমেন্ট হলো।
- আমাদের আজকের ডিনার সারা।
- কাল চন্দননগর,  আজ ডিনার ওভার। ডিসজয়েন্ট স্টেটমনেট ডিয়ার জগজিৎ কিলার।
- তিন দিন বাড়িতে থাকব না। ফ্রিজ বন্ধ করে যাওয়াটা উচিৎ হবে।
- তোমায় মায়ের অকারণ গেরস্থালীস্ক স্কেপ্টিসিজম তুমি ইনহেরিট করেছ। তিনটে আনরিলেটেড স্টেটমেন্ট, প্রশ্ন নেই। আমার মেডিটেশন গামছা পরে রেডকার্পেটে হাঁটছে চাঁদু।
- বলছিলাম আচমকা নজরে পড়ল ডিপফ্রীজে একটা বাটিতে কিছুটা মাছের ডিম রয়েছে। অল্প পেঁয়াজ লঙ্কা। সামান্য টমেটো। তাই জিজ্ঞেস করছিলাম যে...।
- তোর মধ্যে একটা স্পার্ক রয়েছে বল্টে। সেই স্পার্কটা ধরে রাখতে হবে।
- বলছিলাম যে রাঙাপিসির বলা রেসিপিতে কাতলা মাছের ডিমের আলহাবিবিটা ট্রাই করব?  পোস্ট ডিনার বাড়াবাড়ি হবে? সে'টাই জানার ছিল।
- তোর মাকে পইপই করে বলেছিলাম তোর ভালো নাম হওয়া উচিৎ গজল চ্যাটার্জি। কেন যে বেমক্কা একটা বোরিং নাম বসিয়ে দিয়েছিল তোর বার্থ সার্টিফিকেটে।
- কিচেনে যাই?
- এগিয়ে যা, আমি সেটআপ তৈরি রাখছি। মাছের ডিম... তা'হলে জগজিৎ থেকে পান্নালালে শিফ্ট করতে হবে।
- ওউক্কে।
- আর ইয়ে, বল্টে...।
- কী?
- গোটা দুনিয়া চাইবে তোর প্রশ্ন করার অধিকারকে কান মুলে নীল ডাউন করিয়ে রাখতে। ডু নট লেট ইওর কোশ্চেনস ডাই।
- যাই? রান্নাঘরে?
- ক্যুইক। তুরন্ত। এখুনি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু