Skip to main content

গব্বরের খপ্পরে

- ভাই সাম্বা।
- কিছু বলবেন সর্দার?
- শুনেছি দু'টো নতুন ছোকরাকে নাকি জঙ্গলে দেখা গেছে?
- জী সর্দার। ওদের নাকি ঠাকুর গাঁয়ে ডেকে পাঠিয়েছে।
- ঠাকুর ওদের গাঁয়ে কেন ডেকে পাঠালো, সে'টা জানা আছে? সাম্বাবাবু?
- কই! না তো!
- কী গবেটদের নিয়ে ডাকাতের দল চালাতে হচ্ছে ভেবে দেখেছ? ঠাকুর আমায় ঠেকাতে বাইরে থেকে এজেন্ট নিয়ে আসছে অথচ আমার ছেলেপিলেরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কালিয়া ব্যাটা তো দেখলাম সুডোকু খেলে দিন কাটাচ্ছে। অ্যাট্রোশাস।
- কী শাস?
- সে জেনে আর তোমার কাজ নেই। সামনে সমূহ বিপদ।
- দু'টো এলেবেলে ছোকরাকে এত ভয় সর্দার? আপনার হজমে গোলমাল হচ্ছে না তো?
- নেকুচন্দ্র খাসনবিস। হজমে গোলমাল হচ্ছে না তো! তুমি জানো ওই দু'টো কী চিজ? পুরো দলকে তোষকের তলায় রেখে ইস্তিরি করে দিতে পারে।
- বেশ। ওরা গাঁয়ে পৌঁছনোর আগেই নিকেশ করে দিচ্ছি। অত চিন্তা যে আপনি কেন করেন সর্দার। নিশ্চই আপনার পেট গরম হয়েছে। জোয়ানের আরকটা অন্তত দু'বেলা...।
- থামো থামো! নিকেশ করে দিচ্ছি। কথায় কথায় খালি বাতেলা। এ'দিকে কিতনে আদমি থে জিজ্ঞেস করলে সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর আর জ্যামিতির বাক্স নিয়ে বসবে। যত্তসব। শোনো, এই দু'জন বন্দুকে বা কালিয়ারর ফোঁপরদালালিতে বাগ মানবে না। ব্যাটাচ্ছেলেগুলো মহাঘোড়েল। এ'বার আমাকেই মাঠে নামতে হবে। এদের কিছুতেই রামগড়ের গাঁয়ে ঢুকতে দেওয়া যাবে না, ঢুকলেই সর্বনাশ।
- আপনি মাঠে নামবেন?
- গব্বর তান্ত্রিক ছাড়া আর কোনও গতি নেই ভাই সাম্বা। ওদের দু'জনকে বন্দুকে পরাস্ত করা অসম্ভব। একমাত্র উপায়...।
- একমাত্র উপায়?
- বশীকরণ!  যা শুধু আমিই পারব। তবে তার জন্য আমায় মানবদেহ ছেড়ে ভূত হতে হবে।
- ওহ। আপনার সেই তিব্বত থেকে শেখা তুকতাক।  তা যাবেন কখন ওদের শায়েস্তা করতে?
- এখন মাঝরাত। ছেলে দু'টো জঙ্গলে ঘুমোচ্ছে। ভোর হলে ফের রামগড়ের দিকে হাঁটা দেবে। এখনই প্রশস্ত সময়। হাওয়ায় ভেসে ওদের কাছে পৌঁছে যাওয়া আর তারপর বশীকরণে ওদের আসল পরিচিতি ভুলিয়ে, ভুলভাল ক্ষমতার বোঝা কাঁধে চাপিয়ে ওদের রামগড়ের বদলে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেব। যা'তে বাপের জন্মে আর রামগড়ের কথা ওদের মনে না পড়ে।
- তা রামগড়ের বদলে ওদের কোনদিকে ঠেলে দেবেন?
- ভাবছি ওদের হাল্লার দিকে পাঠিয়ে দেব। তারপর দেখো রামগড়ের জগন্নাথ ঠাকুরকে আমি কী ভাবে শায়েস্তা করি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু