Skip to main content

বাবায় বাবায়

- ক'টা বাজে স্যার?
- ইয়ে, বাবা!
- ক'টা বাজে?
- ক'টা বাজে বলো তো?
- ঝাপসা লাগছে? ঘড়িটা? ইডিয়ট!
- সরি।
- ছিঃ ছিঃ ছিঃ!  তোর এদ্দূর অধঃপতন রে বিল্টে?
- না মানে...।
- রাত একটায় মদে টং হয়ে বাড়ি ফিরেছিস? এই দিনও আমায় দেখতে হল?
- সরি।
- আজ তোরই একদিন কি আমারই একদিন!
- বাবা! জলের বোতলটা এগিয়ে দেবে?
- তোমায় চৌবাচ্চায় নিয়ে গিয়ে চুবিয়ে আনব। বাপকে অর্ডার করা হচ্ছে?
- প্লীজ।
- এই নে। গেল্! আর একদিন যদি দেখি তাহলে বাড়ি থেকে বের করে দেব!
- বুবলু ঘুমিয়েছে?
- নয়ত কি তোমার বেলেল্লাপনা দেখার জন্য জেগে বসে থাকবে? পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া উচিৎ তোমার!
- বাবা! বুবলু জেগে যাবে।
- সরি।
- জানো বাবা!
- জুতোটা খুলছি। একটু কুওপরেট করুন স্যার।
- বাবা।
- ডিনার করেছিস?
- ইয়েস বস।
- আজ সোফাতেই শুয়ে থাক। কাল ভোরে উঠে ডেটলে স্নান করবি।
- থ্যাঙ্কস। বাবা...।
- ইয়েস বল্টে!
- আজ ফাইনাল হয়ে গেল।
- জানি। মিতুল আমায় ফোন করেছিল। পরশু আসছে বুবলুকে নিতে।
- কোর্টে দেখা হল। ও কাঁদল। কিন্তু কিছুতেই ওর সামনে আমি কাঁদতে পারলাম না।
- কিন্তু নবাবপুত্তুর মদটা বেশ গিলতে পারলে!
- আসলে...বুঝতে পারছিলাম না। বিশ্বাস হচ্ছিল না যে বুবলু থাকবে না...।
- দিব্যি থাকবে। মিতুল তোর চেয়ে অনেক বেশি রেস্পন্সিবল। আমাদের দু'জনের আন্ডারে থাকলেই বরং ছেলেটা ক্যালাস তৈরি হত।
- হুঁ। আসলে মিতুল যদি একটু বুঝতে পারত...।
- আই সাপোর্ট মিতুল ওভার অ্যান অ্যাস্পায়ারিং মাতাল। এনি ডে।
- সপ্তাহে একদিন ওর সঙ্গে দেখা হবে।
- আমার একটাই চিন্তা রে বিল্টে। মিতুলের বাড়ির রান্নার কোয়ালিটি এমন টেরিবল। ছেলেটার টেস্ট বাডগুলো ব্ল্যান্ড হয়ে যাবে।
- হ্যাঁ। সে'টাই যেন একমাত্র সমস্যা!
- সিগ্নিফিকেন্ট সমস্যা। তোর শাশুড়ির হাতের আলুপোস্ত খেয়েছিস তো। স্ক্যান্ড্যালাস। পুলিশে দেওয়া উচিৎ ভদ্রমহিলাকে।
- এক্স-শাশুড়ি। আর বাবা প্লীজ।
- হুঁ। এক্স।
- আমার বুবলুর জন্য বেশ কষ্ট হবে জানো। হি ইজ দ্য বেস্ট।
- আমার তোর জন্য কষ্ট হচ্ছে। তবে সরি, ইয়ে, বুবলু ইজ ভেরি গুড বাট নট দ্য বেস্ট। বুবলুর বাপ মাতাল, তোর বাপ রান্না-শিল্পী। তোর দিকে অ্যাডভান্টেজ।
- হেহ্।
- আমার খাটে গিয়ে শুয়ে পড়। আমি বুবলুর পাশে যাই। যেত পারবি না এসকর্ট করতে হবে রে রাস্কেল?
- পারব।
- বিল্টে।
- ইয়েস ফাদার?
- পরশু বুবলু যাওয়ার পর আমায় একটা বারে নিয়ে যাবি?
- তোমার তেমন অধঃপতনে আর কেউ না হোক মিতুল দুঃখ পাবে।
- হুঁ। তাহলে শ্যামল মিত্রই ভালো। নেহ্, শুয়ে পড়।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু