Friday, February 3, 2017

মানিব্যাগ


আমার মানিব্যাগে সিনেমার টিকিট কোথা থেকে এলো?
আজকের টিকিট। প্রিয়ার। ম্যাটিনি শো। ঠিক যখন আমি অফিসে বসে মিটিং ফাঁকি দিচ্ছিলাম।


এক মিনিট। এই মানিব্যাগ আমার নয়। এটাও কালো, কিন্তু আমারটা অনেক বেশি পুরনো। আমার মানিব্যাগে তিনশো বাহান্ন টাকা থাকার কথা। এখানে সাতাশশো আছে।


এক গুচ্ছ ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে। অমল সামন্ত, ডালহৌসিতে অফিস। ঠিকানা ফোন নম্বর আছে।


অদ্ভুত ব্যাপার। অমলবাবুর মানিব্যাগও পালটে গেছে। কিন্তু তাঁর কাছে যে মানিব্যাগ রয়েছে সে'টা আমার নয়। বাগবাজারের বিপুল সমাদ্দারের আধার কার্ড রয়েছে সে'টায়।


এ কী। এই মাত্র টালিগঞ্জ থেকে বিপিন রায় ফোন করেছিলেন। ভদ্রলোকের প্লাস্টিক প্রোডাক্টসের ব্যবসা।  ওনার পকেটে আমার মানিব্যাগ পেয়েছেন উনি। অফিসের আইকার্ড থেকে আমার নম্বর পেয়ে ফোন করেছেন। কী অনাসৃষ্টি। অবশ্যই ওর মানিব্যাগটি হাওয়া।
একটা অদ্ভুত ব্যাপার, আমরা দুজনেই ননীগোপাল দত্ত স্মৃতি লাইব্রেরীর মেম্বার। দু'জনেই শেকভ্ ভক্ত। বেশ মাই ডিয়ার মানুষ, পরশু নিজের বাড়িতে চা ওমলেট খেতে ডাকলেন। লোকনাথ বাবার কৃপায় ভদ্রলোক এখন মানিব্যাগ ফেরত পেলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।


- বৈজ্ঞানিক?
- আজ্ঞে প্রেসিডেন্ট।
- তৈরি? 
- অবশ্যই। এই সেই প্যানেল।
- ইয়ে, সব গোপন আছে তো?
- গোটা পৃথিবীতে এর খবর জানে শুধু দু'জন।
- তা এ প্যানেলে কী ভাবে কাজ হবে?
- এখানে বোতাম টিপে ঠিক করে দিন লোকেশন। আর এইখানে পাঞ্চ করুন কতজন লোক টার্গেট।  আর তারপর এই সবুজ হাতল টানলেই কাজ শুরু।
- ফলাফল?
- হাতেনাতে। আজ সকালেই কলকাতা শহর আর জনা বিশেক লোক টার্গেট করে একটা ট্রায়াল রাউন্ড করেছি। সাকসেসফুল।  এক গাদা নতুন আলাপ হয়েছে। খান চারেক বন্ধুত্বও বেরিয়ে আসবেই।
- বাহ্। বা বাহ্। এ যন্ত্র তাহলে পারবে বৈজ্ঞানিক? যন্ত্রের গুণে এ যুগের নিজের প্রতিবেশীকে না চেনা মানুষেরা অপরিচিতের সঙ্গে যেচে আলাপ করবে?
- এ রিমোট যন্ত্র সে আলাপ ঘটাবে। নিশ্চিত।
- বন্ধুত্ব হবে?
- প্রতি দশটা আলাপে অন্তত দু'টো।
- মানুষের ইতিহাস পালটে যাবে বৈজ্ঞানিক।
- সবই আপনার দূরদর্শিতা প্রেসিডেন্ট।
- আর তোমার প্রতিভা। একটা কথা বলো বৈজ্ঞানিক, এ যন্ত্র এমন চমৎকারভাবে এ'সব ঘটায় কী করে?
- সে বড় জটিল বিজ্ঞান মহারাজ। আসুন, কিছু আলাপ আর বন্ধুত্ব জেনারেট করা যাক। কোন লোকেশন? কতজন লোক?
- লোকসভা। পাঁচশো পঁয়তাল্লিশ।

No comments: