Wednesday, February 22, 2017

এক্সেল

দিব্যি মরে উঠে এলাম বডি ফেলে। হাতঘড়িতে এখন রাত পৌনে ন'টা। পঞ্জিকা অনুযায়ী ক্ষতি নেই। কিন্তু আমি রেডি থাকলেও ব্যাটাচ্ছেলে যমদূতের দেখা নেই।

মহামুশকিল। মারা যাওয়ার পর দেখছি ফ্রি ফোর-জি সিমের কনেকশনটাও কাজ করছে না। সে ব্যাটা যতক্ষণ উদয় না হচ্ছে ততক্ষন আমার ভেসে বেড়ানো ছাড়া কোনও কাজ নেই। আত্মার ওজন এতই কম যে পায়চারী করতে মাটিতে নামারও কোনও উপায় নেই।

আধ ঘণ্টার মাথায় যে বস্তুটির দেখা মিললো সে'টা একটা হাওয়ায় পতপত করে ওড়া এমএস-এক্সেল স্প্রেডশিট। সে ব্যাটা আবার কথা বলে।

"এসে গেছি", বলে গায়ের উপর এসে পড়লো সে।

"কেন? এসে কী হবে?"

"ভি-লুক আপ করে আপনার খোঁজ পেলাম। টাটকা মড়া। নিয়ে যেতে এসেছি"।

"হোয়াট ননসেন্স, শিংওলা যমদূত কই"?

"ও'সব তো গত সেঞ্চুরির ব্যাপার স্যার। চলুন। আর দেরী হলে নরকের এন্ট্র‍্যান্স বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আবার আপনাকে পিভট টেবিলে লুকিয়ে রাখতে হবে"।

"নরক? স্বর্গে শর্টলিস্ট হল না ভাই এক্সেল"?

"অত প্রমোশন প্রমোশন করলে স্বর্গ জোটনা স্যার। জিভে দেখুন। এখনও চেরী ব্লসম শু-পালিশের ছোপ লেগে আছে"।

" আই সী, নরক। বেশ, গেলেই হয়। আচ্ছা, সে'খানে আছে কী? গরম তেলের কড়াই? পাপীরা কনস্ট্যান্ট ডিপফ্রাইড হচ্ছে"?

"কড়াই ফড়াই এখন মিউজিয়ামে স্যার। নরকে এখন চারদিকে শুধু ল্যাপটপ ছড়ানো। আর সব পাপী সেখানে বসে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানাচ্ছে। দিন রাত। রাত দিন"।

"হোয়াট দ্য হেল, বলেন কী"?

"নরক দিনদিন টাফ হয়ে যাচ্ছে স্যার"।

"স্বর্গে তাহলে কী কেস ভাই এক্সেল"?

"মেঘলা বিকেলের বাবুঘাট স্যার। চিরমেঘলা। চিরবিকেল। সে'খানে সল্টেড বাদাম বিক্রি"।

"ওহ্"।

"ও'সব বেশি ভাববেন না স্যার। মনখারাপ হবে। তাও তো স্বর্গে আনলিমিটেড ফ্রি লেবুজলের কথা বলিইনি। যাক গে। আপনার কপালে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন। চলুন এবার"।

"আর ভাই...চলো"।

No comments: