Skip to main content

খিস্তি বিন্যাস

খিস্তি বালিতে বাদাম ভাজা নয়। চড়াত করে কেলটে কড়াইয়ের বালিতে ঢেলে দু’-পাঁচ মিনিট নেড়ে ডাঙায় তুলে নিলেই হল। খিস্তিকে খেলাতে হবে। নুনে হলুদে মেখে ফেলে রাখতে হবে এক বেলা। তারপর ডুবো তেলে নরম আঁচে ফেলে খিস্তির রঙ রাঙা করে আনা। ঝাঁঝরির আলতো চাপে খেলিয়ে চলা, তারপর ডাগর হলে গরম গরম পাতে তুলে আনা। খিস্তি পাখি নয় ঘুড়ি, সে নিজে থেকে ডানা মেলে না; সে অন্যের সুতোর টানে ল্যাজ বাগিয়ে ওড়ে। তাকে ওড়াতে জানতে হয়। খিস্তিকে অশ্লীল হতে হবেই এ দিব্য দেবে মধ্যমরা (অধম তারা যারা খিস্তিতে বিশ্বাস রাখেন না)। উত্তমরা খেলবেন পরতে পরতে এবং তারাই খিস্তিকে নিয়ে যাবেন – “টু দ্য টপ, টু দ্য টপ, টু দ্য টপ”। 

যথা?

বলি।

স্টুপিড নয়।
ইস্টুপিড। ইস্টুপিড নয়। ইস্টুপিডের দল। ইস্টুপিডের দল নয়। ইস্টুপিডের দলের হোতা। ইস্টুপিডের দলের হোতা নয়। ইস্টুপিডের দলের হোতার মাথার উকুন। ইস্টুপিডের দলের হোতার মাথার উকুন নয়। ইস্টুপিডের দলের হোতার মাথার উকুনের গায়ের গন্ধ। ইস্টুপিডের দলের হোতার মাথার উকুনের গায়ের গন্ধ নয়। ইস্টুপিডের দলের হোতার মাথার উকুনের গায়ের বোটকা মানুষ মারা গন্ধ।

রাস্কেল নয়।
রাম রাস্কেল। রাম রাস্কেল নয়। বাপে খ্যাদানো মায়ে তাড়ানো রাস্কেল।  বাপে খ্যাদানো মায়ে তাড়ানো রাস্কেল নয়। মাকাল ফল চেবানো বাপে খ্যাদানো মায়ে তাড়ানো রাস্কেল। মাকাল ফল চেবানো বাপে খ্যাদানো মায়ে তাড়ানো রাস্কেল নয়। দাঁত ক্যালানো মাকাল ফল চেবানো বাপে খ্যাদানো মায়ে তাড়ানো রাস্কেল।

হাভাতে নয়।
হাড় হাভাতে। হাড় হাভাতে নয়। রাক্ষুসে হাড় হাভাতে। রাক্ষুসে হাড় হাভাতে নয়। গুষ্টি-গেলা রাক্ষুসে হাড় হাভাতে। জলহস্তী-মার্কা গুষ্টি-গেলা রাক্ষুসে হাড় হাভাতে। জলহস্তী-মার্কা গুষ্টি-গেলা রাক্ষুসে হাড় হাভাতে নয়। পেটরোগা মাথামোটা জলহস্তী-মার্কা গুষ্টি-গেলা রাক্ষুসে হাড় হাভাতে।

ভীতু নয়।
ভয়ে ভীতু ছ’য়ে ছাতু। ভয়ে ভীতু ছ’য়ে ছাতু নয়। ভয়ে ভীতু ছ’য়ে ছাতু, ডায়ে কাতু বাঁয়ে কুতু। ভয়ে ভীতু ছ’য়ে ছাতু, ডায়ে কাতু বাঁয়ে কুতু নয়।ভয়ে ভীতু ছ’য়ে ছাতু, ডায়ে কাতু বাঁয়ে কুতু, কলজে কাঙালের জুজু ঋতু।

ইডিয়ট নয়।
ইডিয়েট। ইডিয়েট নয়। ইডিয়েটের ডিম। ইডিয়েটের ডিম নয়। ইডিয়েটের ডিমের অমলেট। ইডিয়েটের ডিমের অমলেট নয়। ইডিয়েটের পচা ডিমের অমলেট। ইডিয়েটের পচা ডিমের অমলেট নয়। ইডিয়েটের পচা ডিমের নুন ছাড়া অমলেট। ইডিয়েটের পচা ডিমের নুন ছাড়া অমলেট নয়। ইডিয়েটের পচা ডিমের নুন ছাড়া মুলো দেওয়া অমলেট।    

হনুমান নয়।
মুখ-পোড়া হনুমান। মুখ-পোড়া হনুমান নয়। ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান। ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান নয়। পেছন-লাল ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান।  পেছন-লাল ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান নয়। জিভে-বিছুটি পেছন-লাল ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান। জিভে-বিছুটি পেছন-লাল ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান নয়। কানে-খোল জিভে-বিছুটি পেছন-লাল ন্যাজ-কাটা মুখ-পোড়া হনুমান।  

এভাবেই আর কী। এই আর কি। 

Comments

malabika said…
এতো দেখি সেই জনঅরণ্য সিনেমার মেমারি গেম খেলা।
Anonymous said…
জনঅরণ্য?
Anonymous said…
জনঅরণ্য?

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু