Skip to main content

দুই ভাগ

"হাওড়া ব্রিজের চুড়োয় উঠুন নীচে তাকান, ঊর্ধ্বে চান - দুটোই মাত্র সম্প্রদায় নির্বোধ আর বুদ্ধিমান।" -শঙ্খ ঘোষ


পৃথিবীতে মানুষকে দুই ভাবে ভাগ করা যায়।

এক, যাদের পকেটে কলম রয়ে যায় আর কলমের ঢাকনাটা হারিয়ে যায়। দুই। যাদের কাছে কলমের ঢাকনারা রয়ে যায় আর কলমটা হারিয়ে যায়।

এক, যারা হঠাৎ বৃষ্টি ভালবাসেন আর দুই, যারা হঠাৎ বৃষ্টিকে ভালো না বাসার ভান করেন।

এক, যারা অঙ্কে ভালো আর দুই, যাদের অঙ্ককে ভালো করে চিনিয়ে দেওয়া হয়নি, স্রেফ শেখানো হয়েছে।

এক, যারা রেগে আগুন হয় তোলপাড় করে ফেলেন আর দুই, যারা রাগ এনেভেলেপে পুরে পুরনো বইয়ের ফাঁকে রেখে গা এলিয়ে বসেন।

এক, যারা কবিতা বোঝেন না আর দুই যারা জানেন যে কবিতা কেউই বোঝে না।

এক, যারা গল্প বলতে পারেন আর দুই, যার গাল হাত রেখে হাঁ করে গল্প গিলে যেতে পারেন।

এক, যারা টেস্ট ম্যাচ ভালোবাসেন আর দুই, যারা টেস্ট ম্যাচ দেখেন না।

এক, যারা মাঝে মাঝেই ঝপাৎ করে শিবরাম পড়ে ফেলেন আর দুই, যারা কুঁচকানো ভুরুর চালুনিতে নাগাড়ে ইনফরমেশন ফিল্টার করে চলেছেন।

এক, যারা “ধুর কাঁচকলা”য় আটকে আছেন আর দুই, যারা “হোয়াট দা ফাকে”র শৃঙ্গজয় করেছেন।

এক, যারা টমেটো খেজুরের চাটনি পাঁপড় দিয়ে খেতে ভালোবাসেন আর দুই, যারা সে চাটনি শুধু খান।

এক, যারা দুর্দান্ত প্রেম করতে পারেন আর দুই, যাদের ভাগ্যে প্রেমিক/প্রেমিকা রয়েছে।

এক, যারা ভুল স্বীকার করে ফেলেন চটপট আর দুই, যারা ভোটে জিতবার দম রাখেন।

এক, যারা ভেবে চলেন রবীন্দ্রনাথ শেষ বয়স পর্যন্ত অমন অবলীলায় লিখে যেতেন কী ভাবে, আর দুই, যারা খুঁজে বেড়ান যে দাড়ি পাকাতে শুরু করার পর থেকে তার দন্ত-বিকশিত-হ্যা-হ্যা মার্কা ছবি আদৌ ক’টা আছে।

এক যারা শিঙ্গাড়ার আলু বেশি পছন্দ করেন আর দুই, যারা সিঙ্গারার নিমকি-সম চামড়া বেশি পছন্দ করেন। 

এক, যারা কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসেন আর দুই, যারা এই লেখাটা পড়ে শেষ করলেন।

    

Comments

malabika said…
তালিকাটা 'হেব্বি'
শঙ্খ ঘোষকে উপহার দেবার জন্য ধন্যবাদ।
Anonymous said…
Twitter এর সুএে আপনার লেখার সাথে পরিচিত হলাম আজ। ভাল লাগলো।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু