Skip to main content

স্যাম্পেল টেস্টিং

- হজৌর!
- আরে এজেন্ট যে! এতক্ষণে আসার সময় হল তোমার? আর আধ ঘণ্টা দেরী হলে তোমায় নিকেশ করার হুকুম জারি করতাম।
- হজৌরের হুকুমনামায় মউত। সে তো খুশনসিবি।
- থামো থামো, ক্রমশ অয়েল মিল হয়ে উঠছ। পৃথিবীতে তোমার পরিচয় গোপন আছে তো? বাঙালিরা চিনে ফেলেনি তো তোমায়?
- জী বিলকুল গোপন।
- আর কাজের কাজ হল কিছু? স্যাম্পেল?
- আজ্ঞে হজৌর, স্যাম্পেল প্লান্ট করে দেওয়া হয়েছে।
- গুল নয় তো?
- তৌবা হজৌর তৌবা। হজৌরকে গুল দিলে আমার জিভে যেন সয়াবিনের কোপ্তা পড়ে।
- সয়াবিন? সে'টা কী?
- পৃথিবীর এক প্রত্যন্ত প্রদেশের খাদ্য। বহুত দর্দনাক হজৌর। তা সেই প্রদেশেই আমরা স্যাম্পেল প্লান্ট করে এসেছি।
- দেখো বাবা এজেন্ট! বিষ এক্সপোর্ট করতে গিয়ে ইম্পোর্ট করে ফেলো না। শেষে আমরা সবাই মিলে নিকেশ হই।
- আজ্ঞে হজৌর, দেড় ঘণ্টা কুলকুচি করেছি। জিভ এখন বিলকুল সাফ।
- তা স্যাম্পেল কোথায় পুঁতে এলে?
- বাংলায়। শুরুটা সে'খান থেকে করাই সুবিধে। আলাভোলা মানুষজন। একটা অদ্ভুত মন্ত্রপাঠ করে চলেছে সারাক্ষণ!
- মন্ত্র? কী মন্ত্র?
-ওই...কালচারকালচারকালচারকালচারকালচার...।
- বাপ রে! ওই মন্ত্রে হয় কী?
- কিচ্ছু না। ও'টা কিছু না হওয়ার মন্ত্র।
- কিছু না হওয়ার মন্ত্র?
- জী হজৌর। ওই প্রদেশের সক্কলে ত্রস্ত হয়ে আছে। যদি কিছু হয়ে যায়? যদি কেউ নড়চড় করে? যদি হাওয়া দেয়? তাই সবাই মন্ত্র পড়ে যায়, যাতে কিছু না হয়।
- ওই কালচারকালচারকালচারকালচারকালচার?
- জী হজৌর। ও মন্ত্র অব্যর্থ।
- গোলমেলে ব্যাপার তো হে এজেন্ট।
- কিন্তু স্যাম্পেল টেস্ট করার জন্য সেরা স্যাম্পেল পপুলেশন যে ওই প্রদেশেই হজৌর।
- তা স্যাম্পেল কাজ কেমন করছে?
- দুরন্ত হজৌর। দুর্দান্ত। সবাই মগ্ন। সবাই হারিয়ে যাচ্ছে। সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে। সবাই নিজের ব্রেনে সেম সাইড গোল ঝেড়ে যাচ্ছে। পরীক্ষা সফল। আমাদের রাস্তা সাফ। এই ভাবে গোটা পৃথিবীকে বিকল করে দেওয়া যাবে সহজেই।
- তারপর গোটা পৃথিবী আমাদের! এই ব্যাজার মার্কা গ্রহে আর পড়ে থাকতে হবে না।
- জী হজৌর। শুধু ওই সয়াবিনের বড়ি এড়িয়ে চলতে হবে।
- তা, এই বাংলা প্রদেশের স্যাম্পেল টেস্টিং প্রজেক্টের কী নাম দেওয়া হয়েছে?
- আজ্ঞে হজৌর; টেস্টনি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু