Skip to main content

গোপন বোতল

- হ্যাঁ রে গুপে..একটা কথা অনেস্টলি বলবি আমায়?
- কী ব্যাপার মামা? তুমি এত সিরিয়াস টোনে কথা বলছ কেন?
- কারণ সাব্জেক্টটা সিরিয়াস তাই।
- কী ব্যাপার?
- তুই মদ খাস?
- ছিহ্! মদ? রামোহ্! মাকে প্রমিস করেছি ও'সব ছোঁব না।
- রিয়েলি? দিদিকে প্রমিস করেছিস? র‍্যামোহ্? বটে?
- তোমায় ছুঁয়ে বলব?
- পাগল নাকি রে! ডাক্তার এমনিতেই বলেছে কোলেস্টেরল অ্যালার্মিং ডায়রেকশনে বয়ে চলেছে।
- মাইরি গো। সে'বার অফিস পিকনিকে এক চুমুক বিয়ার খেয়ে কী বিশ্রী লেগেছিল। তারপর থেকে পার্টিফার্টিতেও বড় জোর লাইম সোডা, তাও আবার স্যুইট।
- গুড বয় গুপে।
- থ্যাঙ্ক ইউ মামা।
- ইয়ে, তোর ওই দেরাজে কেউ ভুলে একটা জনি ওয়াকারের বোতল ফেলে গেছিল।
- দেরাজ? আমার? মাইরি?
- নট টু ওয়ারি। ও আমি সরিয়ে নিয়েছি। এই ব্যাগে রেখেছি। যাওয়ার পথে কোনও ঝোপঝাড় দেখে ফেলে দেব।
- মামা, আমি থাকতে তুমি কেন কষ্ট করবে?
- কষ্ট কী? নাথিং। নাথিং। ঝোপঝাড় কত চারদিকে।
- কী দরকার। তুমি নিজে কোনও দিন মদের বোতল ছুঁয়ে দেখোনি, এই সেদিনই তুমি দিদার সামনে গল্প করছিলে।
- তা অবশ্য ঠিক। মদের বোতল মানে নরকের আধার কার্ড।
- তা বোতলটা রেখেই যাও।
- কী ভাবে এলো বল তো বোতলটা? দেরাজে?
- আমি তো আকাশ থেকে পড়ছি। বিশ্বাস করো। কেউ তুকতাক করছে না তো মামা?
- তুকতাক? হতে পারে। তবে এ বোতল বরং আজ ঝোপঝাড়ে ফেলে আসাই ভালো। এই বোতল ফেলে আমি বরং দু'লিটারের ফ্যান্টা নিয়ে আসব।
- আমি মরে গেছি মামা? আমি থাকতে তুমি বাইরে যাবে কষ্ট করে?
- যাব না?
- পম্পফ্রেট ভাজা খাবে মামা? ফ্যান্টা দিয়ে?
- পমফ্রেট এনে রেখেছিস?
- ম্যারিনেটও করাই আছে।
- ও। আচ্ছা। ওই কাজুর প্যাকেট দেখছি...।
- ওই...ফ্যান্টার সঙ্গে খাওয়ার জন্যে।
- তুই ফ্যান্টা সত্যিই ভালোবাসিস গুপে।
- ওই। নরনাং মাতুলং কী যেন।
- কথাটার মানে জানিস?
- মানুষ মামার মতই হয়...।
- ঠিক, অর্থাৎ মামা ঝোপ হলে...।
- ভাগনে ঝাড়।
- হেহ্। তা'হলে মামা, দেরাজের বোতলটা...।
- ঝোপঝাড়েই যাক।

জনি ওয়াকারের বোতলটা প্রতি রোববার ফ্যান্টায় রীফিল হয়ে চলে।
প্রতি রোববার মামার হুমকি।
প্রতি রোববার গুপের পমফ্রেট টোপ।

জনি ওয়াকার-ফ্যান্টায় মাতাল না হলে প্ল্যানচেট জমে না, প্ল্যানচেট না জমলে মামা ভাগ্নে নিজেদের মায়দের ডেকে হপ্তার ফিরস্তি শোনাবে কী করে?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু