Skip to main content

প্রগ্রেস্

- কেমন দেখছেন জাঁহাপন?
- আনবিলিভেবল প্রগ্রেস।
- তবে? বলেছিলাম না?
- সত্যি মানববাবু, আপনার এলেম আছে।
- থ্যাঙ্কিউ মাই লর্ড। মনে করে দেখুন স্যার, কোন বিষাক্ত জায়গায় আমার রেখে গেছিলেন। সার্ভাইভালের কোনও অস্ত্র ছাড়া। চারদিকে খুনে জন্তু, রোগ, মহামারি,  ডাইনোসোরের হাড়! অথচ আজ ইন্সপেকশনে এসে আপনি কী দেখছেন?
- সাজানো বাগান। ডেমোক্রেসি। চাঁদে যাওয়ার মিনিবাস। শুক্তো রাঁধতে পারা রোবট। ফুলেফেঁপে ওঠা জিডিপি। সত্যের সেনাবাহিনী, দুষ্টের টিকটিকি বিরিয়ানি। ইনক্রেডিবল।
- এ আর এমন কী দেখলেন। শুধু ইকনমি দেখে ভির্মি খেলেই চলবে হে জগদীশ্বর?  আর্ট দেখুন, কালচার দেখুন। শেক্সপিয়র টু কপিল শর্মা, ট্যাগোর টু জীবাংলা; মার্ভেলাস জার্নিটা নোটিস করেছেন?
- মাইন্ডবগলিং মানববাবু। আমার মাথা ঝিমঝিম করছে। ইন আ পজিটিভ ওয়ে।
- তাও তো স্পোর্টস ফ্যাশন এ'সব নিয়ে বলিইনি এখনও।
- মাইন্ডব্লোয়িং। আমি সবই দেখছি। আর মুগ্ধ হচ্ছি। আমার চোখের দিকে তাকান মানববাবু, ডিগ্রি অফ মুগ্ধতা সহজেই ইন্টারসেপ্ট করতে পারবেন।
- তাহলে?
- তাহলে কী?
- বাহ্! যে জন্য আপনার এ'খানে আসা। ইন্সপেকশন। রিভ্যউ।
- ওহহো, দেখেছেন কাণ্ড! প্রগ্রেসে এতটা ভেবড়ে গেছিলাম। আমায় নম্বর দিতে হবে তো! অন আ স্কেল অফ ওয়ান টু টেন।
- আই রিপীট, সঙ্গীত আর পোয়েট্রি; একমাত্র আমাদের পাড়াতেই পাবেন স্যার। ইন দ্য হোল ইউনিভার্স।
- সঙ্গীত,  কাব্য! মানববাবু, অসামান্য,  অভাবনীয়, অনির্বচনীয়..।
- ইউ আর ট্যু কাইন্ড জাঁহাপনা। ট্যু কাইন্ড। তাহলে নম্বর ব্যাপারটা...।
- নম্বর?
- ওই যে, ইন্সপেকশনের। আউট অফ টেন, কত?
- ও নম্বর। ইউ আর রাইট। নম্বর। আউট অফ টেন।
- ফুল তো? টেন অন টেন, তাই তো?
- এ'টা কোনও প্রশ্ন হল মানববাবু? অকারণে আমায় লজ্জা দেওয়া, অফ কোর্স টেন অন টেন!
- আপনারই আশীর্বাদ স্যার। মোস্ট থটফুল অফ ইউ। মোস্ট থটফুল। টেন অন টেন, দশে দশ; বিউটিফুল।
- ইয়ে...।
- কীসের ইয়ে জগতপতি?
- বলছিলাম যে...একটা ইয়ে...মাইনর ব্যাপার...।
- সে'টা কী?
- সামান্য নম্বর। আপনার চারটি নম্বর ফেরত নিতে হচ্ছে, প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড মানববাবু! দশে ছয়।
- সে কী! এ কী! বলেন কী! সাজানো বাগান স্যার? ডেমোক্রেসি? জিও সিম? এরপরেও নেগেটিভ নম্বর?
- ওই, বসতির ওপর বোমা টোমা ফেলে দিব্যি কিছু শিশু হত্যা চলছে কিনা।
- ওহ, ও'তো কোল্যাটেরাল ড্যামেজ জাঁহাপনা!  এ যে লঘু পাপে...।
- এই যাহ্, চার কমালে হবে না! আট কমাতে হবে।
- ডাব্লু টি এফ? দশে দুই? ইয়ার্কি পেয়েছেন স্যার? ডাকব নাকি কমিউনিস্টদের?
- আরে একটা মৃদু ঘটনা। ওই যে, স্কুলে ঢুকে বহু শিশুকে খুন করার ব্যাপারটা!
- তা'তে কী? এক্সেপশন। অ্যাবেরেশন। তাছাড়া রবীন্দ্রনাথকে তো মার্ডার করেনি।   অমন একটু হয়ে থাকে।
- এহ্ হে।
- আবার কী?
- আর বলেন কেন মানব বাবু। আরও চার বাদ দিতে হবে।
- ধ্যের শালা।  আছে তো পড়ে দুই। চার গেলে থাকবে কী?
- কেন? মাইনাস দুই। আসলে হয়েছে কী, আপনাদের মজবুত সিস্টেম অসুস্থ শিশুদের অক্সিজেন সাপ্লাই কেটে দিয়েছে। টপাটপ শিশুরা আপনাদের সিস্টেমের লাইনে কাটা পড়ছে। তেষট্টি হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
- তবে রে হারামজাদা!
- কলার ছাড়ুন মানববাবু! আর পারলে নম্বর না গুনে নিজের গলা টিপে ধরুন। পোয়েট্রি মিউজিক ডেমোক্রেসির গল্প না হয় অন্য কোনও দিন হবে।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু