Skip to main content

উইন - উইন

- কত চাই?

- কী কত?

- চেকবই সঙ্গে এনেছি।

- কেন?

- তোমায় আমার কাজটা করে দিতে হবে সমীর।

- আপনি ভাবলেন কী করে মিস্টার সেন যে টাকার বিনিময়ে আমি মোহনদাকে খুন করব?

- কারণ সে'টাই তোমার পেশা!

- কিন্তু শিকার পছন্দসই না হলে আমি খুনখারাপি করি না। আপনি জানেন আমার রক্ত দেখলে গা গুলোয়? নেহাত পেটের দায়ে...।

- মোহন সিংকে খুন করতে তোমার আপত্তিটা কোথায়? সে তো নিজেও একটা মার্ডারার!

- লাইনের লোকে কী বলে জানেন? মোহন সিং হল আচরেকর, আর সমীর হল তেণ্ডুলকর।

- মহাভারতে যুধিষ্ঠির দ্রোণকে শায়েস্তা করেনি?

- দ্রোণ কাঠি করছিল। উপায় ছিল না।

- আর এ ক্ষেত্রে মোহন সিং তোমার মার্কেট শেয়ার নষ্ট করছে।

- আপনার জ্বালার কারণ আমার মার্কেট শেয়ার নয় মিস্টার সেন। আপনি জ্বলছেন কারণ মোহন সিং আপনার বিজনেস রাইভাল দত্তর হয়ে কাজ করছে।

- অবভিয়াসলি সে'টাই আমার কনসার্ন। কিন্তু সমীর, সিচুয়েশনটা উইন উইন। এ কাজ হয় তুমি করবে নয়তো অন্য কেউ...মাঝখান থেকে তোমার রেভেনিউ কমে যাবে।

- কেন বাতেলা ঝাড়ছেন স্যার? মোহন সিংকে আমি ছাড়া কেউ ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না।

- দশ পাবে। পুরোটা অ্যাডভান্স।

- আপনি আজ আসুন মিস্টার সেন।

- ফিফটিন। সমীর, প্লীজ। এই যে চেকবই। আচ্ছা, দরকারে কুড়ি! কুড়ি দেব তোমায়।প্লীজ।

- এক কোটি দিলেও আমার মত পাল্টাবে না মিস্টার সেন।

- তুমি জানো না মোহন সিং তোমার দলের অন্তত দশ বারো  জনের লাশ ফেলেছে এদ্দিনে?

- দশ বারো? সতেরো।

- তবুও তুমি...।

- মোহন সিংকে খুন করব না। এ'বারে আসুন। আজ টিভিতে দিওয়ার দিয়েছে।

**

- হ্যালো!

- ব্যস্ত?

- বলুন দত্তবাবু।

- খবর আছে।

- শুনি।

- সেন ওর পোষা গুণ্ডাটাকে লাগিয়েছে তোমার খুন করতে। দশ লাখ অফার করেছে।

- বিশ।

- বিশ?

- দশ নয়, বিশ লাখ অফার করেছে।

- তোমার কাছে খবর এসে পড়েছে? যাক গে,  আমি তোমায় তিরিশ দেব। ওই সমীর গুণ্ডাকে সাফ করে দাও দেখি। চটপট।

- হবে না।

- হবে না? মোহন মার্ডারার বলছে খুন করতে পারবে না?

- বিজনেস টাইকুন দত্ত কানে কম শুনছে?

**

- ভাই মোহন, তোমার লাশে বিশ লাখ।

- ভায়া সমীর, তুমি মরলে তিরিশ।

- এক খুনে...।

- পঞ্চাশ লাখ।

টিভিতে তখন 'কেহ দু তুমহে, ইয়া চুপ রহু' ফুল ভল্যুমে বেজে চলেছে, আয়না ভাঙার শব্দটা তাই ঘরের বাইরে গেল না।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু