Skip to main content

আধার আর মড়া

- আই অ্যাম সরি মিস্টার দত্ত। অনেক চেষ্টা করেও আপনার জ্যাঠামশাইকে...।
- না ডাক্তারবাবু না, এ'টা হতে পারে না। জ্যাঠাকে ছাড়া আমার পৃথিবী যেন হোয়েন হ্যারি মেট সেজলের ফার্স্ট ডে রিভিউ।
- লাস্ট স্টেজ ছিল। আর আপনারা তো দেখলেন আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। ভাগ্যকে মেনে নেওয়া ছাড়া যে আর কোনও উপায় নেই মিস্টার দত্ত। মনকে শক্ত করুন। জন্মিলে মরিতে হবে...ওই কোটটা ভাবুন। যাক গে, এখন ফর্মালিটিগুলো সেরে বডি...থুড়ি...জ্যেঠুকে নিয়ে যান। তবে ফর্মালিটির জন্য সবার আগে যে'টা লাগবে...আপনার জ্যেঠুর আধার কার্ডের একটা কপি রিসেপশনে জমা দিয়ে আসুন আগে।
- আধার? সরি। করব করব করেও জ্যেঠুর আধার কার্ডটা বানানো হয়নি।
- আপনার জ্যেঠুর আধার কার্ড নেই? সর্বনাশ!
- জ্যেঠুই নেই তো তাঁর আবার আধার কার্ড, কী দরকার ডাক্তারবাবু!
- কে বলেছে আপনার জ্যেঠু নেই?
- এই যে আপনি বললেন জ্যেঠু মারা গেছেন?
- বলেছিলাম কিন্তু এখন উইথড্র করছি। আধার কার্ড ছাড়া মরা ক্যান্সেল। যাক গে, আমি নার্সকে বলছি ডেথ রিপোর্টটা ছিঁড়ে ফেলে দেবে। আপনার জ্যেঠুর জন্যে ডিনারে আজ মাছ বলে দিচ্ছি। চিকেনে সামান্য অরুচি এসেছে বলে ঘ্যানঘ্যান করছিলেন দুপুর থেকে।
- মানে? জলজ্যান্ত মড়াকে বলছেন মারা যায়নি?
- বললাম তো! আধার না থাকলে মরা স্ট্রিক্টলি বারণ। আপনার জ্যেঠু দিব্যি আছেন। ইয়ে, চেষ্টা চরিত্র করে দেখুন ভিজিটিং আওয়ার্সে যদি অন্তত আপনার জ্যেঠুর সঙ্গে দেখা করে একটা আধারের ব্যবস্থা করতে পারেন। মানে, লোকজন ম্যানেজ করে যদি..হাসপাতালে এসে...। আধার হয়ে গেলেই...।
- আধার হয়ে গেলেই? আধার হয়ে গেলে কী ডাক্তারবাবু?
- আধার হয়ে গেলেই আপনার জ্যেঠুর আর মরতে কোনও বাধা থাকবে না। নিন, এ'বার আপনি আসুন। আপনার জ্যেঠুকে ইনসুলিন দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। আজ ভাবছি ওঁকে ঘুমের ওষুধটা দেব না। চলি, হ্যাঁ?

(খবরটার কদ্দূর সত্যি,সে'টা আদৌ বোঝা যাচ্ছে না। এ'টা স্রেফ খাজা ঠাট্টা)




Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু