Skip to main content

থার্ড ডিগ্রী

কৌতুহল অতি বিষম বস্তু। হজম শক্তি কমে আসে। বাঁ কানের পিছনে চুলকানি শুরু হয়। মাথার ভিতরে একটা অসোয়াস্তিকর ঝুনঝুনুন বেজে চলে একটানা।

বিনয় মল্লিকের কৌতুহলটা বরাবরই বাড়াবাড়ির দিকে, আর মরার পরেও ব্যাপারটা কমেনি আদৌ। নরকে চেক্ ইন করেছেন ঘণ্টা খানেক হল। দিব্যি সিস্টেমে চলে সবকিছু এ'খানে। আসার সঙ্গে সঙ্গেই তার পাপের ক্যাটেগরি-ওয়াইজ লিস্ট হাতে পেয়ে গেছেন। তিনটে পাপের ক্যাটেগরি;
ফার্স্ট ডিগ্রী অর্থাৎ হিংসে, লোভ, পরনিন্দা,  অন্যের পিছনে কাঠি ইত্যাদি। শাস্তি হিসেবে দিনে দেড়শো থেকে দেড় হাজার বার বিছুটি লাগানো মুগুর-পিটুনি, টানা দেড় হাজার বছর । বিনয়বাবুর কপালে জুটেছিল দিনে সাড়ে তিনশো ঘা।

সেকেন্ড ডিগ্রিতে খুন রাহাজানির শাস্তি। দিনে মিনিমাম দু'ঘণ্টা করে উনুনে পিঠ রেখে শুয়ে খবরের কাগজ পড়া। সে শাস্তি অবশ্য বিনয়বাবুকে ভোগ করতে হবে না।

সবার ওপরে থার্ড ডিগ্রী, এর থেকে নিস্তার জোটেনি বিনয়বাবুর। এক স্যুইমিং পুল ফুটন্ত তেলে বাটারফ্লাই স্ট্রোকে ঘুরে বেড়ানো, দিনে দশ ঘণ্টা; আগামী আড়াই হাজার বছর ধরে। শিউরে উঠতে হয় ভাবলেই। কিন্তু এ'খানে ডিসিশন রিভ্যিউ সিস্টেম নেই। সবচেয়ে মুশকিল হল লিস্টে থার্ড ডিগ্রী শাস্তি কোন অপরাধের জন্য সে'টা লেখা নেই।

এনকোয়্যারি অফিস খুঁজেপেতে বের করে বিনয়বাবু জানতে চাইলেন তাঁর থার্ড ডিগ্রী অপরাধ কী। কিন্তু কাউন্টারের পেত্নী ঝেড়ে কাশলেন না। এ'টুকুই জানা গেল যে থার্ড ডিগ্রী অপরাধ একটাই। কিন্তু তা এতটাই গুরুতর যে সেটার কথা মুখে আনাও পাপ, লিস্টে লেখা তো দূরের কথা। তবে ফুটন্ত তেলের স্যুইমিং পুলে নামার আগে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

কৌতুহল এতটাই বিষম যে প্রথম দিন সবার আর থার্ড ডিগ্রিই বেছে নিলেন বিনয়বাবু। সেই আগুন স্যুইমিং পুলে নামার মুখে তার কানে কেউ ফিসফিস করে বলে দিল; "থার্ড ডিগ্রীর পাপ; লহ প্রি-ফিক্স না লাগিয়ে রবীন্দ্রনাথকে প্রণাম জানানো"।

Comments

Anonymous said…
Монтаж радиаторов отопления раменское http://moskva-elisa.ru/lytkarino.html водоснабжение в дедовске http://montazh-elisa.ru/goroda/mytishchi.html проектирование наружной канализации цена http://otoplenie-elisa.ru/montazh-vodoochistki.html обслуживание котельных серпухов http://ustanovka-elisa.ru/pushchino.html установка котельных в воскресенске http://santeh-elisa.ru/likino-dulyovo.html

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু