Skip to main content

ক্যালক্যাটা বিভ্রাট

- দাদা, আমায় বাঁচান।
- ম্যাডাম! কলার না ছাড়লে বাঁচাবো কী করে?
- সরি। সরি। খুব লেগেছে?
- টুঁটি টনটন করছে। তবে ইট ইজ ওকে।
- আমায় বাঁচান প্লীজ।
- আমি ইয়ে...আমি তো পুলিশ! ডাক্তার তো নই।
- ডাক্তার পারবে না পুলিশদাদা, ডাক্তারের ক্ষমতায় কুলোবে না। ওই হারামজাদার জন্যে আজ আমার এই দশা!
- ওই...ওই লোকটা? দাড়িওলা? ওই বাজে মেকআপ করা লোকটা? আমি ভাবলাম আপনারা দু'জনেই থিয়েটার আর্টিস্ট। আপনি হিরোইন। ও ব্যাটা সাইডরোল।
- এ'সব থিয়েটার থিয়েটার কী করছেন? বাঁচান আমায়!
- ওই রাস্কেলটা আপনাকে টীজ করেছে? দেব লকআপে ঢুকিয়ে দু'ঘা মালটাকে?
- ধুস। ও'সব কিছু না।
- তাহলে? যাক গে, আমি রিপোর্ট লিখে নিচ্ছি। আগে নাম বলুন আপনার।
- সীতা।
- সীতা কী?
- সীতা।
- আই সী। সারনেম ইউজ করেন না। হাজব্যান্ডের নাম?
- আজ্ঞে?
- স্বামীর নাম?
- রামচন্দ্র।
- বাহ্। রাজযোটক মাইরি। এ'বারে বলুন। কেসটা কী?
- ব্যাপারটা তেমন কিছুই না। এই লোকটা আমায় এই বিশ্রী জায়গায় নিয়ে চলে এসেছে।
- আপনার বাড়ি কোথায়?
- অযোধ্যা।
- ইয়ার্কি হচ্ছে?
- জনকরাজার মেয়ে আমি দাদা। গলা কাটলেও মিথ্যে বেরোবে না।
- যাহ শালা। অদ্ভুত চাপ। আপনি সীতা? অযোধ্যার রামের সীতা? তাহলে এ'খানে কী করছেন?
- দিব্যি লঙ্কায় রামচন্দ্র  এসে পৌঁছলেন। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। ও মা! মিনসের আবার মতিভ্রম। বলে কিনা অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে। বাধ্য হয়ে অগ্নিদেবকে, মানে ওই ব্যাটাচ্ছেলেকে ডাকলাম। অল্প কমিশনে আগুনে প্রবেশ করিয়ে দেবার কথা। বদ ব্যাটাছেলে কলির মে মাসের কলকাতায় এনে বলে এই হল অগ্নিপ্রবেশ। দাদা গো, আমায় বাঁচান। রামচন্দ্র অগ্নিপরীক্ষা বলেছিলেন, উনি এতটা পাষাণ নন যে এই গা ভাঁপানো গরম কড়াইতে আমায় পাঠাবেন। আমায় বাঁচান স্যার, আমায় এই কলকাতা থেকে বের করুন।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু