Skip to main content

ভোম্বলদার দোলযাত্রা

- ভোম্বলদা।
- হুঁ।
- বেরোবে না?
- দেখি। ইচ্ছে হলে না হয়...। আসলে...ব্যাপারটা তো আদতে ছেলেছোকরাদের ইভেন্ট। এ'সব রংচঙ আর আমাদের এ বয়সে...।
- নাকি...প্রতিবার আমি আসি বলে...।
- আলবাত আসবি। আমার কাছেই তো আসবি রে ইডিয়ট।
- তুমি আমায় ভয় পাও না?
- ভয়? তা খানিকটা তো পাই বটেই। তবে সে'টা তুই মারা গেছিস বলে নয়।
- হেহ্, অপরাধ বোধ?
- দায় তো অস্বীকার করতে পারি না।
- ধুস। তুমি না... কী একটা। দু'দিনের জ্বরে টপ করে মরে গেলাম, এমন ঢ্যাঁড়শ আমি। তোমার কী দোষ।
- তোর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মুখও আমার নেই রে।
- আমায় দেখলে তোমার মুখ কালো হয় যায়। প্রতিবার। আমার খারাপ লাগে..মনে হয় আসব না আর।
- আসিস রে। আসিস। তুই ছাড়া আর বড় কেউ আসে না আমার কাছে আজকাল। আর দোলে তো মুখ কালো হওয়ারই কথা...।
- ভোম্বলদা, তোমার কোনও দোষ নেই...।
- আমায় ক্ষমা করিস না কেদার। ক্রিমিনাল না হলে ওই শীতের রাতে বুক জলে তোকে দাঁড় করাই? তাও স্রেফ মস্করা আর মাতব্বরির জন্য?
- বেশ করেছ। নয়তো ফোকাস নষ্ট হত।
- হুঁ?
- স্বপ্নের নেচার। ফোকাস। আমার পাল্লায় পড়লে নষ্ট হত। আজ দেখলাম ফোকাস আর ফোকাসের ডাক্তার বর। দু'জনের গালে আবির। ফোকাসের চোখ ভোম্বলদা...চোখ। এখনও। আজও। আজও।
- কলকাতা থেকে গতকালই এসেছে দু'জনে। আমিই স্টেশন থেকে ওদের টাঙ্গা ধরিয়ে দিয়েছিলাম।
- ওকে একবার বলবে...আমি কখনও মন্দভাবে দেখিনি...এই তোমার গা ছুঁয়ে বলছি...।
- হেহ্।
- এ কী! তোমার গা ছুঁতে পারলাম কী করে? আমি তো জ্যান্ত মানুষ ছুঁতে পারি না...।
- কাল সরস্বতীকে স্টেশনে দেখে তোর কথা হুহু করে মনে পড়লো রে। তুই সত্যিই বোকা কেদার, এতক্ষণ বকবক করে চলেছিস অথচ সিলিং ফ্যান থেকে ঝোলা বডিটা এখনও খেয়াল করিসনি? পাড়াপড়শিরা কাল গন্ধ পাবে হয়তো। তখনই দরজাটরজা ভেঙে একটা ব্যবস্থা করবে'খন।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু