Skip to main content

ডেন্সিটি

- হাই।
- হ্যালো।
- কদ্দিন?
- হুঁ?
- কদ্দিন ধরে হসপিটালাইজড?
- তিন হপ্তা।
- ক্যাডবেরি খাবেন?
- মুখে জ্বালা। গলাতেও।
- ওহ্। অ্যাডভান্সড।
- রীতিমত। আপনারও তো..।
- এখানে তো সবাই অন সেম বোট। অ্যাডভান্সড।
- সবাই অন টাইটানিক বলুন।
- হেহ্। আইসবার্গ।
- আইসকোল্ড।
- আমি মুকুল চ্যাটার্জি। সাউথ ক্যালক্যাটা।
- অভিনব মাইতি, নর্থ বেঙ্গল।
- ফ্যামিলি?
- বৌ, ছেলে। ক্লাস ফাইভে।
- সেম পিঞ্চ। শুধু আমারটা থ্রী'তে।
- ক্যাডবেরি দিন। এক কামড়।
- গলায় জ্বালা?
- ক্যাডবেরির অফার রিফিউজ করাটা বেশি ক্যাডাভেরাস।
- এই যে।
- থ্যাঙ্কস।
- কদ্দিন বলছে?
- ছ'মাস। মিনিমাম।
- নট ব্যাড। তবে আমি বেটার প্লেসড। এক বছর টেনে দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
- জেলাস।
- আরও আছে কিন্তু । ক্যাডবেরি।
- গুড। আপনি আসার আগে এই বেডে যে ভদ্রলোক ছিলেন, তিনি গতকাল গেলেন।
- রিলিজ?
- না। আইসবার্গ।
- আউচ।
- আমার কপালে আজ ক্যাডবেরি লেখা। খণ্ডাবে কে?
- হেহ্।
- ওয়েলকাম টু দ্য ল্যান্ড অফ নো হোপ মিস্টার সাউথ ক্যালক্যাটা।
- আশাহীন। অথচ বেশ নিশ্চিন্দি লাগছে। ওই ফোর্থ ইনিংসে তিনশো বাহাত্তর চেজ করতে নেমে বিরাশিতে আট উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দশ নম্বর ব্যাটসম্যানের স্টেট অফ মাইন্ড। ক্রস ব্যাটে হুব্বা চালালে কেউ খিস্তি করার নেই।
- চালাবেন? ক্রস ব্যাটে?
- ক্রস ব্যাট? কী ভাবে?
- ক্যাডবেরির ঋণ। চাট্টিখানি কথা নয়। পে ব্যাক পছন্দ হয় কিনা দেখুন। এই যে।
- গোল্ডফ্লেকের বাক্স?
- ডক্টরড্ গোল্ডফ্লেক।
- হাউ?
- মালানা ক্রীম।
- গাঁ...গাঁজা?
- ইউ আর ওয়েলকাম।
- আমি কোনওদিন গাঁজা টাচ করিনি..।
- আহ রে, প্রিটি মিস ব্রাউন। টেস্টে দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন এর আগে?
- না মানে ডাক্তার...।
- ভি'তে খেলতে বলবে, আপনি চালাবেন ক্রস ব্যাটে।
- ওহ, তাই তো।
- তবে এ'টা আনুষঙ্গ মাত্র।
- আসলি চিজ কী? হেরোইন টেরোইন রেখেছেন নাকি?
- এ'টা আমার বালিশের তলায় থাকে। টুয়েন্টি ফোর সেভেন। ফার্স্ট কেমোর পর থেকেই।
- সুকুমার সমগ্র?
- কম্বিনেশনটা মারাত্মক। ডেনসিটি ম্যাক্সিমাইজ করতে অত্যন্ত জরুরী।
- ডেনসিটি?
- মাস অফ লাইফ ইকুয়াল টু ভল্যুম অফ লাইফ ইনটু ডেন্সিটি অফ লাইফ। ভল্যুম অফ লাইফে কোনও ত্যান্ডাইম্যান্ডাই করতে পারবেন কি?
- তাই তো। হাতে রইলো ডেন্সিটি।
- আশি বছর বেঁচে যে মাস অর্জন করতেন, সে'টুকু কম্পেন্সেট করতে হবে স্যার। ডাক্তার ভিজিটে আসবে আর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। তারপরেই আমরা মানে...ইয়ে...ডাবল শেয়ারিং রুমে এ'টাই সুবিধে।
- আইসবার্গের মুখে কেরোসিন।
- এই হলো কথার মত কত। এবারে আর এক প্যাকেট ক্যাডবেরি বার করুন দেখি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু