Skip to main content

সব ভালো যার

সব ভালো যার শেষ ভালো।

**
মনোজ বটব্যাল মাসের শেষে খুঁজে পান ব্ল্যাকহোলিও গোপন পকেটে রেখে ভুলে যাওয়া তিনটে কড়কড়ে একশো টাকার নোট।

**
ধানবাদে পোস্টিং পাওয়া সমর দত্ত। ভদ্রেশ্বর থেকে আসা ইনল্যান্ড লেটারে খোকার স্কুল টিউশনির খবরের ফিরিস্তি শুনে হন্যে হতে হতে, চিঠির শেষ প্রান্তে এসে ভদ্রলোক খুঁজে পান লিপস্টিকের দাগ। টকটকে ছ্যাঁতছ্যাঁতে লাল।

**
বছরের শেষে এসে জিমে ভর্তি হয়ে হাঁফ ছাড়েন জিকো হালদার।  ডিসেম্বরের শেষ তিন সপ্তাহে তেত্রিশ গ্রাম হাওয়া। জাস্ট হাওয়া। বত্রিশ বছরে ভুঁড়ি ভ্যানিশ হয়ে যাওয়ার কথা। 

**
আলোয় আলোর শেষে কোলাহল থেমে যায়। হুল্লোড় ঝিমিয়ে আসে। সে আলোয় অনিন্দ্য সুলেখার হাত টেনে নেন।

- শাদি করেগা মুঝসে?
- করেগা নয়। করোগি।
- ধ্যাত্তেরি। উইল ইউ ম্যারি মি?
- বাঙলায় বলো না ভাইটি।
- বাঙালি প্রপোজ করে না। চিঠি লেখে, পোস্ট করে না।
- ন্যাকা।
- উইল ইউ?
- আর ক'বার করব?
- এক বার ইয়েস বোলকে দেখো। আর বাঙালি বিয়ে করব না।
- দেন?
- বাইকে চেপে আসব। হারলে।
- জিতলে?
- ধ্যেত্তের। ডেভিডসন। থুঁতনিতে বেল্ট আঁটা টোপর।
- রিয়েলি? ছেলেবেলায় তোমায় হারকিউলিস সাইকেলে দেখেছি।
- তুমি সাদা গাউন। সাহেবি বিয়ে। ডু ইউ টেক হার অ্যাজ ইওর বর অর বৌ? ইয়েস আই ডু। ইয়েস আই ডু। তারপর আংটি। তারপর চকাম, সবার সামনে।
- হীরের আংটি?
- আড়াইশো গ্রামের এক পিস হীরে। তোমার আঙুল টনটন করবে। 
- সী বীচে?
- সানরাইজের সময়। বিদেশী সমুদ্র। ক্যালেন্ডারি নীল। ও'দিকে চারিদিকে দামী শ্যাম্পেনের ফোয়ারা। 
- মন্দ না। তবে সাহেবী বিয়ে হলেও, রাতে ফিশ ফ্রাই, মাংস কষা আর বাসন্তি পোলাও। রাখবে তো?
- ওবামারা কেমন স্পাইসি খাওয়ার প্রেফার করে দেখতে হবে। দালাই লামার জন্য ভেজ অপশন রাখতে হবে কি?
- বটে? ভেবে দেখি।
- সো? উইল ইউ ম্যারি মি?
- ইয়েস।
- একটা কথা।
- কী?
- এই ব্যাটাচ্ছেলে ডাক্তারের তোমার প্রতি নজর আছে।
- কোন ডাক্তার?
- সেন। যে তোমায় অপারেট করবে। মতিগতি ভালো না। অতি বদ নজর। 
- সামান্য পালটা নজর আমিও দিয়েছি যে। 
- স্যুইটহার্ট। তোমায় যদি অপারেশন টেবিলে থেকেই ইলোপ করে?
- টূ টল, টূ হ্যান্ডসাম টূ রিফিউজ। নীল সমুদ্র, ওবামাদের বাসর জাগা নটউইথস্ট্যান্ডিং।
- হোয়াট দ্য হেল।
- নাও ফিরতে পারি অপারেশন থিয়েটার থেকে।
- ইয়েস। নাও ফিরতে পারো। হারামি ডাক্তার সেন।
- এ'টা দামী শ্যাম্পেন খাইয়ের ভাষা?
- ইউ সেড ইয়েস। ভদ্রলোকের এক কথা।
- দেখি,যদি ডাক্তার সেনের চার্ম কাটিয়ে ফিরতে পারি।
- হনিমুনে  আর পুরী নয়। প্রমিস। সেশেল্স। বা মরিশাস। বা মাসাই মারা।
- ডাক্তার সেনের চান্স আর একটু কমল।
- হেহ্।

সব ভালো যার, শেষ ভালো।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু