Skip to main content

বালিশবাবুর অফিসে - ১

প্রথম পর্ব

- আপনিই তাহলে সে?
- আজ্ঞে।
- দাঁড়িয়ে কেন? বসুন। বসুন।
- থ্যাঙ্ক ইউ।
- থ্যাঙ্ক ইউ তো আমার বলা উচিৎ মিস্টার মুকর্জী। ফর দ্য স্পার্ম।
- ওহ ইট ইজ নাথিং রিয়েলি..ইট ইজ জাস্ট আ স্মল..।
- স্মল কেন? মাইক্রোস্কোপিক বলুন। তবে আমি সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। আই মিন, ইট মেন্ট আ লট টু মি।
- অফ কোর্স ইট ডিড। আই মিন, অ্যাম গ্ল্যাড ইট ডিড।
- চা খাবেন?
- আপনার অফিসে চা আছে?
- থাকা উচিৎ না?
- না মানে, আমার আপনার অফিসটা তো আমার স্বপ্নে। আর আমার স্বপ্নে তৈরি অফিসে চা থাকা উচিৎ নয়। কারণ আমি চা খাই না।
- আপনার স্বপ্ন হতে পারে। কিন্তু অফিস তো আমার। আমি আপনাকে ডেকেছি। ফর আ ম্যান টু ম্যান চ্যাট। কারণ আমার মনে হয়েছে যে আইস-ব্রেকিংয়ের খুব দরকার। আর এদিকে আপনি স্পার্ম ভাঙিয়ে ইম্পোজিশন অলরেডি চালু করে দিয়েছেন?
- সরি। সে'ভাবে বলতে চাইনি। ইয়ে। এক কাপ চা চলতেই পারে। পঞ্জিকায় তো আর বারণ করা নেই। হেহ।
- পঞ্জিকাটা অ্যাটেম্পটেড হিউমর ছিল?
- না মানে..ওই আর কী!
- ওহ নো।
- কী হল?
- ওহ। ইট ইজ ডিপ্রেসিং। আমার হিউমর কতটা ইনহেরিটেড আর কতটা কন্ডিশনড হবে কে জানে।
- পঞ্জিকার অ্যাটেম্পট ওয়াস ফাইন। চা বলুন এক কাপ।
- চা? চা তো নেই।
- লে হালুয়া। চা নেই? তাহলে জিজ্ঞেস করলেন কেন?
- বেসিক কার্টসি। এখানে শুধু বেবিফুড। আর ব্রেস্ট মিল্ক দু'রকমের। কোনটা চাই?
- দু'রকমের?
- রাইট আন্ড লেফট। কউনসা মঙ্গাউ?
- জাস্ট দ্য চ্যাট শুড বি গুড। আপনি আমায় কেন ডেকেছেন যদি খোলসা করে বলেন। ও, তার আগে বলি, টাইটেলটা মুকর্জী নয়, মুখার্জী।
- এ'টাই আপনার বাবা হিসেবে ছেলের প্রতি প্রথম সাজেশন?
- এতে ভুলটা কোথায়?
- আপনি সিগারেট খান?
- খেতাম।
- এখন?
- রেয়ারলি দু'একটা।
- আমার মনে হয় সিগারেটের গন্ধ সহ্য হয় না।
- আপনার আড়াই মাস। তা'তে আবার সহ্য অসহ্য কী?
- বয়স নিয়ে আপনি খুব জাজমেন্টাল তো। লিস্টে আর কী কী আছে?
- কীসের লিস্ট?
- আপনার জাজমেন্টালপনার।
- কাজের কথায় আসুন।
- এ'টা রীতিমত কাজের কথা। যে বয়সে গিয়ে আমার ফুর্তি করা উচিৎ,  সে বয়সে যদি আমায় আমার ইনকনসিডারেট বাপের বায়োপ্সি রিপোর্ট হাতে দৌড়ঝাঁপ করতে হয় সে'টা ঠিক হবে?
- আমি আপনার ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকবো, সে'টা কে বললো?
- রাখুন মশাই বাতেলা। সব বুঝি।
- কী বোঝেন?
- শুনুন মিস্টার মূকর্জি। আপনি নিজের আর ও আই ম্যাক্সিমাইজ করতে এই যে দড়াম করে একটা প্রডাক্ট লাইফ সাইকেল ইনিশিয়েট করলেন, লং রান হ্যাপা সব সামলাবে কে?
- মানে? আমি আছি। আপনার মা আছেন।
- মা? মানে..।
- রাইট লেফট। ইয়েস।
- উনি তাহলে আপনার মিসেস?
- হ্যাঁ, কেন?
- না। দেখে বিশেষ মনে হয় না। যে উনিই মিসেস।
- এ কি ভাই বোন নাকি? যে দেখে মনে হতে হবে?
- নীলোৎপল রবিনসন কী বলেছেন জানেন?
- কে নীলোৎপল রবিনসন?
- কেউ হিমসাগর আম অফার করলে আপনি হিমসাগরের এটিমোলজি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন না কি খোসার খোসবু স্টাডি করেন?
- কী বলেছেন রবিনবাবু?
- বন্ড অফ মাসকাবারি ইজ মাইটিয়ারর দ্যান দ্য স্ট্র‍্যান্ডস অফ জিনস।
- এ'টা বানালেন?
- অন্তত পঞ্জিকা জোক তো ক্র‍্যাক করিনি।
- আরও কিছু বলার আছে?
- কত কিছু বলার আছে। সে'সব ক্রমশ প্রকাশ্য। আজ শুধু একটা অব্জার্ভেশন শেয়ার করার আছে।
- করুন।
- আপনার গালের খোঁচা দাড়িতে একটা অদ্ভুত আনইন্টেলেকচুয়াল ব্যাপার আছে জানেন।
- মানে?
- আপনাকে দাড়িতে দরকচা ঠেকে। দাড়ি কাটতে দেরী রীতিমত অদরকারি।
- এ'টা বলতে আমায় আপনার অফিসে ডেকেছেন বালিশবাবু?
- যে'টা বলতে চাইছি। সে'টা হলো। গালে খোঁচা দাড়ি নিয়ে ব্যাবাগো সোনাগো বলে গালে গাল লেপ্টে আদর করা বন্ধ করুন। খিস্তি এখনই শেখার দরকার দেখছি না।
- ও।
- আজ আসুন। আপনার এ বাপমিটিঙের রিভিউতে নম্বর হচ্ছে হচ্ছে পাঁচে তিন। সাড়ে তিন পেতেন। কিন্তু ওই পঞ্জিকা জোক মনে পড়লেই মনে হচ্ছে অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসবে।
- অন্নপ্রাশন?  আপনার অন্নপ্রাশন হতে এখনও ঢের দেরী। ঢের।
- হুঁ? ও। ওহ। দেঁজাভু। এখন আসুন। আমার বিস্তর কাজ। হিউমরের জেনেটিক ভাঁড়ারে ডেফিসিটের ব্ল্যাক হোল। অনেক কাজ। আসুন। আসুন।  আর নিজের বা ওই ভদ্রমহিলার ঘুমটা এ'বার ভাঙান মশাই। ডাইপারে যে এখন ডল্ফিনেও সাঁতার দিতে পারবে।

( ক্রমশ)

Comments

Anonymous said…
osadharon

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু