Monday, November 12, 2018

গব্বরের কাঁপুনি



- ওহে গব্বর, একবার এ'দিকে এসো ভাইটি।


- আ...আমি?


- নাদুসনুদুস ভুঁড়ি। নোংরা চুলদাড়ি। কালচে দাঁত।  বিটকেল হাসি। তোমায় তো আর প্রসেনজিত বলে ভুল করা চলে না ভাই। এ'দিকে একটু এসো দেখি।


- ইয়, স্যার। আমি কিছু..ভ...ভুল করে ফেলেছি নাকি? 


- সর্দার মানুষ, তুমি কি আর ভুলচুক করতে পারো। তা শুনলাম নাকি তুমি কালিয়া আর আরো দু'জনকে উড়িয়ে দিয়েছ?


- না মানে...কাজটা বোধ হয় ঠিক হয়নি। না? আসলে মাত্র দু'জন কচি ছোকরার হাতে ওরা এমন হেনস্থা হল...।


- তা'তে তোমার ইজ্জতে চোট লাগল। বুঝি বুঝি। সর্দার মানুষ, অমন রাগধাপ তোমায় দিব্যি মানায়।


- আপনি রেগে থাকবেন না স্যার। এই নাকে খত দিচ্ছি। আগামী সাতদিন আমি রামগড়ের রাস্তা থেকে পানের পিক আর ঘোড়ার ইয়ে সাফ করে প্রায়শ্চিত্ত করব। রেগে থাকবেন না প্লীজ।


- তুমি কালিয়াকে মারো, সাম্ভার কানে সুড়সুড়ি দাও, ঠাকুরকে গীতাঞ্জলি পাঠাও; যা খুশি করো! আমার বয়ে গেছে। কিন্তু তাই বলে আমার নামের ডায়লগ নিজের নামে চালাবে?


- আজ্ঞে? স্যার?


- ন্যাকা! সো জা নহি তো গব্বর আ জায়েগা! এ'সব বলে ইয়ার্কি হচ্ছে? 


- কান মলছি স্যার। ভুলে বলে ফেলেছি। আর হবে না। ও ডায়লগ দিয়ে আমার মা আমায় ঘুম পাড়াত। আমি মুহূর্তের ভুলে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছি।


- বটে?


- তখন খোকা বয়স। স্বভাবে অত্যন্ত দুরন্ত ও বদখত। কিন্তু যতই লাফঝাঁপ করি, যেই মা বলত "খোকা, এ'বার ঘুমো! নয়ত এখুনি সোমবার চলে আসবে"; অমনি আমি চোখ বুঝে ঢিপ করে খাটের উপর টানটান। সোমদা গো! এ'বারের মত ছোটভাইটিকে ক্ষমা করে দাও। পায়ে পড়ি! 


- একবার ভয় পেয়েছ কী মরেছ। জেনে রেখো গবুচন্দ্র; যার যত ভয়, সোমবারে তার কপালে তত বেশি ট্র‍্যাফিক জ্যাম, বসের মেজাজ ততোধিক তিরিক্ষি আর ফাইলের স্তুপ ততটাই উঁচু। আমার ডায়লগ নিজের নামে ঝাড়ার বেয়াদবী?  ইসকি সজা মিলেগি ভায়া গব্বর, বরাবর মিলেগি।

No comments: